ট্রেলারে যেমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, গল্পটা তেমনই। এক দাগির প্রায়শ্চিত্তের যাত্রা। প্রেক্ষাপট উত্তরবঙ্গের সৈয়দপুর, সময়কাল চলতি শতকের প্রথম দিক। নিশান (আফরান নিশো) আর জেরিন (তমা মির্জা) এই মফস্সল শহরের প্রেমিক যুগল। নিশানের পড়াশোনায় আগ্রহ নেই, অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার ধান্দায় জড়িয়ে পড়ে চোরাচালানে। যোগাযোগ হয় কলকাতার এক অবাঙালি ব্যবসায়ীর সঙ্গে (শহীদুজ্জামান সেলিম)। জেরিন ভালোভাবে ডিগ্রি পাস করেছে, একের পর এক বিয়ের সম্বন্ধ আসছে। এর মধ্যে জেরিনকে পছন্দও করে ফেলে এক পাত্রপক্ষ। জেরিন নিশানকে বলে ১৫ তারিখে দেখা করতে, সেদিন কিছু একটা করতেই হবে। কিন্তু, অসাবধানতাবশত এক দুর্ঘটনায় নিশানের হাতে খুন হয় একজন। নিশানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড হয়।
সাজা শেষে বাড়িতে ফেরে নিশান। এখন থেকেই শুরু হয় সিনেমা। নিশানের আশা ছিল, আবার নতুন করে জীবন শুরু করবে, পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে। কিন্তু লাল দালানের ছাপ একবার যার গায়ে লেগেছে, চাইলেই কি আর সেই দাগি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে, সমাজ কি তাকে মেনে নেয়? সম্পর্ক, আবেগ, সামাজিক বাস্তবতা আর নিশানের মানসিক টানাপোড়েন নিয়ে এগিয়ে চলে গল্প।
‘হাজারটা চাঁদ আসলেও সে রাতের কোনো মূল্য নাই, যদি তুমি না আসো, সেই রাতের কোনো অর্থই নাই।’ শায়েরির এই আবেগ ছুঁয়ে ছিল পুরো সিনেমা। হল থেকে বের হওয়ার পরও সেই আবেগের রেশ রয়ে যায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার যাত্রা শেষে সিনেমার পাত্র–পাত্রীরা ততক্ষণে যে হয়ে ওঠে অতি আপন। মফস্সল শহরের চেনা সব চরিত্র, জমাটি চিত্রনাট্য, দুর্দান্ত নির্মাণ, মনে রাখার মতো সংলাপ আর বিশ্বাস্য অভিনয় মিলিয়ে ‘দাগি’ হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা বাংলা সিনেমা। আফরান নিশো ও শিহাব শাহীনের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা কাজ বললে বাড়াবাড়ি হবে না।
আমার বার্তা/এল/এমই