
লোকসংগীতের মাটির গন্ধ আর আধুনিক প্রজন্মের ভাবনাকে কণ্ঠে ধারণ করে এগিয়ে চলেছেন তরুণ সংগীত শিল্পী নাদিয়া আফরীন মৌরী। পড়াশোনা, সংগীতচর্চা ও সমসাময়িক ব্যস্ততার মধ্যেও নিজস্ব অবস্থান গড়ে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি দৈনিক আমার বার্তা-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের গল্প, সংগীতযাত্রা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন এই শিল্পী।
প্রশ্ন: আপনার সংগীত যাত্রা শুরু কবে এবং কীভাবে?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: আমি ছোটবেলা থেকেই গানের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। আমার শৈশব কেটেছে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নে। আমার মা গান খুব ভালোবাসেন। আমি যখন হারমোনিয়ামে গান করতাম, তখন নাকি মায়ের মন খারাপ কেটে যেত। মায়ের সেই ভালোবাসা ও আগ্রহ পূরণ করতেই খুব অল্প বয়সে আমার গুরু মৃণাল কান্তি রায়ের কাছে সংগীতে হাতেখড়ি হয়। সেখান থেকেই আমার সংগীতের পথচলা শুরু।
প্রশ্ন: পড়াশোনার পাশাপাশি সংগীতচর্চা-দুটো কীভাবে সামলাচ্ছেন?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: বর্তমানে আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করছি। পড়াশোনা ও সংগীত-দুটোই আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সময়কে সঠিকভাবে ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করি, যাতে কোনো দিকই অবহেলিত না হয়।
প্রশ্ন: বর্তমানে গান নিয়ে কী ধরনের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: এই সময়টা গান নিয়ে বেশ ব্যস্ত। মৌলিক গান ও অ্যালবাম নিয়ে পরিকল্পনা চলছে। দর্শক-শ্রোতাদের জন্য নতুন কিছু উপহার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রশ্ন: কোন ধরনের গানে আপনি সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: আমি লোকসংগীত ও রক গান গাইতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। লোকগান আমার মাটির গান, বাংলার গান। এই গানের মধ্যেই আমার শিকড়, আমার পরিচয়।
প্রশ্ন: সংগীত জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত কোনটি?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: নির্দিষ্ট করে একটি মুহূর্ত বলা কঠিন। ছোটবেলায় গান শেখা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পথচলার প্রতিটি ছোট ছোট মুহূর্তই আমার কাছে স্মরণীয়।
প্রশ্ন: বর্তমান সময়ে সংগীতশিল্পীদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী বলে মনে করেন?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: সংগীতক্ষেত্র হোক বা জীবনের যেকোনো ধাপ-চ্যালেঞ্জ থাকবেই। নিজের লক্ষ্য ঠিক রেখে সততার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে গেলে সফলতা আসবেই।
প্রশ্ন: নতুন প্রজন্মের সংগীতশিল্পীদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: কখনো থেমে বা দমে যাওয়া যাবে না। চেষ্টা, পরিশ্রম, সাধনা আর সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস থাকলে সফলতার স্বর্ণশিখরে পৌঁছানো সম্ভব।
প্রশ্ন: ভক্তদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
নাদিয়া আফরীন মৌরী: আমি আমার ভক্তদের পরিবার হিসেবে দেখি। আমার ‘উড়নচণ্ডী পরিবার’ আমাকে যে ভালোবাসা ও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিয়ে যাচ্ছে, তার ওপর ভর করেই আজ আমি এত মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি।
নাদিয়া আফরীন মৌরী লোকসংগীতের প্রতি তার ভালোবাসা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের পথ তৈরি করছেন। মাটির গানকে ধরে রেখে তিনি ভবিষ্যতে আরও নতুন ও মানসম্মত কাজ দর্শক-শ্রোতাদের উপহার দিতে চান।

