ই-পেপার বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি কেন বেছে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৭

যুক্তরাষ্ট্রে আর কয়েক ঘণ্টা পরেই শুরু হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। দেশটির ভোটাররা মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দেশের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য ভোট দেবেন।

অবশ্য ভোটাররা ভোট দিলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হন না, “ইলেক্টোরাল কলেজ” নামে একটি ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচিত হন। কিন্তু কী এই “ইলেক্টোরাল কলেজ”? এটা কিভাবে কাজ করে?

অনেকের কাছেই ইলেক্টোরাল কলেজ একটি জটিল বিষয় মনে হতে পারে। এমনকি অনেক মার্কিন নাগরিকও এই বিষয়টিকে সহজে বুঝে উঠতে পারেন না। চলুন একটু ভালো করে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করে দেখা যাক।

ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি কেন বেছে নেওয়া হয়েছিল?

১৭৮৭ সালে মার্কিন সংবিধান প্রণেতারা এই পদ্ধতি চালু করেন। ব্রিটেন থেকে যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ছিল একেবারে নতুন একটি দেশ।

১৭৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান যখন লেখা হচ্ছিল তখন বিশালাকার দেশটিতে যোগাযোগের অভাবের ফলে জাতীয় স্তরে সাধারণ মানুষের ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা কার্যত অসম্ভব ছিল।

সংবিধান রচয়িতারা তখন ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। সংবিধান প্রণেতারা ১৭৮৭ সালে সংবিধান রচনার সময় কংগ্রেস এবং জনগণের সরাসরি ভোটে (পপুলার ভোট) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুটি ধারণাই বাতিল করে দেন।

তাদের যুক্তি ছিল, পপুলার ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে লোকেরা তাদের স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দেবে এবং তার ফলে বড় অঙ্গরাজ্যগুলো আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করবে। ছোট ছোট অঙ্গরাজ্যগুলো এই ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিকে সমর্থন করে কারণ এর ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলো এই পদ্ধতির পক্ষ নেয় কারণ সেসময় এসব অঙ্গরাজ্যে দাসের সংখ্যা ছিলো অনেক। দাসদের ভোটাধিকার না থাকা সত্ত্বেও আদম শুমারিতে তাদের গণনা করা হতো। এছাড়াও সংবিধান রচয়িতারা চাননি, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বসে শুধু আইনপ্রণেতারা দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করুক।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ফাউন্ডিং ফাদার্স হিসাবে পরিচিত ব্যক্তিরা এমন একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন যা ক্ষমতাকে একজনের হাতে কেন্দ্রীভূত করবে না। রাজতন্ত্রের মতো কাঠামো তৈরি করতে পারে এমন ব্যবস্থা থেকে তারা নিজেদেরকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু সম্পূর্ণরূপে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার ধারণাটি এই ইলেক্টোরাল ব্যবস্থার ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এই ব্যবস্থার প্রণয়নকারীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন, ভোটাররা যথেষ্ট যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যথেষ্ট শিক্ষিত কিনা। তখন জাতীয় সাক্ষরতার হারও বেশ কম ছিল এবং সেই সময়ে অন্য কোন দেশই জনপ্রিয় ভোটের মাধ্যমে নেতাদের বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেননি।

আর তাই জনগণের সরাসরি ভোটের এবং একক কারো হাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্যবর্তী একটি পন্থা হিসাবে বেছে নেওয়া হয় এই ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিকে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ইলেক্টররাই প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করতে ভোট দিবেন।

কীভাবে কাজ করে ইলেক্টোরাল কলেজ?

তাত্ত্বিকভাবে, মার্কিন সরকার সমন্বিত নির্বাহী বিভাগ (প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভা), বিচার বিভাগীয় বিভাগ (সুপ্রিম কোর্ট) এবং আইন প্রণয়ন বিভাগ (কংগ্রেস) নিয়ে গঠিত। কংগ্রেস আবার গঠিত দুটি সত্তা নিয়ে- হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সিনেট।

সিনেটে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের দুজন করে সদস্য থাকেন। তারা ফেডারেল স্তরে সমগ্র অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। হাউজের প্রতিনিধিরা একটি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে পৃথক জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। একটি অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসের কতজন প্রতিনিধি থাকবেন, সেটা আদমশুমারির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। দেশটিতে ১০ বছর পরপর আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয়।

আর প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকটি করে ইলেক্টোরাল ভোট থাকে, যা ওই অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার মোটামুটিভাবে সমানুপাতিক হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার হাতে সর্বাধিক ৫৪টি এবং ভায়োমিং, আলাস্কা এবং নর্থ ডাকোটা (এবং ওয়াশিংটন ডিসি)-র মতো যেসব অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যা খুবই কম, তাদের হাতে অন্তত তিনটি ইলেক্টোরাল ভোট আছে।

সাধারণত অঙ্গরাজ্যগুলো তাদের হাতে থাকা ইলেক্টোরাল ভোট সেই প্রার্থীকেই দেয়, যিনি ওই অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের সরাসরি ভোটে জয়ী হয়েছেন।

ধরা যাক, টেক্সাসে একজন প্রার্থী ভোটারদের সরাসরি ভোটের ৫০.১% পেয়েছেন, তাকে ওই অঙ্গরাজ্যের হাতে থাকা ৪০টি ইলেক্টোরাল ভোটের সবগুলোই সেই প্রার্থী পেয়ে যাবেন। একটি অঙ্গরাজ্যে জয়ের ব্যবধান যদি বিরাট হয়ও, তাহলেও জয়ী প্রার্থী অতগুলো ইলেক্টোরাল ভোটই পাবেন।

সব মিলিয়ে কংগ্রেসের ৫৩৫ জন সদস্য রয়েছেন এবং ওয়াশিংটন ডি সিতে রয়েছেন তিনজন নির্বাচক। অর্থাৎ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে এবং নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন এর অন্তত ২৭০টি।

‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ কেন বলা হয়?

‘কলেজ’ শব্দটির অর্থ এখানে সেই ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যারা একটি অঙ্গরাজ্যের ভোট দেওয়ার অধিকারী। “ইলেক্টোরাল কলেজ” হচ্ছে কর্মকর্তাদের একটি প্যানেল, যাদের “ইলেকটরস্” বলা হয়। এরা এক কথায় নির্বাচকমণ্ডলী।

প্রতি চার বছর পর পর এটি গঠন করা হয়, এবং এরাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টকে বাছাই করেন।

কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্বের অনুপাতে প্রতিটি স্টেটের ইলেকটরসের সংখ্যা নির্ধারিত হয়: যা নির্ধারিত হয় স্টেটে সিনেটরের সংখ্যা (প্রত্যেক স্টেটে দুইজন) এবং প্রতিনিধি পরিষদে প্রতিনিধির (যা জনসংখ্যার অনুপাতে) যোগফল মিলে।

ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি অনুযায়ী, যেসব রাজ্যে জনসংখ্যা বেশি, সেসব রাজ্যে ইলেক্টোরাল ভোটও বেশি। এই প্রথা শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্যই ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সব নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় সরাসরি মানুষের ভোটেই।

অঙ্গরাজ্যে জয়ী প্রার্থীকে কী ভোট দিতে বাধ্য নির্বাচকরা?

কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে নির্বাচকদের আইনগতভাবে সেই স্বাধীনতা আছে যে সাধারণ ভোটাররা কাকে পছন্দ করেছেন, তার ওপরে নির্ভর না করে নিজের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। তবে প্রকৃতপক্ষে দেখা যায় যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছেন যে প্রার্থী, তাকেই নির্বাচকরা তারা ভোট দিয়েছেন।

অঙ্গরাজ্য থেকে যাকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে যদি কোনও নির্বাচক ভোট দেন, তাকে ‘ফেইথলেস’ বা অবিশ্বাসী বলা হয়। এর আগে ২০১৬ সালের নির্বাচনে এভাবেই সাতটি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট দেওয়া হয়েছিল, তবে নির্বাচনের ফলাফলে তার কোনও প্রভাব পড়েনি।

কোনও কোনও অঙ্গরাজ্যে ‘ফেইথলেস’ নির্বাচকদের জরিমানা করা বা মামলা দেওয়া হতে পারে।

ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থার ভালো-মন্দ

এই পদ্ধতির সুবিধাগুলো হলো— ছোট অঙ্গরাজ্যগুলো প্রার্থীদের কাছে গুরুত্ব পায়। প্রার্থীদের গোটা দেশ ঘোরার দরকার হয় না, গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রতি নজর দিলেই চলে। পুনর্গণনা সহজতর, কারণ কর্মকর্তারা একটি অঙ্গরাজ্যের সমস্যা সহজে চিহ্নিত করতে পারেন।

আর কিছু অসুবিধা হচ্ছে— সাধারণ মানুষের ভোটে জয়ী প্রার্থীও নির্বাচনে হেরে জেতে পারেন। ভোটারদের একাংশের মনে হয় যে তাদের ব্যক্তিগত ভোটের কোনও মূল্য নেই। কথিত ‘সুইং স্টেটগুলোর’ হাতে অত্যধিক ক্ষমতা থাকে। -- সূত্র : বিবিসি, ডয়চে ভেলে

আমার বার্তা/জেএইচ

ভারতে মসজিদসহ সব উপাসনাস্থলে সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ

ভারতের সব মন্দির, মসজিদ ও গির্জায় সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ দিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। মন্দির বা মসজিদ

ইতিহাসে প্রথম ৪০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মাইলফলকে মাস্ক

বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মাইলফলকে পৌঁছানোর রেকর্ড গড়লেন বৈদ্যুতিক

গাজায় নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস করল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ

ফিলিস্তিনের গাজায় নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। ইউএনআরডব্লিউএ’র সমর্থনেও আলাদা

সমুদ্রে আটক ৭৮ বাংলাদেশিকে ভারত থেকে ফেরত পাঠানো হবে

ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় কোস্ট গার্ডের হাতে আটক হওয়া ৭৮ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত পাঠানো
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভারতে মসজিদসহ সব উপাসনাস্থলে সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ

ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৪৪

২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষা ১০ এপ্রিল শুরু, রুটিন প্রকাশ

মহালছড়ি সেনা জোন কতৃক মাদ্রাসা শিশুদের শীতবস্ত্র উপহার

খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কে মায়ের সামনেই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু

বড়দিন-থার্টি ফার্স্টে আতশবাজি-ফানুস ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা

বরগুনায় ইলিশ জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রশিক্ষণ

ভারতীয় কোস্টগার্ডের হাতে আটক ৭৯ নাবিক শিগগিরই দেশে ফিরবে

কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সমালোচনা করা মানে সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা নয়: রিজভী

বিশ্বের চতুর্থ কোচ হিসেবে ৪০০ মাইলফলকের সামনে সিমন্স

ইতিহাসে প্রথম ৪০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মাইলফলকে মাস্ক

হেলমেট বাহিনীর সেই যুগের অবসান ঘটেছে: ডিএমপি কমিশনার

মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে নিবন্ধন করেছেন ৩১ হাজার বাংলাদেশি

পিরোজপুরে চুরি যাওয়া মোবাইল ও প্রতারণার মাধ্যমে হারানো টাকা উদ্ধার

টঙ্গীতে জুবায়েরপন্থিদের হামলায় সাদ অনুসারী ৪ মুসল্লি আহত

পদোন্নতিপ্রাপ্ত ১৮ জনকে র‌্যাংক ব্যাজ পরালেন আনসারের মহাপরিচালক

দেশ সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে করেন ৫৬% মানুষ

এডিবির সঙ্গে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি

জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে: মেজর হাফিজ