ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন যদি ন্যাটোর সদস্যপদ পায়, তবে যুদ্ধের অবসান ঘটানো সম্ভব। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তিনি মনে করেন ন্যাটোর ছাতার নিচে এলে যুদ্ধের তীব্রতা কমবে। এর পাশাপাশি তিনি রাশিয়ার আক্রমণের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছেন।
স্কাই নিউজের সঙ্গে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বর্তমানে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত অংশ নিয়েই কি ন্যাটোর সদস্যপদ গ্রহণ করতে তিনি প্রস্তুত? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্তসহ পুরো ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়ার নিশ্চয়তা পেলে তিনি এমন একটি প্রস্তাব বিবেচনা করতে পারেন।’
জেলেনস্কি আরও বলেন, ইউক্রেন তখন কূটনৈতিক উপায়ে রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলো ফেরত আনার চেষ্টা করবে। তবে তিনি এটাকে অত্যন্ত তাত্ত্বিক বলে অভিহিত করেন। কারণ, এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো প্রস্তাব ইউক্রেনকে কেউ দেয়নি।
তিনি বলেন, ইউক্রেন কখনও এমন কিছু ভাবেনি, কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে কেউ এ ধরনের প্রস্তাব দেয়নি। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি উল্লেখ করেন, ন্যাটোর সদস্যপদের প্রস্তাব শুধু দেশের একটি অংশের জন্য গ্রহণ করা সম্ভব নয়। পুরো দেশকেই এর আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকেই যুদ্ধবিরতির কথা বলছেন। তবে রাশিয়াকে আক্রমণ থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা ছাড়া কোনো যুদ্ধবিরতি বিপজ্জনক হবে। একমাত্র ন্যাটো সদস্যপদই পারে এমন গ্যারান্টি দিতে। জেলেনস্কি আরও জানান, তার বিশ্বাস ইউক্রেনের মিত্ররা যথেষ্ট দৃঢ় সংকল্প দেখালে যুদ্ধ আগামী বছর শেষ হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ন্যাটোর তথাকথিত পশ্চিম জার্মান মডেল নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে আলোচনা চলছে। এই মডেল অনুসারে, একটি বিভক্ত দেশকেও ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ ধরনের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এখনও আসেনি।
এদিকে, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারণায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জেলেনস্কি বলছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে কূটনৈতিক উপায়ে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে চায় কিয়েভ।
২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করার পর রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে। পূর্ব ইউক্রেনের বড় একটি অংশ দখলে নেওয়া হয়েছে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনও পর্যন্ত এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি যে, তিনি ইউক্রেনের ভূখণ্ডের ওপর দাবি ছেড়ে দেবেন। ইউক্রেনের কোনো অংশকে ন্যাটোর আওতায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনাও আপাতত অসম্ভব।
এদিকে, মস্কো সম্প্রতি ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে দ্বিতীয়বারের মতো বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এটিকে যুক্তরাষ্ট্র সরবরাহকৃত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রের ‘অবিরাম আক্রমণের’ প্রতিক্রিয়া বলে উল্লেখ করেছেন।
আমার বার্তা/এমই