২০০৭ সালে ওয়ান/ইলেভেন সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
তিনি বলেন, রিমান্ডে তার ওপর ব্রুটালি টর্চার (নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন) চালানো হয়েছে। নির্যাতন করে তার মাজার (কোমর) হাড় গুঁড়ো করে ফেলেছে। এটা কখনো রিপেয়ার হবে না।
রোববার (৫ জানুয়ারি) চাঁদাবাজির অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা চারটি মামলা বাতিলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন।
শুনানিতে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, তারেক রহমানকে এ মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তার ওপর টর্চার করা হয়েছে। ব্রুটালি টর্চার (নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন) করা হয়েছে। তার মাজার (কোমর) হাড় গুঁড়ো করে ফেলেছে। এটি কখনো রিপেয়ার হবে না। অথচ মামলাগুলোতে তার নামই ছিল না।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগের আদেশের পর ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এ মামলার এফআইআরে তারেক রহমানের নাম ছিল না। রাজনৈতিকভাবে তারেক রহমান ও বিএনপিকে বিতর্কিত করতে এসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, পরবর্তীকালে হাইকোর্ট মামলাগুলো স্টে করে রুল জারি করেন। গত কয়েক মাস আগে রুল শুনানি করি। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ মামলাগুলো বাতিল করেন। বাতিলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। উভয়পক্ষে শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আবেদন খারিজ করেন। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকলো।
কায়সার কামাল বলেন, মামলাগুলোতে বলা হলো, চাঁদা দাবি করা হয়েছে। কিন্তু কে করেছে সেটা নেই। টাকা কোথায় গেছে সে হদিসও নেই। এসব মামলায় তারেক রহমানকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছিল। আমিন আহমেদের মামলায় প্রথম গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে মামলায় তারেক রহমানকে উপমহাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে টর্চার করা হয়। এই টর্চারের কারণে তাকে লন্ডনে চিকিৎসা নিতে হয়।
আইনজীবীরা জানান, একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব উদ্দিন ২০০৭ সালের ২৭ মার্চ চাঁদাবাজির অভিযোগে গুলশান থানায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। আরেকটি কোম্পানির কর্মকর্তা সৈয়দ আবু শাহেদ সোহেল একই অভিযোগে ওই বছরের ৪ মে গুলশান থানায় পৃথক একটি মামলা করেন। ওই বছরের ৮ মার্চ ঠিকাদার আমীন আহমেদ ভুঁইয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে দ্রুত বিচার আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। ঠিকাদার মীর জাহির হোসেন ধানমন্ডি থানায় ২০০৭ সালের ১ এপ্রিল একটি মামলা করেন।
ওই চার মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে তারেক রহমান সেসময় হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (চূড়ান্ত) ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট। পরে এ চার মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যা আজ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
আমার বার্তা/এমই