বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৭ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল চলতি বছর (২০২৫) একুশে পদক পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই পদক তুলে দেন।
এ বছর শিল্পকলায় পাঁচজন, সাংবাদিকতায় একজন, সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে একজন, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় একজন, শিক্ষায় একজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দলগতভাবে চারজন, সমাজসেবায় একজন, ভাষা ও সাহিত্যে দুজন, গবেষণায় একজন এবং ক্রীড়াক্ষেত্রে জাতীয় নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক পেয়েছেন।
পদক বিজয়ীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে নিজ নিজ পদক গ্রহণ করেন। মরণোত্তর একুশে পদক বিজয়ীদের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যরা এই পদক গ্রহণ করেন।
শিল্পকলার বিভিন্ন শ্রেণিতে পদক পাওয়া পাঁচজন হলেন- চলচ্চিত্রে আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), সংগীতে ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) এবং ফেরদৌস আরা, আলোকচিত্রে নাসির আলী মামুন ও চিত্রকলায় রোকেয়া সুলতানা। আজিজুর রহমানের পক্ষে তার কন্যা আলিয়া রহমান বিন্দি ও নিরোধ বরণ বড়ুয়ার মেয়ে শিল্পী ফাল্গুনী বড়ুয়া পদক গ্রহণ করেন।
সাংবাদিকতায় এবার একুশে পদক পেয়েছেন সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ (মরণোত্তর)। তার পক্ষে পদক নেন তার স্ত্রী। সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে পদক পেয়েছেন দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
সংস্কৃতি ও শিক্ষায় অবদানের জন্য ড. শহিদুল আলমের হাতে পদক তুলে দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
এছাড়া সংস্কৃতি ও শিক্ষা ক্যাটাগরিতে ড. শহীদুল আলম, শিক্ষায় ড. নিয়াজ জামান, সমাজসেবায় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর) একুশে পদক জিতেছেন। ইউসুফ চৌধুরীর পক্ষে তার ছেলে জসিম উদ্দীন চৌধুরী পদক গ্রহণ করেন।
ভাষা ও সাহিত্য ক্যাটাগরিতে পদক পেয়েছেন কবি হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর) এবং শহীদুল জহির (মো. শহীদুল হক) (মরণোত্তর)। হেলাল হাফিজের পক্ষে তার বড় ভাই দুলাল আবদুল হাফিজ এবং শহীদুল জহিরের পক্ষে তার বড় ভাই হাবিবুল হকের কাছে পদক হস্তান্তর করা হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দলগতভাবে একুশে পদক পেয়েছেন মেহেদী হাসান খান (দলনেতা), রিফাত নবী (দলগত), মো. তানবিন ইসলাম সিয়াম (দলগত) ও শাবাব মুস্তাফা।
গবেষণায় মঈদুল হাসান একুশে পদক পেয়েছেন। এছাড়া ক্রীড়াক্ষেত্রে একুশে পদক পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। জাতীয় নারী ফুটবল দলের পক্ষে দলনেতা সাবিনা খাতুন ও সহযোগী দলনেতা মারিয়া মান্দা পদক গ্রহণ করেন।
সাংবাদিকতা ও মানবাধিকার বিষয়ে অবদানের জন্য মাহমুদুর রহমানের হাতে একুশে পদক তুলে দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৪ লাখ টাকার চেকসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে চালু করা একুশে পদক সরকার প্রতিবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দিয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানে পদকপ্রাপ্ত সুধীজনের নাম ঘোষণা ও পরিচিতি পাঠ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব মো. মফিদুর রহমান।
সম্প্রতি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের পেছনে দাঁড় করিয়ে ফটোসেশন করার ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠান থেকে গ্রুপ ফটোসেশনের প্রচলিত রীতি বাদ দেওয়া হয়।
আমার বার্তা/জেএইচ