পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মানুষের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ ভ্রমণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রেলের টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে ভ্রাম্যমান আদালত ও ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে স্টেশনসমূহে ইতোমধ্যে একাধিক অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয়।
এসব অভিযান ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে টিকেট কালোবাজারির সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। গত ২০ মার্চ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশনে একজন ব্যক্তিকে বিভিন্ন তারিখের ঢাকা থেকে পঞ্চগড় ও ঢাকা থেকে পার্বতীপুরের সর্বমোট ১০৮ টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট, ৩ টি মোবাইল ও ১৪ টি সীম কার্ডসহ আটক করে। এতগুলো টিকিট তার কাছে কিভাবে এলো জিজ্ঞাসাবাদে সে সন্তোষজনক কোন জবাব দিতে পারেনি। পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসায় সে ওই টিকিটগুলো অসৎ উপায়ে ব্যবহারের জন্য এবং টিকিট কালোবাজারী চক্রের সাথে যোগসাজশ করে কেটেছে বলে জানায়।
গত ২১ মার্চ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা রেলওয়ে পুলিশ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে পেশাদার টিকেট কালোবাজারি মো. রাকিব মিয়া (২৪) কে ঢাকা-টু কিশোরগঞ্জ রুটের ভিন্ন ভিন্ন তারিখের এগারো সিন্ধুর গোধূলি/প্রভাতী/কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ২১ টি আসনের টিকিট ও ১ টি স্মার্ট মোবাইল ফোনসহ গ্রেফতার করে ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অধিক দামে অর্থাৎ ১৮০ টাকার টিকেট ৪৫০-৫০০ টাকায় আগ্রহী যাত্রীদের কাছে বিক্রি করছে বলে স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, সে তার নিজের ও পরিচিত ৪ জনের এনআইডি ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে ৫ টি রেলওয়ে সেবা অ্যাপস খুলে নিয়মিত ঢাকা টু কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট অনলাইন হতে সংগ্রহ করে থাকেন। এরপর সে ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে আগ্রহী যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রয় করে বিকাশ/ নগদের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করেন। এরপর গ্রাহকের মোবাইলে টিকিটের পিডিএফ কপি পাঠিয়ে দেন।
উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারকৃত আসামি ঈদ পরবর্তী কিশোরগঞ্জ টু ঢাকা রুটের অনলাইন ভিত্তিক টিকিট কালোবাজারির প্রস্তুতিসহ ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছিল। ঢাকা রেলওয়ে থানায় এ ব্যাপারে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
এ ছাড়া মো. আশরাফুল ইসলাম, ক্যারেজ পরিচর্যক, টি নং ২৩৭৮, রাজশাহী ক্যারেজ ডিপো- তাকে টিকেটবিহীন দুইজন যাত্রী ট্রেনে উঠানোর অভিযোগে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের এটেনডেন্ট আশরাফুল ইসলাম ২৭ মার্চ বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ২ জন যাত্রী তুলে ১ হাজার টাকা নেন, গার্ড ও টিটির সামনে বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে।
এছাড়া আরো একাধিক স্থানে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারি ও এ সংক্রান্ত বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ অভিযান ও কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
আমার বার্তা/এমই