ই-পেপার মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বাংলাদেশে প্রতি চারজন নারীর মধ্যে তিনজনই সহিংসতার শিকার

আমার বার্তা অনলাইন:
১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৩৯

বাংলাদেশে প্রতি চারজন নারীর মধ্যে তিনজনই তাদের জীবনে অন্তত একবার সহিংসতার শিকার হয়েছেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) যৌথভাবে পরিচালিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’-এ উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ চিত্র।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

জরিপে দেখা গেছে, ৭৬ শতাংশ নারী কখনও না কখনও জীবনসঙ্গী বা স্বামীর দ্বারা শারীরিক, যৌন, মানসিক বা অর্থনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এমনকি ৪৯ শতাংশ নারী গত এক বছরেই এ ধরনের সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে ৬২ শতাংশ কখনও তা প্রকাশ করেননি।

বিবিএস জানিয়েছে, জরিপে জাতিসংঘের নির্ধারিত সহিংসতার ধরন ছাড়াও বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক আচরণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ১৫ বছর বয়সের পর ১৫ শতাংশ নারী নন-পার্টনার বা স্বামী ব্যতীত অন্য কারও দ্বারা শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং ২.২ শতাংশ নারী নন-পার্টনার কর্তৃক যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বলেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বৃহৎ পরিসরের জরিপ। এর মাধ্যমে আমরা সহিংসতার ব্যাপকতা, প্রভাব ও প্রবণতা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেয়েছি, যা ভবিষ্যৎ নীতি প্রণয়নে দিকনির্দেশনা দেবে। তিনি জানান, ভবিষ্যতে নারীর প্রতি সহিংসতা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহে বিবিএসের সক্ষমতা আরও জোরদার করা হবে।

যদিও ২০১৫ সালের তুলনায় কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেছে, তখন স্বামী দ্বারা সহিংসতার হার ছিল ৬৬ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৪৯ শতাংশে তবুও জরিপটি দেখায়, নারীদের জীবনে সহিংসতার প্রভাব এখনও গভীর। সহিংসতার পরও চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা নিতে অধিকাংশ নারী দ্বিধান্বিত থাকেন। ক্ষতিকর সামাজিক রীতিনীতি ও সম্মানহানির ভয়ে অনেকেই নীরব থাকেন।

জরিপে আরও দেখা যায়, অর্ধেকেরও বেশি নারী (৫৪ শতাংশ) জীবদ্দশায় স্বামীর দ্বারা শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। যৌন সহিংসতার শিকারদের ৬০ শতাংশই গত এক বছরে একাধিকবার এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন। গর্ভাবস্থাতেও সহিংসতা থেমে থাকেনি, ৭.২ শতাংশ নারী শারীরিক ও ৫.৩ শতাংশ যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

নন-পার্টনার সহিংসতার ঘটনায় শাশুড়ি ও পুরুষ আত্মীয়রাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অপরদিকে, যৌন সহিংসতার ঘটনা বেশি ঘটেছে পরিচিতজনদের দ্বারা যেমন, আত্মীয়, বন্ধু বা পরিচিত পুরুষের মাধ্যমে। জরিপে আরও দেখা গেছে, ৮.৩ শতাংশ নারী প্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘটিত জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে যৌন ব্ল্যাকমেইল, ছবি অপব্যবহার এবং ডিজিটাল নজরদারি।

সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র ১৪.৫ শতাংশ চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। স্বামীর দ্বারা সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র ৭.৪ শতাংশ আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন, যেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা স্থানীয় নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে, নন-পার্টনার সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে ৩.৮ শতাংশ আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন, এবং তাদের বেশিরভাগই পুলিশের সহায়তা নিয়েছেন।

জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রতি দুইজন নারীর মধ্যে একজনেরও কম (৪৮.৫ শতাংশ) জানেন কোথায় অভিযোগ জানাতে হয় এবং মাত্র ১২.৩ শতাংশ নারী হেল্পলাইন ‘১০৯’ সম্পর্কে জানেন।

সহিংসতার মূল কারণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যৌতুক প্রথা, স্বামীর মাদকাসক্তি, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও শহুরে বস্তিতে বসবাস নারীদের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে, স্বামীর উচ্চতর শিক্ষা সহিংসতার সম্ভাবনা কমায়।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কাইয়ুম আরা বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মিসেস আলেয়া আক্তার ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিসেস শবনম মুস্তারি।

ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের প্রতিনিধি ক্যাথরিন ব্রিন কামকং বলেন, এই পরিসংখ্যানগুলো বাংলাদেশের নারীর বাস্তব চিত্র প্রকাশ করছে। হাজারো নারী সাহস করে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, যা আমাদের জন্য নীতি প্রণয়নের শক্ত ভিত্তি। এখন প্রয়োজন সহিংসতা প্রতিরোধ, সার্ভাইভারদের সহায়তা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার রূপান্তরমূলক পদক্ষেপ।

অনুষ্ঠানে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় উইমেন’স অ্যাফেয়ার্স রিফর্ম কমিশনের চেয়ারপার্সন শিরীন হক, এসপিবিএনের ডিআইজি ড. শোবে রিয়াজ আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ও জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সানজিদা আক্তার অংশ নেন। তারা বলেন, সহিংসতা কমাতে প্রমাণভিত্তিক নীতি প্রণয়ন এবং নারী ও কন্যাশিশুর জন্য সুরক্ষিত সমাজ গড়াই এখন সময়ের দাবি।

আমার বার্তা/এল/এমই

ক্ষমতা যতই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়: প্রধান উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

লালদিয়ায় ডেনমার্কের বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য নতুন যুগের সূচনা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, লালদিয়া টার্মিনালে ডেনমার্কের কোম্পানি এপিএম টার্মিনালসের বিনিয়োগ বাংলাদেশের বাণিজ্য

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের

হাসিনা-কামালকে হস্তান্তরে ভারতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আহ্বান

মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেনবাগে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল

ক্ষমতা যতই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়: প্রধান উপদেষ্টা

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ খালেদা জিয়ার

বিএনপি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার: ২৮ নেতার পদ পুনর্বহাল

লালদিয়ায় ডেনমার্কের বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য নতুন যুগের সূচনা

এটা শুধু হাসিনার অপরাধের বিচার নয়, স্বৈরশাসনের কবর: মির্জা ফখরুল

হাসিনার শাস্তি কার্যকর ও মামুনের শাস্তি রিভিউয়ের দাবি জুলাই ঐক্যের

শ্রম রপ্তানির আড়ালে বাংলাদেশি তরুণদের যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ায় নিয়োগ

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

নন-এমপিও শিক্ষকদের সমস্যার সমাধানে সরকার আন্তরিক: শিক্ষা উপদেষ্টা

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ ৫ আগস্টের ‘চূড়ান্ত বিজয়’

উগান্ডাকে হারিয়ে নারী কাবাডি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের উড়ন্ত সূচনা

কৈফিয়তের জন্য চাপ বাড়লেও শেখ হাসিনাকে ফেরাচ্ছে না ভারত

জনশক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত করতে শিক্ষা সংস্কারের বিকল্প নেই: বাউবির ভিসি

মিরপুরে তারুণ্যের উৎসব–২০২৫ জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি আয়োজন

দেশবাসীকে সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জামায়াত আমিরের

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

হাসিনা-কামালকে হস্তান্তরে ভারতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আহ্বান

মানবতাবিরোধী হাসিনা: রাজনৈতিক আধিপত্য থেকে মৃত্যুদণ্ডের আসামি

এক মাসের মধ্যে হাসিনাকে দেশে এনে রায় কার্যকরের দাবি জানালেন নাহিদ