ই-পেপার মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

ভ্রাম্যমান আদালত (মোবাইল কোর্ট) এ বিচার কার মাধ্যমে হবে তার সুরাহা কেন জরুরি 

মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম:
১৩ মে ২০২৫, ১০:৩৯
আপডেট  : ১৩ মে ২০২৫, ১৬:৫৪

সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দুইদিনব্যাপী সিভিল সার্জন সম্মেলনে সরকারের নিকটে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনার ক্ষমতা চেয়েছেন সিভিল সার্জনরা। দাবির পিছনে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন, অবৈধ ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি, ভুয়া চিকিৎসক, দালাল চক্র ও ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণে তাঁদের সীমিত আকারে এই ক্ষমতা দেওয়া জরুরি।

সিভিল সার্জনদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবী কতটুকু যৌক্তিক বা আদৌ যৌক্তিকতা রয়েছে কিনা তার আইনগত দিক তুলে ধরবো। ভুয়া ও অবৈধ ক্লিনিকের পাশাপাশি ভুয়া চিকিৎসক এবং চারিদিকে ভেজাল ওষুধের ছড়াছড়ি। কিন্তু মোবাইল কোর্ট আইন পরিচালনার দায়িত্ব তারা নিজেরা চান কেন? কারণ হলো মোবাইল কোর্টের কাজ বিচারিক কাজ হলেও এতোদিন পরিচালিত হচ্ছে নির্বাহী বিভাগে নিযুক্ত সহকারী কমিশনার এর মাধ্যমে যাদের কাজ আদৌও বিচার করা নয়। এতো দিন ভুল এবং অনুপযুক্ত এজেন্সির মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হওয়ায় এবার সেই আদালত পরিচালনার দায়িত্ব চান সিভিল সার্জন তথা ডাক্তার গণ যা সংবিধান ও বিদ্যমান আইনের পরিপন্থী। বিচারিক কাজ বিচার কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ করতে পারে না তা বিদ্যমান আইন ও সংবিধান বলে। কিন্তু ২০০৯ সালে প্রণীত আইন মতে ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী আমলা তথা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে নিযুক্ত সহকারী কমিশনারগণ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নামে অবৈধভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে যার আইনগত ভিত্তি না থাকায় হাইকোর্টের রায় রয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য ডিএমপি ইতিমধ্যে জুডিসিয়াল সার্ভিস থেকে কতেক জুডিসিয়াল স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করেছে। অবৈধ ক্লিনিক, ভুয়া চিকিৎসক এবং ভেজাল ওষুধ এর বিস্তার ঠেকাতে সরকার স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে পারে। তবে সংবিধান ও বিদ্যমান আইনানুসারে বিচার বিভাগের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে সেই মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হতে হবে। সিভিল সার্জন কেন মোবাইল কোর্ট চান, স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব হচ্ছেন একজন ইতিহাসে মাস্টার্স পাশ করা মানুষ আবার কৃষি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বা বিভাগের সচিব হন রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ করা ব্যক্তি। যাঁর যেখানে অভিজ্ঞতা তাকে সেখানে সুযোগ করে দেওয়ার বিধান চালু না করা গেলে এভাবে অযৌক্তিক আবদার চলতেই থাকবে।

ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় ভ্রাম্যমান আদালত (মোবাইল কোর্ট) এর কার্যক্রম ২০০৯ সাল থেকে চলমান। তবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অর্থাৎ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হওয়ার পরে মোবাইল কোর্ট কাদের মাধ্যমে পরিচালিত হবে বা হওয়া উচিত বা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মোবাইল কোর্ট কারা পরিচালনা করছে এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে আইনাঙ্গনে। এমনকি মোবাইল কোর্ট আইনি কাঠামোতে সাংবিধানিক প্রশ্নে ঠিকঠাক চলছে কিনা সে বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।

যাহোক বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বক্তব্য চলবে না। আইন নিজস্ব গতিতে চলবে। তবে সচেতন নাগরিক হিসেবে মোবাইল কোর্ট নিয়ে সাধারণ জনগণ কী ভাবছে বা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পরে বিপ্লবী ছাত্র জনতার চাওয়া কী? আইন ও বিচার বিভাগ সংস্কার নিয়ে ছাত্র-জনতা কী কী সংস্কার চাই সেসব গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে দুয়েকটা কথা বলা যেতেই পারে।

মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে নির্বাহী বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে। এটা সাংবিধানিকভাবে সঠিক নয় মর্মে তিনটা রিট পিটিশন নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিলেন বেশ আগে। এখন সরকার আপিল করায় তা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। এখন ছাত্র-জনতা মনে করেন বিচার বিভাগের কাজ বিচারক তথা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে পরিচালিত হওয়া উচিত। তাই উচ্চ আদালতে মোবাইল কোর্ট নিয়ে পেন্ডিং থাকা পিটিশনের দ্রুত নিষ্পত্তি চাই। বিচার সংশ্লিষ্টরাও তেমনটা চায়। তবে এক্সিকিউটিভ হাকিম দিয়ে পরিচালিত মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম নিয়ে কিছু কথা বলে রাখা ভালো, তাহলে লেখাটি প্রাসঙ্গিক হবে।

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত তিনটি রিট পিটিশন নিষ্পত্তি করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা সংক্রান্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা বৈধ নয় বিধায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত বিচারিক কার্যক্রমকে অবৈধ ঘোষণা করে। ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নীতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটি আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পর্যবেক্ষণ করা দরকার। রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনটি বিভাগ; আইন, শাসন এবং বিচার বিভাগ একটি সমন্বিত কাঠামোর মধ্যে থাকা উচিত। একটি বিভাগ অন্য বিভাগের উপর কর্তৃত্বপরায়ণ না হয়ে জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার মতের উপর প্রাধান্য দেবে এটাই সংবিধানের মৌলিক চেতনা।

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিউজে (১৯ জুলাই ২০২০) দেখলাম মিটফোর্ডে র্যা বের অভিযানে ২০ লাখ টাকার নকল ওষুধ জব্দ, ফার্মেসি সিলগালা করা হয়েছে। শুধু আজ নয়, সারা বছরই এরকম সুখবর এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার বিচারের খবর প্রায়ই দেখে থাকি। এই খবরে অনেকে বাহবা দেবে যে কী সুন্দর ও ত্বরিত বিচার। কিন্তু এই ধরনের শর্টকার্ট বিচার দীর্ঘ মেয়াদে কী ফল বয়ে আনবে তা ভাবতে হবে। লেখাটিতে আইনগত আলোচনা হবে। লেখাটি নিয়ে শুধু একাডেমিক আলোচনা করব। দয়া করে কেউ পক্ষে-বিপক্ষে গিয়ে নিজের মতো করে দেখবেন না।

ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম মতে বিচার হচ্ছে দৃশ্যমানভাবে দুই পদ্ধতিতে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে, অপরটি নিয়মিত বিচারিক আদালতে বা ট্রাইব্যুনালে। উভয় আদালতের বিচারে জনগণের সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি রয়েছে। যেমন- ভ্রাম্যমাণ আদালতে বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে ওঠবস করার ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়া, আইনজীবীকে ব্যক্তিগত ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাজা দেওয়া, একসঙ্গে ১২৩ শিশুকে এখতিয়ার বহির্ভূত সাজা দেওয়া ইত্যাদি নানা ধরনের বিচার জনগণকে ইতোমধ্যে মোবাইল কোর্ট উপহার দিয়েছে।

তবে মোবাইল কোর্টের যে কিছু সফলতা নেই, তা বলব না। ধরুন, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। যাহোক, সমালোচনা ও আলোচনার মাঝেই চলছে সুপারসনিক মোবাইল কোর্ট ও তার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। (শিশুর অবৈধ সাজার মাননীয় হাইকোর্টের রায়ে সুপারসনিক বায়োনিক ম্যান শব্দটি এসেছে)। হাইকোর্টের চূড়ান্ত রায় : ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুদের সাজা দেওয়া অবৈধ। (সূত্র দৈনিক সময়ের আলো ১২ মার্চ ২০২০)

গতকাল যে সাজাটি মিডফোর্ডে ওষুধের দোকানে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়েছেন, সেখানে কিছু প্রাসঙ্গিক ও আইনি বিশ্লেষণ দেওয়া উচিত বলে মনে করি। পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে নকল, ভেজাল ও অননুমোদিত ওষুধ বিক্রি ও মজুদ করায় পাঁচটি ফার্মেসির মালিককে ৭ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যা বের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভেজাল ওষুধ শুনলেই গা শিহরিত হয়। কী ভয়ংকর ও মারাত্মক অপরাধ আর শাস্তি, শুধু টাকা জারমানা অনাদায়ে দুই-তিন মাসের জেল। কী বিচিত্র!

এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, সমান্তরাল বিচার ব্যবস্থা কিভাবে চলছে সেটি। উদাহরণস্বরূপ- নকল, ভেজাল ও অননুমোদিত ওষুধ বিক্রি ও মজুদ করার জন্য ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে খুব সুন্দর করে ওইরূপ অপরাধের বিবরণ এবং অপরাধ সংঘটন করলে শাস্তি কী তা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই ভেজাল ওষুধ, ইনসুলিন ও মেয়াদোত্তীর্ণ বেচাকেনা বা মজুদ করে অপরাধী মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করলেন। তা সত্ত্বেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কিছু টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দিলেন এবং দোকান সিলগালা করে দিলেন। এই বিচারে কি অপরাধীর উপযুক্ত বিচার হলো? অবশ্যই না। যেখানে নকল, ভেজাল ও অননুমোদিত ওষুধ বিক্রি ও মজুদ করার জন্য থানায় বা নিয়মিত আদালতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করার সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে সেখানে শুধু জরিমানা অনাদায়ে দু-এক মাসের শাস্তি এই ধরনের গুরুতর অপরাধে মোটেও যথোপযুক্ত নয়।

বিশেষ ক্ষমতা আইনে গুরুতর অপরাধগুলো এভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে: রেশনে সরবরাহকৃত দ্রব্যাদির কালোবাজারি এবং রেশনের লাইসেন্স, পারমিট ইত্যাদি কেনাবেচা করা; আইনে নির্ধারিত পরিমাণের বেশি দ্রব্যাদি মজুদ করা; ধারা: ২৫ (১) খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও প্রসাধনী দ্রব্যে ভেজাল দেওয়া বা ভেজাল সামগ্রী বিক্রি করা; (ধারা-২৫ গ) এবং ১৯৭৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বিশেষ ক্ষমতা আইন করা হয়। ইংরেজি ভাষায় করা আইনের ২৫ ধারায় কালোবাজারে লেনদেনের দণ্ড, ২৫ (এ) ধারায় মুদ্রা-নোট এবং সরকারি স্ট্যাম্প জাল করার দণ্ড, ২৫ (বি) ধারায় চোরাচালানের দণ্ড, ২৫ (সি) ধারায় খাদ্য, পানীয়, ওষুধ, প্রসাধন দ্রব্যে ভেজাল মেশানো বা বিক্রির দণ্ড, ২৫ (ডি) ধারায় অপরাধ সংঘটনে উদ্যত হলে দণ্ড এবং ২৫ (ই) ধারায় কোম্পানি দ্বারা অপরাধের বিষয়ে বলা হয়েছে। এখন আইন কমিশন ২৫ (সি)-এর পরে ২৫ গগ নতুন ওই ধারা সংযোজন করার সুপারিশ করেছে। আইনের ২৫ (সি) ধারায় দুটি উপধারা আছে। এর মধ্যে উপধারা ২-তে দুটি দফা রয়েছে। কমিশন এখন ‘গ’হিসেবে গৃহনির্মাণ সামগ্রী বা আসবাব বা অন্য যেকোনো ব্যবহারযোগ্য দ্রব্যের সঙ্গে নিম্নমানের দ্রব্য দিয়ে ভেজাল মেশানো অপরাধ হিসেবে গণ্য করার কথা বলেছে এবং উহা বিক্রয় বা বিক্রয়ের উদ্দেশে পরিবহন করে বা মজুদ করে; তবে সে ব্যক্তি অনধিক যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। (সূত্র: ১৪ আগস্ট, ২০১৪, দৈনিক প্রথম আলো।)

কিন্তু বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট আইনে তড়িঘড়ি করে যে সাজাটি দিলেন তা কি উপযুক্ত শাস্তি হলো? জরিমানা পরিশোধ করে আবার একই অপরাধ করার সুযোগ তৈরি হলো কিনা সে বিষয়টি দেখতে হবে। বরং বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যা করতে পারতেন তা হলো, তিনি বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (১), ২৫ সি ও সংশ্লিষ্ট আইনে থানা এজাহার করে (জিআর কেস) নিয়মিত মামলা দায়ের করে আসামিকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দিলে উপযুক্ত বিচার হতো। মূল বিচার হতো বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। বেশি সাজা যে আইনে বা অপরাধে সুনির্দিষ্ট আইন-কানুন বিদ্যমান সেখানে মোবাইল কোর্ট আইনে শুধু জরিমানা করলে যুগপৎভাবে আরেকটি বিচার ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে মানুষকে অপরাধ থেকে নিবৃত্ত করা যাবে কিনা তা প্রশ্নের উদ্রেক করে। শুধু জরিমানা অনাদায়ে দুই-তিন মাসের সাজা ওষুধে ভেজাল বা মজুদদারির জন্য প্রদান মোটেই উপযুক্ত সাজা নয়।

আমি ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিরুদ্ধে নই এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিরুদ্ধেও এই লেখাটি না। আমি শুধু বলছি অপরাধের ধরন ও গুরুতর কিনা তা উপলব্ধি করে যেখানে যে অপরাধের বিচার হওয়া উচিত সেখানেই বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনায় ভুলভ্রান্তি পরিলক্ষিত হওয়ায় এবং আইন মাফিক বিচার প্রক্রিয়া পরিচালিত না হওয়ায় জনমনে মোবাইল কোর্ট নিয়ে ভুল মেসেজ যাচ্ছে। ফলে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হতে হবে আইনে পড়া বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে। পরিবেশ আদালত আইন এবং বিশুদ্ধ খাদ্য আইন অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট ইতোমধ্যে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বেশ কয়েকটি জেলায় যা ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে।

বিচার দ্রুত করতে গিয়ে ন্যায়বিচারকে কোনোভাবেই ছুড়ে ফেলা যাবে না। শুধু বিচার করলে চলবে না, ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন ওই বিচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বা হচ্ছে তা জনগণকে বোঝাতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত কি সকল ক্ষেত্রে জনগণের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে? সেটিও অনেক মূল্যের প্রশ্ন। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর এবং এজন্য ইতোমধ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার, সংবিধান সংস্কার, পুলিশ সংস্কার, নির্বাচন সংস্কার এবং জনপ্রশাসন সংস্কারসহ বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজ করতে গৃহীত ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প, লিগ্যাল এইড ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি এবং আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন আমাদেরকে আশাবাদী করেছে।

আবার বিদ্যমান ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হয় এমন অভিযোগ প্রায়ই শুনি। কেন বিলম্ব হয়, কীভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যায় তার সমাধান করতে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপারিশে আনতে হবে এবং সে অনুযায়ী আইন মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে শিগগিরই।

মোবাইল কোর্টকে আইনি কাঠামোতে সংবিধান ও বিদ্যমান ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা অনুসারে ঢেলে সাজাতে হবে। মোবাইল কোর্ট চলবে বিচার বিভাগের অধীনে। বিচার করার দায়িত্ব সিভিল সার্জন বা অন্য কেউ নির্বাহী বিভাগের নয়। বিচার বিভাগের ন্যায় সমান্তরালে অন্যান্য শর্টকার্ট বিচার ব্যবস্থা বা মোবাইল কোর্ট যতই জনপ্রিয় হয়ে উঠুক না কেন সাংবিধানিকভাবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা মোবাইল কোর্ট আইনে বর্ণিত অপরাধের বিচার না হলে মানুষ দীর্ঘমেয়াদে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন থেকে বঞ্চিত হবে।

লেখক : পিএইচডি ফেলো, সংবিধান ও আইন গবেষক এবং কলামিস্ট, অতিরিক্ত জেলা জজ।

আমার বার্তা/মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম/এমই

মা: ভালোবাসার নিরবধি প্রতিমা

মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার। আবার এসেছে বিশ্ব মা দিবস—একটি দিন যা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে

রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অনন্য উচ্চতায় তারেক জিয়া

২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে

হজে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক সুস্হ্যতায় কী করবেন

প্রতিবছরের মতো এবারও হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। হজযাত্রীদের

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনির বিস্ময়কর প্রত্যাবর্তন

অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়ে আবারো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন মধ্য বামপন্থী লেবার পার্টির অ্যান্থনি আলবানিজ।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মনপুরায় ঝুঁকিপূর্ণ গাছের সাঁকো দিয়ে চলাচল হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা

শিক্ষকরা সক্রিয়ভাবে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারেন না

উচ্চ কোলেস্টেরল যখন নীরব ঘাতকে পরিনত করে

জাতীয় স্বার্থের বাইরে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না: বিডার চেয়ারম্যান

পুলিশ কিলার ফোর্স নয়, বড়জোর শটগান থাকতে পারে: আইজিপি

সৌদি আরবের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের

ঢাকার মূল সড়কে কোনো রিকশা চলতে পারবে না: ডিএনসিসি প্রশাসক

প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে: আইইবি

কলম বিরতিতে এন‌বিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, তোপের মুখে চেয়ারম্যান

তিন দশক পর প্রিমিয়ার লিগে ফিরছে পিডব্লিউডি স্পোর্টস ক্লাব

রানা দেখালেন চেষ্টা থাকলে নিউইয়র্ক জয় করা সম্ভব

এসএসসির শেষ পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৩১ হাজার, বহিষ্কার ৮

অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে জাপানের সঙ্গে এফওসি হচ্ছে

মিশরের সঙ্গে শিগগিরই ভিসা অব্যাহতি চুক্তি হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারবেন সিভিল সার্জনরা

পাকিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজের নতুন সূচি প্রকাশ

করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমরা কোন রাষ্ট্রের প্রক্সি হতে চাই না

জুলাই ঘোষণাপত্রে আ.লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়টি উল্লেখ থাকতে হবে

ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর প্রোগ্রাম ‘নেক্সটজেন’ চালু করছে প্রাণ-আরএফএল

শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটিতে ৪৪৫ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ