মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশের তালিকায় রয়েছে কুয়েত। দেশটির বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশি শ্রমিকদের রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা। অথচ তারা দেশটিতে নানা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। প্রবাসীদের অভিযোগ, চুক্তির মেয়াদ শেষে অথবা পারিবারিক জরুরি প্রয়োজনে শ্রমিকরা দেশে ছুটিতে যেতে চাইলে অথবা ছুটি মঞ্জুর করাতে কুয়েতের বেশিরভাগ কোম্পানিগুলোতে দায়িত্বরত বাংলাদেশি সুপারভাইজার, ম্যানেজারকে ঘুষ দিতে হয়। নয়তো ছুটি মঞ্জুর হয় না অথবা পাসপোর্ট দেওয়া হয় না।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত গণশুনানিতে এমন অভিযোগ করেন কুয়েত প্রবাসী সমাজকর্মী মহসিন পারভেজ।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, একজন প্রবাসী টানা ছয় বছর কাজের পর দেশে ছুটিতে যেতে চাইলে তার কাছে বাংলাদেশি সুপারভাইজার ১০০ কুয়েতি দিনার দাবি করেন। কুয়েতের শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি বছর বা দুই বছর পর পর ছুটি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও মানা হচ্ছে না এ নিময়। কিছু কিছু কোম্পানিতে কিছু অসাধু বাংলাদেশি সুপারভাইজার ও ম্যানেজার নিজস্ব নিয়ম বানিয়ে টাকার বিনিময়ে ছুটির পাস দিচ্ছেন পছন্দের ব্যক্তি অথবা সুবিধা নেওয়া ব্যক্তিকে। কিন্তু অনেকেই চুক্তির মেয়াদ অনুযায়ী পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন পরিবার ও প্রিয়জন থেকে আলাদা থাকায় প্রবাসীরা হতাশ ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
মোহাম্মদ হারুন নামের এক প্রবাসী এ প্রতিবেদককে জানান, তার এক ভাই অসুস্থ ছিলেন। দেশে পারিবারিক ঝামেলা থাকায় কোম্পানিতে ছুটির আবেদন করলে তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। পরে ভিসা বাতিল করে দেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ২ বছর আগে ৭ লাখ টাকায় ভিসা নিয়ে কুয়েতে এসেছিলেন। ৮ ঘণ্টা ডিউটিতে মাসে বেতন ছিল ৭৫ দিনার।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার শ্রম আবুল হোসেন বলেন, এ দেশের শ্রম আইন অনুযায়ী যদি শ্রমিককে ঠিকমতো বেতন না দেয়, আকামা নবায়ন না করে প্রাপ্ত ছুটি না দেয়, সেই শ্রমিক চাইলে লেবার কোর্টে আবেদনের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং প্রতিকার পেতে পারে। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো বিষয়ে শ্রমিকরা আমাদের কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা কোম্পানি মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলব। লিখিত অভিযোগ করলে আশা করি প্রতিকার পাবে।
আমার বার্তা/এমই