ই-পেপার রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

দাজ্জালের ভয়ংকর ফিতনা থেকে বাঁচার আমল

অনলাইন ডেস্ক:
২৪ জুলাই ২০২৪, ১২:১৯

পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে ফিতনা সবচেয়ে ভয়ংকর সেটি এখনও দৃশ্যমান হয়নি। শেষ যুগে সেই ফিতনার আবির্ভাব হবে এবং সবাইকে তার মুখোমুখি হতে হবে। সেই ফিতনাটির নাম হলো দাজ্জাল।

দাজ্জালের আগমন কেয়ামতের সবচেয়ে বড় আলমত। বিষয়টি কোরআন-সুন্নাহ সমর্থিত এবং ইসলামি আকিদার অংশ। মিথ্যে জান্নাত-জাহান্নামের চিত্র দেখিয়ে সে মুমিনকে বিভ্রান্ত করবে। হাদিসে এসেছে, দাজ্জাল পৃথিবীতে ৪০দিন অবস্থান করবে। প্রথম দিন হবে এক বছরের সমান। দ্বিতীয় দিন এক মাস ও তৃতীয় দিন হবে এক সপ্তাহের সমান। বাকি দিনগুলো হবে দুনিয়ার সাধারণ দিনের মতো। তখন নামাজের সময় নির্ধারণ করতে হবে অনুমান করে (মুসলিম-কিতাবুল ফিতান)।

‘দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয়, দাজ্জালের চলার গতিও সেরকম হবে’(মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)। ‘দাজ্জালের সঙ্গে দুটি নদী প্রবাহিত থাকবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটিতে সুন্দর পরিস্কার পানি দেখা যাবে। অন্যটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলবে। যার সঙ্গে দাজ্জালের সাক্ষাৎ হবে, সে যেন দাজ্জালের আগুনে ঝাপ দিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পান করে। কারণ সেই পানি সুমিষ্ট। দাজ্জালের চোখের উপরে মোটা আবরণ থাকবে। কপালে কাফের লেখা থাকবে। মূর্খ ও শিক্ষিত সকল ঈমানদার লোকই তা পড়তে সক্ষম হবে’ (মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)।

দাজ্জাল মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করবে। ‘সে মানুষের কাছে গিয়ে বলবে, আমি যদি তোমার মৃত পিতা-মাতাকে জীবিত করে দেখাই, তাহলে কি তুমি আমাকে প্রভু হিসেবে মানবে? সে বলবে অবশ্যই মানব। এ সুযোগে শয়তান তার পিতা-মাতার আকৃতি ধরে বলবে, হে সন্তান! তুমি তার অনুসরণ করো। সে তোমার প্রতিপালক।’ (সহিহ জামে আস-সগির: ৭৭৫২)

‘দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদি এবং মহিলা’(মুসনাদে আহমদ)। ‘ইস্পাহানের ৭০ হাজার ইহুদি দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে সেলাইবিহীন চাদর’ (মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)।

জড় পদার্থ ও পশুরাও দাজ্জালের ডাকে সাড়া দেবে। ‘দাজ্জাল এক জনসমাজে গিয়ে মানুষকে তার প্রতি ঈমান আনার আহ্বান জানাবে। এতে তারা ঈমান আনবে। দাজ্জাল তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করার জন্য আকাশকে আদেশ দেবে। তখন আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে, জমিন ফসল উৎপন্ন করবে এবং তাদের পশুপাল ও চতুষ্পদ জন্তুগুলো অধিক মোটা-তাজা হবে এবং পূর্বের তুলনায় বেশী দুধ দেবে। অন্য একটি জনসমাজে গিয়ে মানুষকে তার প্রতি ঈমান আনয়নের আহ্বান জানালে লোকেরা প্রত্যাখ্যান করবে। দাজ্জাল তাদের নিকট থেকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসবে। এতে তারা চরম অভাবে পড়ে যাবে। তাদের ক্ষেত-খামারে ফসলহানি দেখা দেবে। দাজ্জাল পরিত্যক্ত ভূমিকে তার নিচে লুকায়িত গুপ্তধন বের করতে বলবে। গুপ্তধনগুলো বের হয়ে মৌমাছির দলের মতো তার পেছন পেছন চলতে থাকবে’’ (মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)

উপরোক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, দাজ্জালের ফিতনা হবে খুবই মারাত্মক। সেই ভয়াবহ ফিতনা থেকে বেঁচে থাকা খুব কঠিন হবে। তাই ঈমান বাঁচতে ইসলামি সমাধান জানা মুসলিম উম্মাহর জন্য জরুরি। সমাধানগুলোর মধ্যে একটি স্বীকৃত আমল হচ্ছে সুরা কাহাফ তেলাওয়াত।

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার আমল

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করতে বলা হয়েছে। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের শুরুর ১০ আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৮০৯)

সুরা কাহাফ পাঠের নির্দেশ সম্ভবত এজন্য হতে পারে যে, মুমিন ব্যক্তি এগুলো গভীরভাবে পাঠ করলে দাজ্জালের বিস্ময়কর ঘটনা দেখে কিছুতেই বিচলিত হবে না। এতে সে হতাশ হয়ে বিভ্রান্তিতেও পড়বে না। তাই, সুরা কাহাফের ৪টি ঘটনার শিক্ষা অনুধাবন করতে হবে, আর সুরা কাহাফের বর্ণনা অনুযায়ী নিজেকে গুণান্বিত করতে হবে।

দাজ্জাল যে চার ফেতনার মাধ্যমে মানুষকে ঈমানহারা করবে, সুরা কাহাফে তেমনই চারটি ঘটনার মাধ্যমে সজাগ ও সতর্ক করা হয়েছে। যেমন—

১. গুহাবাসী যুবকদের ঘটনার মাধ্যমে ঈমানের ফিতনা

২. বাগানের মালিকের ঘটনার মাধ্যমে সম্পদের ফিতনা

৩. হজরত মুসা (আ.) ও হজরত খিজির (আ.)-এর ঘটনার মাধ্যমে জ্ঞান ও তথ্যের ফিতনা

৪. বাদশাহ জুলকারনাইনের ঘটনার মাধ্যমে শাসন ক্ষমতার ফিতনা

উপরোক্ত ৪টি ঘটনার শিক্ষা থেকে যে গুণ অর্জন করতে হবে, তার আলোচনাও এসেছে সুরায়। যেমন-

২৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহর দিকে অধিক মনোনিবেশ থাকার গুণ

২৮ নম্বর আয়াতে নেককার মানুষের সান্নিধ্য ও তাদের সঙ্গে থাকার অভ্যাস করতে হবে

৪৫ নম্বর আয়াতে সম্পদের ফেতনায় না পড়তে পার্থিব জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি

৪৭-৪৯ নম্বর আয়াতে পরকালের প্রতি অধিক স্পৃহা জাগানোর গুণ অর্জন

৬৯ নম্বর আয়াতে ধৈর্যধারণের গুণ অর্জন এবং

১১০ নম্বর আয়াতে বেশি নেক আমল করার গুণ অর্জন।

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য দোয়ার শিক্ষাও রয়েছে হাদিসে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ (স.) নিম্নে বর্ণিত দোয়াটি পাঠ করতেন। দোয়াটি হলো— اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি, ওয়া মিন আজাবিন্না-রি, ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামা-তি, ওয়ামিন ফিতনাতিল মাসীহিদ্দাজ্জা-ল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কবরের শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।’ (বুখারি: ১৩৭৭)

এছাড়াও ইসলামকে সঠিকভাবে যারা আঁকড়ে ধরবে, তাদের জন্য দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিজেকে বাঁচানো সহজ হবে। একইসঙ্গে তার কাছ থেকে দূরে পালানোর কথাও এসেছে হাদিসে। তার সময়ে জনসমাগম এড়িয়ে চলাটাই নিরাপদ। সম্ভব হলে মক্কা-মদিনায় আশ্রয় নিতে হবে। কারণ, মক্কা-মদিনার প্রতিটি প্রবেশ পথে ফেরেশতারা পাহারা দেবেন।’ (মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)

আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের পূর্ববর্তী সময়ে অভিশপ্ত দাজ্জালের ভয়াবহ ফিতনা থেকে মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করুন। উল্লেখিত আমলসমূহ যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আমার বার্তা/জেএইচ

পৃথিবীতে নির্মিত প্রথম মসজিদ নিয়ে যা বলেছেন প্রিয়নবী সা.

মসজিদ আল্লাহ তায়ালার ঘর। আল্লাহর ইবাদতের জন্যই মসজিদ বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে বলে পবিত্র কোরআনে বর্ণনা

চুক্তি নবায়ন ছাড়া হজ কার্যক্রম করতে পারবে না এজেন্সিগুলো

শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের পবিত্র হজের প্রাথমিক কাজ নিবন্ধন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ

আল্লাহর কাছে যে ৩ আমল সবচেয়ে বেশি প্রিয়

পবিত্র কোরআনে খোদ মহান রব ঘোষণা দিয়েছেন, ‘হে নবী আপনি তাদের বলে দিন- যদি তোমরা

হাদিসে ভালো কাজে এগিয়ে থাকতে প্রতিযোগিতার নির্দেশ

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো। (সূরা বাকারা, আয়াত :
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারাবো বিএনপির সমাবেশে শত শত নেতাকর্মী নিয়ে যুবদল নেতা আফজাল কবির ও আরিফ

কোনাবাড়ীতে ছাত্রকে গুলি করে হত্যা মামলায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার

হাসিনাকে নিয়ে ইউনূসের সাক্ষাৎকার ভালোভাবে নেয়নি ভারত

রূপগঞ্জে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি নৈরাজ্য ঠেকাতে বিএনপির সমাবেশ

হোমনায় মা-ছেলেসহ তিন জনকে হত্যা করেন সুমন

নিম্ন আদালত মনিটরিংয়ের দায়িত্বে হাইকোর্টের ১৩ বিচারপতি

গোপালগঞ্জের আ.লীগ নেতা ভারতে গ্রেপ্তার

রূপালী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এখনো কাজে না ফেরা পুলিশ সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগের দাবি

দেশের প্রকৃত রিজার্ভ ২০.৫০ বিলিয়ন ডলার: গভর্নর

জবির ছাত্রী হলে ৯ ছাত্রলীগ কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

ডেঙ্গুতে আরো ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪০৩

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা ও নতুন দৃষ্টিকোণ

একাত্তরের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই: রব

গজারিয়ায় অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে নয় গ্রাম

আরএমপির দায়িত্ব নিলেন নতুন কমিশনার আবু সুফিয়ান

বিদেশে পালানোদের ফেরাতে আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠার পরামর্শ

এখনও উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ১৮৮৫টি অস্ত্র ও ৩ লাখ গোলাবারুদ

স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, শিশুকন্যাকেও ছাড়ল না বাবা!

পৃথিবীতে নির্মিত প্রথম মসজিদ নিয়ে যা বলেছেন প্রিয়নবী সা.