ই-পেপার শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩২

ড্রাইভিং লাইসেন্সিং সিস্টেম যেন এক গ্যাঁড়াকল, কৌশল বদলে চলছে আনসিন বাণিজ্য

কামরুজ্জামান মিল্টন:
৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:০১

এ প্রতিবেদনের এক অংশ প্রকাশে সাভারের সেই “আনসিন হোতা” ইন্সপেক্টর আমিনুরকে কৌশলে খোদ সাভারেই রাখা হয়েছে। কিন্তু মেট্রো-৩’র ওই “আনসিন মাস্টার”খ্যাত বেপরোয়া পিয়ন আশিক লম্ফঝম্ফ মেরে অজ্ঞাত আস্কারায় ফের সাবেক কায়দায় তৎপর হয়ে উঠেছে। আর সেই সাথে এতে হালকা নাড়া লাগায় ফেল-পাশের গ্যাঁড়াকল’র ধরন পাল্টে আনসিন ধান্ধায় মত্ত রয়েছে।

আর প্রকাশিত অংশটুকু হলো-যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অন্যতম একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান-বাংলাদেশ রোডস টান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটি)। যার আপদোমস্তকে দুর্নীতির দূর্গন্ধ নতুন কিছু নয়। তবে সময়ের ব্যবধানে,নানা কারণে ক্ষেত্র বিশেষে কিছু হেরফের ঘটলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা যেন অমোচনীয় তথা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। আর তার অন্যতম “ড্রাইভিং লাইসেন্সিং সিস্টেম”। গ্রাহক সেবা নামধারী এ সিস্টেমের ঘাটে ঘাটেই গ্রাহক নামের ওই সংখ্যা গরিষ্ঠ নিম্ন আয়ের মানুষের রক্ত চোষার ফাঁদ পাতা রয়েছে। যার কলাকুশলি পরীক্ষার বোর্ড সংশ্লিষ্টরা হলেও সুবিধাভোগী স্তরে স্তরে। ওই ফাঁদে আটকে খেটে খাওয়া ওই স্বশিক্ষিত বা কম শিক্ষিত ‘লাইসেন্স’ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়টা যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। আর এভাবেই শুধু ওই শ্রেণীটির রক্ত চুষে এক-একটি সার্কেলে দিন,সপ্তাহ, মাসান্তে চলছে-লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ভাগাভাগি। কলাকুশলিরা ওই অবৈধ লাখ লাখ থেকে কোটি টাকার পদাধিকার আনুপাতের ভাগে বিত্তবৈভবের আট-ঘাট বেধে নির্বিঘ্নে রয়েছেন-সক্রিয়। যা নতুন কোন গল্প নয়,চলে আসছে দেড় যুগের বেশী সময় ধরে।

সাম্প্রতিক সময়ের ঘোরেও হয়নি তেমন কোন পরিবর্তন। যদিও মার্কামারা এক-দুইটা রাঘববোয়াল শ্রেণীর হোতা কিছুটা তোপে পড়লেও ঘুষবাজির ওই ‘গ্যাঁড়াকল’র সব কলাকুশলিরাই হালকা নড়ে কৌশলে নিরাপদে রয়ে গেছেন। আর তাই ফের তা চলছে-হরদমে। এসব না দেখা ভয়ঙ্কর অমানবিক কাণ্ড ঘেরা খণ্ড প্রতিবেদনের এ খণ্ডে থাকছে-ঢাকা মেট্রো-৩ ও ঢাকা জেলার ‘গ্যাঁড়াকল’র ঘুষ বাণিজ্যের রকম-ফেরটা। প্রথমত, দেখা যাক-ভুক্তভোগীদের তথ্যের খানাতালাশিতে পাওয়া উত্তরা দিয়াবাড়িস্থ ঢাকা মেট্রো-৩’র ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’র প্রহসনের পরীক্ষার মাঠ ও বোর্ড মিরপুর-১২ নম্বর বাস ডিপোর বে-খবরটুকু। যেখানে সপ্তাহে অন্তত চার দিন নতুন-পুরনো দেড় হাজারের বেশী ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’র পরীক্ষার্থী থাকলেও একহাজার-বার’শ উপস্থিত থাকে। তাদের নেয়া হয়ে থাকে-চটকদার আয়োজন সর্বস্ব দায় এড়ানো বা লোক দেখানো পরীক্ষা। কাগজে কলমে,এমনকি-দৃশ্যমান তৎপরতায়ও সব ঠিকঠাক। তবে বাস্তবে যেন-সবই শুভঙ্করের ফাঁকি। নিয়মিত এক-একজন ইন্সপেক্টর (মোটরযান পরিদর্শক)’র তত্বাবধায়নে পরীক্ষা সম্পন হলেও তাতে প্রাই’শ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকেন। কিন্তু সেখানে ফলাফলের খসড়া তৈরী হলেও দিন শেষে চলে ফেল-পাশ ‘গ্যাঁড়াকল’র ওস্তাদের মার। অর্থাৎ-ওই ‘গ্যাঁড়াকল’এ আটকে চলে টাকা না দিলে পাশ করলেও ফেল, আবার টাকা দিলে ফেল করলেও পাশের খেলা। আর সেখানে এর অন্যতম হোতা আশিকুর রহমান (৩৫) নামের একজন উচ্চমান সহকারী। যদিও ওই বোর্ডের সর্বসের্বা পর্যায়ক্রমে দুজন ইন্সপেক্টর। তবে দায় এড়ানো বা লোক দেখানোর ওই পরীক্ষার শেষে চলমান-ধান্ধাবাজির যত কারসাজি বর্তায় উচ্চমান সহকারী আশিকের হাতে। ইন্সপেক্টরদের ইন্ধোনেই ওই উচ্চমান সহকারী আশিক তার আগে সাজানো গ্যাটিজ (বহিরাগত সহযোগী) ও দালাল সিণ্ডিকেটের নির্দেশনায় ঘুষের নিশ্চয়তা পেয়ে বেশীরভাগ তাদেরই পরীক্ষার্থীর ডাটা চুড়ান্ত করে থাকেন। এরপর চলে-তা সার্ভারে (চুড়ান্ত পাশ-ফেল প্রদর্শিত অনলাইন) ঢুকিয়ে পাশ নিশ্চিত করণ। যেখানে ‘পাশ’ ৮০ ভাগই ঘুষ নির্ভর। সোজা কথায়-ওই আশিকের পোষা দালাল সিণ্ডিকেটের নিশ্চিত প্রার্থী দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষে ফেল হয়ে যায়-পাশ,সাধারন পাশ করা পরীক্ষার্থী হয়ে যায়-ফেল। যার প্রমান বিগত বোর্ডের একাধিক পরীক্ষার্থী। আর আনসিন তো রয়েছেই, মানে-পরীক্ষায় উপস্থিত হতে নারাজ ও স্বচ্ছল শ্রেণীর বেলায় চলে অটো ‘পাশ’। বিনিময়ে নেয়া হয়, তিন-পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। এভাবে নিরবে নিয়মিত তিন-চার’শ, ১২-১৫’শ,পাঁচ-ছয় হাজার পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নানা কৌশলে হাতানো হয়-ঘুষের এক কোটি টাকার বেশী। মোট এ মোটা টাকা পদাধিকারের ভিত্তিতে উপর থেকে নীচ পর্যন্ত -দিন,সপ্তাহ ও মাসান্তে চলে ভাগাভাগি। যার সিংহভাগ খেটে খাওয়া দরিদ্র্য মানুষের। আর এর মূল কর্তৃত্বে রয়েছেন- একজন এডি (সহকারী পরিচালক) দুজন ইন্সপেক্টর (মোটরযান পরিদর্শক)।

এ ‘গ্যাঁড়াকল’র ঘুষবাজির রকমফেরটা বুঝতে ওই ঘুষবাজির তুলনামূলক গরম বাজার ঢাকা মেট্রো-৩’র মিরপুর-১২ বাসডিপোর সাথে ঢাকা জেলার ইকুরিয়াস্থ পরীক্ষার বোর্ডে চলে একটানা দিন দশেকের মত নানা ছলে ঘুরাঘুরি, খোঁজ-খবর নেয়া। আর সেই দেখাই ঢাকা জেলার ইকুরিয়াস্থ পরীক্ষার বোর্ডের ‘গ্যাঁড়াকল’টা। সেখানেও দেখা মেলে যথারীতি একই কায়দার ‘ফেল-পাশ’ বাণিজ্য। তবে তা আরো বড় পরিসরে। তার মানে-‘গ্যাঁড়াকল’টা অন্য সব সার্কেল থেকে বড়। কারণ-জেলার সাথেই রয়েছে-সাভারের বোর্ড। সেখানে (কেরানিগঞ্জ-ইকুরিয়া) সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ দিন ও মাসে ২০দিন বসে ওই লোক দেখানো পরীক্ষার বোর্ড। আর সে হারে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তো ঢের বেশী বটেই। তাই সেখানে ওই ‘আনসিন’ বাণিজ্যটাও বেশী রমরমা। একটি দাপটশালী দালাল সিণ্ডিকেটের হোতা আমিনুর রহমান নামের সাভারের জনৈক ইন্সপেক্টর। তাছাড়া এখানেও একইভাবে তদবির বা ঘুষের বাইরের নিয়মিত লাইসেন্স প্রত্যাশীরা পরীক্ষা দিয়ে ওই ‘গ্যাঁড়াকল’র সিস্টেমের জালে আটকে ‘ফেলে’র তালিকাভুক্তির কালক্ষেপনে পড়ছেন।

অন্যদিকে-অসংখ্য পরীক্ষার্থী হাজির না হয়েও পাশের তালিকায় ঢুকছে। কারণ-তাতে ঘুষটাও বেশী। আর সার্ভার (ফলাফলের চুড়ান্ত তালিকা প্রদর্শিত অনলাইন) তো তাদের হাতেই। অন্যদিকে ফেল ওয়ালার ভাগ্যে নির্ধারিত দালাল বা ঘুষে পার হওয়া সম্ভব না হওয়ায় জোটে লম্বা ডেট (সময়)। এখানেও একই ভাবে নিয়মিত দিন শেষে গড়ে ৫০০জন, সপ্তাহে দুই-আড়াই হাজার ও মাসে সাড়ে সাত থেকে আট হাজার পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে দেড় কোটি টাকার বেশী ঘুষ হিসেবে আদায় করা হচ্ছে। যা একইভাবে চলছে-দিন,সপ্তাহ ও মাসান্তে লাখ লাখ থেকে কোটি টাকা ভাগাভাগি। আর এতে ‘গ্যাঁড়াকল’র কলাকুশলিরা তো সবাই বিলাষী জীবনের আটঘাট বেধে নিয়েছেন। সেই সাথে ভাগ পাচ্ছেন-একই নিয়মে পদের দাপট অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনের নীচ থেকে উপর পর্যন্ত সকলেই। তাতেই এ অবৈধ ঘুষবাজিটা বৈধ রুপেই অনেকটা নির্বিঘ্নে এখানেও বরাবরই রয়েছে-বহাল। আর এ গুরুদায়িত্বে ঘুরেফিরে বছরের পর বছর ধরে নিযুক্ত রয়েছেন-জেলায় আবুল হাসান ও সাভারের ওই আমিনুর রহমানসহ দু’জন ইন্সপেক্টর (মোটরযান পরিদর্শক),তাদের সহযোগী একাধিক উচ্চমান সহকারি,অফিস সহকারি,(গ্যাটিজ) বহিরাগত সহযোগী নামের ক্যাশিয়ার ও অসংখ্য দালাল। সেখানে এসবের তদারকিতে রয়েছেন-জনৈক ওস্তাদ ইন্সপেক্টর মানে-ওই ‘গ্যাঁড়াকল’র পুরনো ও দক্ষ চালকসহ একজন এডি (সহকারি পরিচালক) ও একজন ডিডি (উপ-পরিচালক)। তবে ভুক্তভোগীর অভিযোগে বিষয়টি জানার জন্য ঢাকা মেট্রো-৩’র সাবিকুন নাহার নামের জনৈক ইন্সপেক্টরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তিনি ফোন ধরেননি।

আর এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বিআরটিএ’র সার্কেল দেখভালকারী বলে পরিচিত বিভাগীয় পরিচালক ও সাবেক শুদ্ধাচারের মহাগুরু মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সার্কেলের পরীক্ষার বোর্ডে ফেল-পাস বাণিজ্য মানে-ওই ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে তিনে কিছুই জানেন না। জানান-পরীক্ষার বোর্ডের কমিটি এসব বলতে পারবে।

আমার বার্তা/এমই

বিদেশে অর্থপাচারে ফেঁসে যাচ্ছেন আলোচিত ব্যবসায়ী কুতুবউদ্দিন

ছিলেন সামান্য একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। এরপর হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। গত ১৫ বছরে রকেট

এসএসএফ ডিজিকে কেন ‘টার্গেট’ করা হলো?

রাজধানীর বসুন্ধরার কে ব্লকের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক

কেরানীগঞ্জে সমবায়’র জবরদখল নেপথ্যে স্থানীয় প্রশাসনসহ নয়াহোতা

দখলদার সন্ত্রাসী হোতারা নয়া তকমায় সক্রিয় স্থানীয় প্রশাসনে এখনো বরাবরের নমুনা স্থানীয় প্রশাসন ও কতিপয় দুষ্কৃতকারীর আস্কারায়

সিভিল অ্যাভিয়েশনের প্লাম্বার কাজল এখন কোটিপতি

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এর সদর দপ্তর (বেবিচক) এর প্লাম্বার কাজল দুর্নীতি ও অনিয়ম
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ছাত্ররা দল গঠন করবে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে ড. ইউনূস

ড্রাইভিং লাইসেন্সিং সিস্টেম যেন এক গ্যাঁড়াকল, কৌশল বদলে চলছে আনসিন বাণিজ্য

পদত্যাগের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি: নাহিদ ইসলাম

ভারত যে বাঁধ দিচ্ছে সেটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন: তারেক

কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বে গণ অবসরের হুমকি নারী ফুটবলারদের

শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি, শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি

বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জাপানের

স্বৈরাচাররা দেশকে ধ্বংস করে ফেলেছে: তারেক রহমান

ইজতেমা চলাকালে ৫ আন্তঃনগর ছাড়া সব ট্রেন থামবে টঙ্গী স্টেশনে

‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ হতে পারে ৭ কলেজের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম

জায়গা থাকলে ১০০ তলা পর্যন্ত ভবন করা যাবে: রাজউক চেয়ারম্যান

সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানো সেই যুবক গুলিতে নিহত

খাদ্যে ভেজাল : বর্তমান অবস্থা ও আমাদের করণীয়

রংপুরকে হারিয়ে প্লে অফের সমীকরণ জমিয়ে তুললো খুলনা

আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: শফিকুর রহমান

ফ্যাসিবাদের দোসররা ষড়যন্ত্র করলে কঠোর হবে সরকার: নাহিদ

এস আলম পরিবারের ৩৬৮ কোটি টাকার জমি জব্দের আদেশ

গুম কমিশনের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালালেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী: রিজভী

সাড়ে চার মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২৩ জন হত্যার শিকার