দুজন জিতেছেন বিশ্বকাপ। আরেকজন অনেকের মতো তার দেশের সর্বকালের সেরা ওপেনার এবং অধিনায়ক। একইদিনে ক্রিকেটের তিন কিংবদন্তি কথা বললেন বিশ্বক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিকে নিয়ে। যেখানে সমালোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। নতুন দিনের দ্বি-স্তরী টেস্ট কাঠামো নিয়ে রীতিমত অসন্তোষ ঝরেছে তিনজনের কণ্ঠেই।
কথা হচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাইকেল হোল্ডিং, শ্রীলঙ্কার অর্জুনা রানাতুঙ্গা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথকে নিয়ে। টেস্ট ক্রিকেটের সম্ভাব্য নতুন নিয়মে রানাতুঙ্গা এবং স্মিথের দেশ থাকছে প্রথম স্তরে। আর ১৯৭৯ এর বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি হোল্ডিংয়ের ওয়েস্ট ইন্ডিজ থাকছে দ্বিতীয় স্তরে। নতুন নিয়মে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থাতেই আছে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে, এরপরেও দ্বি-স্তরের ক্রিকেট মেনে নিতে নারাজ এই দুজন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক স্মিথ সরাসরিই বলেছেন, তিন মোড়ল দেশ (ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড) টেস্ট ক্রিকেটকে দুই স্তরে ভাগ করার প্রস্তাব করেছে মূলত নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি সিরিজ খেলতেই।
স্কাই স্পোর্টস ক্রিকেট পডকাস্টে স্মিথ এ নিয়ে বলেন, ‘পরের চক্রে ইংল্যান্ড, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া কতবার মুখোমুখি হবে, তা নিয়ে আজ সকালে আমি একটা নোট দেখলাম (প্রতি ৩ বছরে ২টি সিরিজ)। অন্য দেশগুলোর জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে। বাণিজ্যিক কারণেই তো সবাই ভারতের সঙ্গে খেলতে চায়।’
পুরো প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন এই প্রোটিয়া তারকা, ‘আপনি আর কোথায় এমনটা দেখবেন যে শীর্ষ তিন দল শুধু পরস্পরের বিপক্ষে খেলছে? ক্রিকেট–বিশ্বের দরকার হলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে শক্তিশালী করা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শক্তিশালী করা, শ্রীলঙ্কাকে শক্তিশালী করা।’
রানাতুঙ্গা অবশ্য সরাসরি আঙুল কথা বলেছেন আর্থিক দিক নিয়ে, ‘এমন কিছু হলে ওই তিন বোর্ডের কোষাগার ফুলেফেঁপে উঠবে ঠিকই, কিন্তু খেলাধুলা তো শুধু পাউন্ড, ডলার আর রুপির বিষয় নয়। প্রশাসকদের দরকার খেলাটিকে পরিচর্যা করে বাঁচিয়ে রাখা, শুধু নিজেদের থলে ভরা নয়।’
মাইকেল হোল্ডিং পেস বোলিংয়ের পর ঝড় তুলেছেন ধারাভাষ্যেও। ক্রিকেটের সঙ্গী প্রায় পুরো জীবন পার করে আসা হোল্ডিং আইসিসিকে বললেন ফিফার মতো হতে। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত দ্য টেলিগ্রাফের কলামে লিখেছেন, ‘অনেক ভুলত্রুটির পরও ফিফা অন্তত ফুটবল চালায়। আইসিসিকেও অবশ্যই ক্রিকেট চালাতে হবে।’
উইন্ডিজ এই কিংবদন্তি বিশ্বাস করেন এমন সিদ্ধান্ত মূলত আইসিসির দুর্বলতা, যখন ইংল্যান্ড, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মধ্যে সফর করবে, তারা (বিপুল) অর্থ উপার্জন করবে। অথচ কোন দল কখন কোন দেশ সফর করবে, তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ঠিক করার কথা। কিন্তু তাদেরকে (আইসিসি) এতটাই দুর্বল মনে হচ্ছে যে তা করতে পারছে না। তাদের কিছুটা শক্ত হতে হবে।
আমার বার্তা/জেএইচ