
শেষ পর্যন্ত অপরাজিতই থাকলেন ব্রাইডন কার্স। না, কোনো মাইলফলক গড়েননি। তবে যেভাবে দৃঢ়চেতা মনোভাবে ব্যাটিং করছিলেন, ইংলিশ সমর্থকদের মনে ভিন্ন কিছু উঁকি দিলেও দিতে পারে। তবে জেমি স্মিথ ও উইল জ্যাকসের বিদায়ের পরই হার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের রেকর্ড গড়ে জেতা হলো না। ৮২ রানে জিতে প্যাট কামিন্সের দল দুই ম্যাচ হাতে রেখেই অ্যাশেজ বাগিয়ে নিয়েছে।
অ্যাডিলেডে সর্বশেষ ১২৩ বছর আগে ৩০০ বা এর বেশি রান তাড়া করে টেস্টে জয়ের নজির দেখা গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার সেই রেকর্ড ভাঙার সুযোগ ছিল এই সিরিজে আগের পাঁচ ইনিংসে একবারও তিনশ পেরোতে না পারা ইংল্যান্ডের সামনে। যদিও তাদের সামনে লক্ষ্যটা ৪৩৬ রানের, যা প্রায় অসম্ভবই। ৬ উইকেটে ২০৭ রান তুলে চতুর্থ দিন শেষ করায় ইংলিশদের স্বপ্নটা আরও ফিকে হয়ে ওঠে। তবে স্মিথ-জ্যাকস-কার্স আশা দেখিয়েছেন বটে। কিন্তু অজি বোলারদের সামনে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়েছে ৩৫২ রানে।
পার্থ ও ব্রিসবেনে প্রথম দুই টেস্টে দাপুটে জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথমটি দু’দিন এবং অপরটিতে ফল এসেছে চার দিনে। চলমান অ্যাশেজে এই প্রথম পাঁচ দিনে গড়াল ম্যাচ। সিরিজ বাঁচাতে অ্যাডিলেড টেস্টে নিজেদের বাজবল ঘরানার ক্রিকেট থেকে দূরে রেখেছিল বেন স্টোকসের দল। দুই ইনিংস মিলিয়ে তারা খেলেছে ১৯০.১ ওভার। যা বাজবল যুগ শুরুর পর থেকে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ। ভারতের বিপক্ষে চলতি বছর ১৮২.৪ ওভার ছিল এর আগের সর্বোচ্চ। এমনকি ২০২২ সালে ম্যাককালাম-স্টোকস জুটি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই প্রথম টেস্ট ব্যাটিংয়ে ৩০–এর বেশি (৩৯) ওভার মেডেন দিয়েছে ইংল্যান্ড। এসব সত্ত্বেও সফরকারীরা হার এড়াতে পারল না।
ঘরের মাঠে হওয়া সর্বশেষ তিন অ্যাশেজ সিরিজে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করেছে অস্ট্রেলিয়া। বোঝাই কতটা দাপুটে যুগ পার করছে তারা। চলমান ২০২৫-২৬ অ্যাশেজে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিতের পর কামিন্স-স্টার্ক-স্মিথরা যেন সেই পথেই হাঁটছেন। এর আগে ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৫-০, ২০১৭-১৮ সালে ৪-০ এবং ২০২১-২২ সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে ঘরের মাঠে ইংলিশদের হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
অ্যাডিলেড টেস্টে অজিরা জয়ের পথ প্রশস্ত করে প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৮৫ রানের লিড নিয়ে। তারা ৩৭১ রান করার পর ইংলিশদের প্রথম ইনিংস থামে ২৮৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৩৪৯ রান। ফলে আগের লিড মিলিয়ে তারা পেয়ে যায় জয়ের পুঁজি (৪৩৫)। যেখানে ট্রাভিস হেড সর্বোচ্চ ১৭০, অ্যালেক্স ক্যারি ৭২ ও উসমান খাজা ৪০ রান করেন। ইংলিশ পেসার জশ টাং ৪ ও ব্রাইডন কার্স নেন ৩ উইকেট। বড় লক্ষ্য তাড়ায় যেমন শুরু দরকার ছিল তা এনে দিতে পারেননি সফরকারী ওপেনার বেন ডাকেট (৪)।
জ্যাক ক্রাউলির সঙ্গে জো রুট ও হ্যারি ব্রুকের জুটি আশা দেখালেও তা যথেষ্ট ছিল না। রুট ৩৯ এবং ব্রুক ফেরেন ৩০ রানে। মাঝে ওলি পোপ ১৭ এবং স্টোকস মাত্র ৫ রানে আউট হয়েছেন। চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে ১৫১ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৮৫ রানে ফেরেন ক্রাউলি। পঞ্চম দিনে অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে ইংলিশদের জয়ের সমীকরণই মেলাচ্ছিল অনেকে। এদিন জেমি স্মিথ ও জ্যাকস মিল গড়েন ৯১ রানের জুটি। স্মিথ ৮৩ বলে ৬০ রানে ফিরলে সেই জুটি ভাঙে।
জ্যাকস ১৩৭ বলে করেছেন ৪৭ রান। তার সঙ্গে টেলএন্ডার ব্রাইডন কার্স গড়েন ৫৩ রানের জুটি। কার্স শেষ পর্যন্ত ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে অপরপ্রান্তে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়ন।
আমার বার্তা/জেএইচ

