
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউসিয়া ইউনিয়ন ১৪ কাউনিয়া গ্রামে সমবয়সী টিকটক করা তিন বন্ধুর সহায়তায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ একাধিক মামলার আসামি গং চক্র কুপিয়ে হাত পা কেটে যুবক জয় (২৫)কে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
বুধবার ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৮ ঘটিকার সময় ১৪ কাউনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত বাগানের নিচে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, এক বৎসর আগে থেকে একই গ্রামের রাব্বি গং পরিবারের সাথে নিহত যুবক জয় পরিবারের একাধিক মারামারি ও মামলায় দুই পক্ষের বিরোধ চলছে। ১৪ মাস আগে জয়ের বাবা আহত পঙ্গু জামাল মিয়া কে প্রতিপক্ষ রাব্বিগং চক্র হামলা করে কুপিয়ে জখমসহ চাচা মুক্তার এর কব্জি কেটেছে।
ওই ঘটনার পর থেকে একাধিক সন্ত্রাসীদের যোগসাজশে নিহত জয়কে ৬ বার হত্যা চেষ্টা করেছে প্রতিপক্ষ।
নিহত যুবক জয়ের চাচা হিরু জানান, দুইদিন পূর্বে মঙ্গলবার বিকালে ভাতিজা জয় আমাকে বলেছে— ফেসবুকে প্রতিপক্ষ শত্রুরা জয় কে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। একই গ্রামের তিনজনকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে সহায়তা করার চুক্তি করেছে। ‘আমি এখন বাড়িতে থাকব না।’
বুধবার সন্ধ্যা ৭ ঘটিকার সময় আমাদের গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার, আলী হোসেনের ছেলে স্বাধীন ও ইমান আলীর ছেলে পান্নু সহ চারজন আমাদের বাড়ির পাশে বসে গল্প করছে। তারা একই সমবয়সী এবং ফেসবুকে টিকটক করে। টিকটক করার তিন বন্ধুই ভাতিজা জয় কে হত্যাকারীদের হাতে তুলে দিয়েছে।
ঘটনার পর থেকে একসাথে বসে থাকা তিন বন্ধু দেলোয়ার, স্বাধীন ও পান্নুর বাড়িতে কেউ নেই। আমাদের প্রতিপক্ষ রাব্বি গং চক্র ২০ থেকে ৩০ জন সন্ত্রাসীর যোগসাজশে ভাতিজা জয় কে প্রথমে কুপিয়ে হাত পা কেটে পরে গুলি করে হত্যা করেছে।
নিহত জয়ের বড় বোন জুলিয়া জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৯ মিনিটে মোবাইলে ভাই জয়ের সাথে কথা হয়। জয় আমাকে জানায় আমি বাড়িতে আছি। ৮:২১ মিনিটে পুনরায় মোবাইল করলে কথা বলার সময় জয় জানায় স্বাধীন, দেলোয়ার ও পান্নু— তিন বন্ধু সহ স্কুলের সাথে বসে আছে। মোবাইলে তাদের তিনজনের কথা আমি শুনতে পাই।
কথা বলাকালীন সময়েই হঠাৎ জয় চিৎকার দিয়ে উঠে কান্না শুরু করে— কুপের আওয়াজ আমি শুনতে পাই। তখন বুঝেছি আমার ভাই জয় কে কুপিয়েছে তারা।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, নিহত জয়ের একটাই অপরাধ ছিল তার বাবার মামলার বাদী হওয়া। ১৪ মাস আগে প্রতিপক্ষ রাব্বি গং চক্রের সদস্য বেকু হাসানসহ সন্ত্রাসী দলটি জয়ের বাবা জামাল মিয়াকে কুপিয়ে পঙ্গু করেছে, চাচা মুক্তার হোসেনকে হাতের কব্জি কেটে দিয়েছে। জয়কে হত্যা করার ৬ বার চেষ্টা করেছে।
বুধবার ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৮:০০ ঘটিকার সময় পরিকল্পিতভাবে গ্রামের তিন যুবকের সহায়তায় হত্যা করেছে জয়কে।
গজারিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলম আজাদ জানান, ১৪ কাউনিয়া হত্যা ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আমার বার্তা/জেএইচ

