
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা নিমতলা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় ১৪ নাগরিককে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার রাতে জেলার দর্শনা বাসস্ট্যান্ডে তাদের অবস্থানের খবরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নদীয়া জেলার গেদে সীমান্তের কাঁটাতারের গেট খুলে তাদেরকে জোরপূর্বক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভারতীয় ১৪ নাগরিককে বাংলাদেশ ঠেলে পাঠায়। এসব ভারতীয় নাগরিকরা সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ের খোঁজে ঘোরাফেরা করেন। কিন্তু কোথাও আশ্রয় পাননি। উপায় না পেয়ে তারা দর্শনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে আশ্রয় নেন। সেখানে তারা অস্থায়ীভাবে একটি তাবু টাঙিয়ে রাত কাটান।
বিএসএফের ঠেলে পাঠানো ১৪ জন একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ২ জন শিশু রয়েছে।
ভারতীয় এসব নাগরিকরা সাংবাদিকদের জানান, তারা মুসলিম এবং ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের নাগরিক। উড়িষ্যায় তাদের নিজস্ব বাড়িঘর রয়েছে। তবে ভারতীয় পুলিশ তাদেরকে ‘বাংলাদেশি’ বলে দাবির পর আটক করে জেলে পাঠায়। এ সময় তাদের আধার কার্ড ও রেশন কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়। পরে তারা উড়িষ্যার একটি কারাগারে ১ মাস ৫ দিন বন্দি ছিলেন। সেখান থেকে দুই দিন আগে তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তীতে নদীয়া জেলার গেদে সীমান্ত দিয়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। শুক্রবার রাতে জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা বাসস্ট্যান্ডে তাদের অবস্থানের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে ওই ১৪ জনকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদেরকে আবারও দর্শনায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে তারা দর্শনা পৌর শহরে অবস্থান করছেন।
দর্শনা থানার (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, পুশইন হওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই অসুস্থ। রাতেই তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো উবাইদুর রহমান সাহেল বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি। বর্তমানে ওই ১৪ জন বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
আমার বার্তা/এমই

