রাজধানীর তুরাগ এলাকায় রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ার হোসেন সিকদারকে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দিয়ে গুম করার চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৬ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মুহিদুল ইসলাম।
এছাড়া এই হত্যায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সবুজ ফকির (২৮), কালাম (২২) এবং মো. শাকিল (১৮)।
রোববার (২৫ মে) আশুলিয়া ও দিয়াবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে তুরাগ থানা পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, গত ১৭ জানুয়ারি সকালে আনোয়ার হোসেন সিকদার বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরদিন ১৮ জানুয়ারি তার স্ত্রী শিউলি আক্তার তুরাগ থানায় একটি নিখোঁজ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি তদন্তে উঠে আসে, রাইদা বাসের ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ারকে হত্যা করা হয়।
তিনি জানান, এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে প্রথমে আশুলিয়া থেকে কালাম ও শাকিল এবং দিয়াবাড়ি থেকে সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ দিয়াবাড়ী মেট্রো গোলচত্বরের ডেসকো অফিসের পূর্ব পাশে রাইদা ডিপোর ভিতরের উত্তর পাশের টিনের বেড়া সংলগ্ন মাটির নিচ থেকে আনোয়ারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। ভিকটিমের পরিবারবর্গ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আনোয়ারের মৃতদেহ শনাক্ত করে। পরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ কর্মকর্তা মুহিদুল ইসলাম জানান, তারা সবাই রাইদা বাসের চালক। গত ১৭ জানুয়ারি সকালে রাইদা বাস ক্রয়-বিক্রয়ের লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তারা ও তাদের কয়েকজন সহযোগী মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ার হোসেন সিকদারকে রাইদা বাস ডিপোর ভিতরে হত্যা করে। তারা প্রথমে ভিকটিমের মাথায় লোহার পাইপ দ্বারা আঘাত করে এবং পরে গলায় ধারালো ছুরি দ্বারা আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর তারা লাশ গুম ও প্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশে নিহত আনোয়ারের মৃতদেহ বাস ডিপোর উত্তর পাশে টিনের বেড়ার কাছে মাটির নিচে পুঁতে রাখে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ভিকটিম আনোয়ারের স্ত্রী শিউলি আক্তার বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতরাসহ আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তুরাগ থানা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আমার বার্তা/এমই