অস্ট্রেলিয়ার নারী মুসলিম সিনেটর ফাতিমা পেইম্যান জানিয়েছেন, এক পুরুষ সহকর্মীর বিরুদ্ধে অশোভন মন্তব্য ও প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ এনে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন।
মূলত ওই সহকর্মী তাকে মদ্যপান করার এবং টেবিলের ওপর নাচার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এমনকি অভিযুক্ত ওই সহকর্মী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন ফাতিমা পেইম্যান।
বুধবার (২৮ মে) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির নারী মুসলিম সিনেটর ফাতিমা পেইম্যান বলেন, ওই সহকর্মী ‘অনেক বেশি মদ্যপান’ করার পর তাকে মদ খেতে এবং টেবিলের ওপর নাচতে বলেন।
পেইম্যান আরও বলেন, “ওই ব্যক্তি আমাকে বলেন, ‘চলো তোমাকে একটু ওয়াইন খাওয়াই, তারপর দেখি তুমি টেবিলের ওপর নাচো।’ আমি তখন বলি—‘এখানেই সীমা টানছি, মেট।’ এরপর আমি বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করি।”
মাত্র ৩০ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় এই সিনেটর জানান, তিনি একজন মুসলিম হওয়ায় মদ পান করেন না এবং ওই প্রস্তাব তার ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অসম্মানজনক। তবে ঘটনাটি কখন ঘটেছে বা অভিযুক্ত সহকর্মীর পরিচয় কী, তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
আফগানিস্তানে জন্ম নেওয়া ফাতিমা পেইম্যান অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে হিজাব পরা প্রথম সিনেটর। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তার এই পরিচয় তাকে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সহকারী ব্রিটানি হিগিন্স দাবি করেন, তাকে পার্লামেন্ট ভবনের একটি অফিসে এক সহকর্মী ধর্ষণ করেছিলেন। এই অভিযোগের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে মদ্যপান, বুলিং ও যৌন হয়রানি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলে তদন্তে উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে ফাতিমা পেইম্যান ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি থেকে বেরিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ শুরু করেন। কারণ তার মতে, দলটি গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি যথাযথ সহানুভূতি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে ফাতিমা পেইম্যানের এই অভিযোগ নতুন করে অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নারী, সংখ্যালঘু ও ধর্মীয় প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়েও প্রশ্ন সামনে এনেছে।
আমার বার্তা/জেএইচ