জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত। তবে এর জন্য তেল আবিবকে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে হবে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো গতকাল বুধবার এই ঘোষণা দেন।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেছেন, ‘দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাই একমাত্র পথ। এটি সত্যিকারের শান্তি প্রতিষ্ঠার উপায়। আমাদের ইসরায়েলের অধিকারকে স্বীকার করতে হবে। ইসরায়েল একটি সার্বভৌম দেশ। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ইন্দোনেশিয়া স্পষ্ট করেছে, ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়, তবে ইন্দোনেশিয়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে।’
ইন্দোনেশিয়া সফররত ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পাশে দাঁড়িয়ে প্রাবোও বলেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ফ্রান্সও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বাধীনতার পক্ষে পদক্ষেপ সমর্থন করে চলবে। ইন্দোনেশিয়ার বর্তমানে ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ইসরায়েলকে তারা স্বীকৃতিও দেয়নি।
এর আগে, ইউরোপের দেশ মাল্টা আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী রবার্ট আবেলার এই ঘোষণা ৪৫ বছরের পুরোনো এক জাতীয় বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছে। তিনি গাজায় চলমান ‘মানবিক ট্র্যাজেডির’ কথা উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্তকে নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তবে, এই স্বীকৃতি আগামী ২০ জুন এক সম্মেলনের পর কার্যকর হবে।
আবেলা গত রোববার এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠান তিনি গাজার মানবিক সংকট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই মানবিক ট্র্যাজেডি প্রতিদিনই খারাপ হচ্ছে, আমরা এর প্রতি চোখ বন্ধ করে রাখতে পারি না।’
তার আগে, গত ১০ এপ্রিল ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও ফিলিস্তিনকে তাঁর দেশ স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেবে বলে জানান। আগামী জুনেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বীকৃতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমরা আগামী মাসগুলোতেই তা করব।’ তিনি উল্লেখ করেন, ফ্রান্স ও সৌদি আরবের আয়োজনে এক সম্মেলনে এই পরিকল্পিত স্বীকৃতি চূড়ান্ত করা হতে পারে, যার লক্ষ্য ফিলিস্তিনি সমস্যার সমাধান করা।
গত বছরের মে মাসে স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে পৃথক বিবৃতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। স্পেন সরকারের এক মুখপাত্র ঘোষণা করেন, স্পেন আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশটির মন্ত্রিসভা আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ের অনুরূপ পদক্ষেপের সমান্তরালে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে।
এর আগে, ২০১৪ সালে সুইডেন প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। এ ছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার আগে আরও ছয়টি ইউরোপীয় দেশ এই পদক্ষেপ নিয়েছিল—বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও রোমানিয়া।
আমার বার্তা/এমই