নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংস্কার সম্ভব না হলে আর কখনোই হবে না। সংবিধানের দোহাই দিয়ে এটা করতে না পারলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন বিষয়ক জাতীয় সংলাপের ‘সংস্কারের দায় ও নির্বাচনের পথরেখা’ শীর্ষক সংলাপ অধিবেশন–৪ এ বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, আমরা ২০০৭ সালে একবার চেষ্টা করেছিলাম, কিছু কিছু করেছিলাম সেগুলো থাকেনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর কারণে। এখন না করতে পারি, সংবিধানের দোহাই দেয়, অন্যান্য আইনের দোহাই দেওয়া হয়। তাহলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছেন তাদের প্রতি অন্যায় হবে। বলছি না যে আমরা চার-পাঁচ বছর থাকব। একবছরের মধ্যে সংস্কার করা সম্ভব।
তরুণদের রাজনৈতিক দল গঠনে উৎসাহিত করা উচিত বলে জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাদের অনুৎসাহ করা ঠিক নয়৷ আমরা মনে করি নতুন রক্ত প্রয়োজন। তাদের নিরুৎসাহিত করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ তাদের উৎসাহিত করুন। তারা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। তাদের কে যদি উৎসাহিত না করেন তাহলে আমরা এ জিনিসই (আওয়ামী লীগের পতন) দেখবো। আজকেে না হয় ১০, ১৫ বছর পরে দেখবো।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। নির্বাচন আইন পরিবর্তন করলে হবে না, রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও পদ্ধতির পরিবর্তন করলেই নির্বাচনী আইনও পরিবর্তন হয়ে যাবে। এবারের নির্বাচনের আগে বলেছিলাম যে নির্বাচনে যাবে তার আম-চ্যালা দুটোই যাবে। সেটাই হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তিনি বলেন, আমরা দেশের স্থিতিশীলতা চাই৷ আমরা কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। আপনারা (ভবিষ্যত ক্ষমতা) তারাও বড় চ্যালেঞ্জে পড়বেন।
সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, খুব সামনে আমাদের জন্য বড় অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এটা শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে দেশের বাহির থেকে। আমাদের নতুন প্রতিবেশী তৈরি হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক নয়, ভিন্নধর্মী প্রতিবেশী। আরাকান এখন নতুন বাস্তবতা। আমরা এতদিন বিবেচনা করতে পারিনি। এখন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষ সংসদ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই জায়গায় বিভিন্ন রকমের মানুষ আসবে। তারা একটা নির্বাচনের জন্য গাইডলাইন তৈরি করতে পারে। সেখানে আলাদা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে না।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল পরিচলনার জন্য আইন থাকা প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান সাহেব করেছিলেন কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো মানেননি। একটা আইন অবশ্যই প্রয়োজন। না হলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর যে করণীয় তা দেখছি না।আমরা দেখছি রাজনৈতিক দল তৈরি হয়, কোন্দল তৈরি হয় এবং একদল আরেকদলকে খেয়ে পেলে।
আমার বার্তা/এমই