
গণভোট কবে হবে, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুতই সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। গণভোট নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যে একথা বললেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গণভোট কবে হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমরা থাকব। আমরা সহায়তা করার জন্য থাকব। সিদ্ধান্ত এটা কোনো পার্টিকুলার কেউ নেবেন না, এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন। এই সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টা নেবেন।…দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায়–সংক্রান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে। তাতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোট করার কথা বলা হয়েছে সেখানে।
তবে জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে এবং তার আলোকে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। অপরদিকে বিএনপি বলছে, নির্বাচনের দিনই গণভোট করতে হবে। এর বাইরে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, যে জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছিল, তার বাইরে অনেক বিষয় এখানে যুক্ত করা হয়েছে।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়ে দলগুলোর এই পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয় কথা বলেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘২৭০ দিন আলাপ–আলোচনা করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের মধ্যে যে অনৈক্যের সুর দেখা যাচ্ছে, তা হতাশাব্যঞ্জক। এই তীব্র বিরোধের মধ্যে সমঝোতা দলিল পাশ করা সরকারের সামনে একটা চ্যালেঞ্জ এনে দিয়েছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, দলগুলোকে এতো আলোচনার সময় দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা যেই অনৈক্য দেখাচ্ছে তাতে জুলাইয়ের স্পিরিটকে (চেতনা) তারা কোথায় নিয়ে গেছে, এটা তাদের বিবেচনা করা উচিত। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি এককভাবে তাদের অবস্থান নেওয়ার জন্য সরকারকে জোর করে, তার মানে হচ্ছে তাদের মধ্যে ঐকমত্য নাই। তারা চাচ্ছে, সরকার যেন তাদের দলীয় অবস্থান নেয়।
জুলাই সনদ নিয়ে অনৈক্যের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘যে যেটা বলুক, আমরা ফেব্রুয়ারি প্রথমার্থে জাতীয় নির্বাচন করব।…ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আসিফ নজরুল আরও বলেন, নির্বাচিত সংসদের সংস্কার করার কোনো দায়–দায়িত্ব থাকবে না, সব অন্তর্বর্তী সরকারকে করে যেতে হবে এতো কোনো বেদবাক্য নয়। সরকার যতটুকু পারে করবে। সম্ভব হলে সবই করবে। তবে তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য লাগবে।
আমার বার্তা/এমই

