যে কোনো দেশের ইতিহাসে এমন এক সময় আসে যখনকার ঘটনাবলী অন্যান্য ঘটনাকে ম্লান করে দেয়। এমন ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটে যিনি জাতির চলার পথে গতি সঞ্চার করেন, নতুন দিক-নির্দেশনা দেন, উদ্বুদ্ধ করেন আত্ম-অনুসন্ধানে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তেমনই এক ব্যক্তিত্ব। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী জিয়াউর রহমান বগুড়ার গাবতলী থানার বাগবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি।জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রের প্রাণপুরুষ। আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি।তার ছিল সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি।তিনি ছিলেন ভিশনারি, এক স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনিই জাতিকে একটি সত্যিকার গণতন্ত্রের শক্তভিত্তির ওপরে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। আনতে চেয়েছিলেন অর্থনৈতিক মুক্তি।দিতে চেয়েছিলেন জাতিকে সম্মান আর গৌরব। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ক।নানা কারণে তিনি দেশের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণাবলী এ দেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কাছে তার যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের ভাগ্যে তা জোটেনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকলাপ সামাজিক বিজ্ঞানে রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়া বলে অভিহিত।বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রত্যাশিত রাষ্ট্র বা জাতি গঠনে জনপ্রিয় দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পাদভূমিতে দাঁড়িয়ে সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পুনঃ অনুরণন অনুভূত হচ্ছে বিপ্লব-পরবর্তী বাংলাদেশে। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর প্রায় ৫০ বছর ধরে সরকার ও বিরোধী দল উভয় ক্ষেত্রে বিএনপি তার উদ্দিষ্ট সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই রাজনৈতিক দলের পাঁচটি করণীয় নির্ধারণ করেছে। যেমন: সমাবেশের স্বাধীনতার অগ্রায়ণ, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উন্নয়ন,নাগরিক সাধারণকে সরকারি ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিতকরণ, ব্যক্তিস্বাধীনতা বিকাশ এবং ক্ষমতাসীন দলের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বিএনপি গণতান্ত্রিক সমাজের লক্ষ্যে উল্লিখিত কার্যক্রম দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অব্যাহত রেখেছে। সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সব পর্যায়ে বিএনপি পালন করেছে নিরবচ্ছিন্ন ভূমিকা। বন্দুকের নল থেকে বিএনপির জন্ম বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বিএনপি তার দীর্ঘ পথপরিক্রমায় প্রকৃত গণভিত্তিক দলে পরিণত হয়েছে। একটি সফল বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির উত্থানে খালেদা জিয়ার ভূমিকাকে মুখ্য মনে করা হচ্ছে। স্বাধীনতার পরপর যে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তা রাষ্ট্র বা জাতি গঠন প্রক্রিয়ার বদলে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাধন করে। ১৯৭৫ সালের মধ্য আগস্টের বিয়োগান্ত ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে যে সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, স্বাভাবিকভাবে তা রাষ্ট্রিক লক্ষ্য ও গণতন্ত্রের জন্য অনুকূল ছিল না। সামরিক কর্তৃত্বের পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক শূন্যতায় রাষ্ট্রিক সংকট দেখা দেয়। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লবে তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান জিয়াউর রহমান ক্ষমতার পাদপীঠে স্থাপিত হন। ইতিহাস প্রমাণ করে, বাংলাদেশকে সুস্থ, স্বাভাবিক, স্বাধীন, সার্বভৌম, শক্তিমান, সমৃদ্ধিশালী ও প্রগতিশীল রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার যথার্থ কর্মসূচি কোনো রাজনৈতিক দলই গ্রহণ করেনি। বিএনপির গঠনতন্ত্রে দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অংশের ২(ক) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক ইস্পাতকঠিন গণ-ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ও গণতন্ত্র সুরক্ষিত ও সুসংহত করা তাদের রাষ্ট্রিয় গন্তব্য।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে গঠনতন্ত্রের একই অংশের (ঙ) ধারায় বলা হয়েছে, এমন এক সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা, যেখানে গণতন্ত্রের শিকড় সমাজের মৌলিক স্তরে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত হয়। জিয়া যেমন কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন, ঠিক তেমনি জাতির আস্থা, বিশ্বাস ও লালিত মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার প্রয়াস নিয়েছেন। বাংলাদেশ জাতি রাষ্ট্রের জন্য নাগরিক পরিচয় সুনির্দিষ্ট করেছেন। সংবিধানের মৌলনীতির পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাষ্ট্রীয় করণ করেছেন। পাশ্চাত্যমুখী উন্নয়ন কৌশল অনুসরণ করে শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।গতানুগতিক রাজনৈতিক কর্মসূচির পরিবর্তে গোটা জাতিকে উদ্বেলিত করার জন্য জিয়াউর রহমান দেশপ্রেমমূলক গণমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেন। খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নেন। খাল কাটার কর্মসূচি গ্রহণ করেন। নিজের সস্তা জনপ্রিয়তার কথা না ভেবে রক্ষণশীল বাংলাদেশ সমাজে জন্মনিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান। নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করেন। যুবকদের কর্মমুখী করার জন্য কার্যক্রমে তাদের সম্পৃক্ত করেন। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সুদূরপ্রসারী চিন্তা থেকে ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী’ গঠন করেন। শহীদ জিয়ার ভাষায়, ‘জাতির মুক্তি ও উন্নয়ন’-এর জন্য ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গঠিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর রাষ্ট্রিক তথা সার্বিক লক্ষ্য হিসেবে এই ১৯ দফা কর্মসূচিকে গ্রহণ করা হয়।বিএনপি নিশ্চিতভাবেই দেশের দ্বিতীয় জনপ্রিয় দল। বিগত কয়েক দশকে যেসব গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজয়ী হয়েছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। ২০১৪-এর ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮-এর নিশীথ নির্বাচন এবং ২০২৪-এর ডামি নির্বাচন এর প্রমাণ।
সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, তথা জুলাই বিপ্লবের পর আশাবাদ এ রকম যে বিএনপি আগামী নির্বাচনে বিজয় অর্জন করার ক্ষমতা রাখে। বিগত দেড় যুগে গুম, খুন,হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়ন সত্ত্বেও বিএনপির প্রতিবাদী অবস্থান সুদৃঢ় রয়েছে। শুধু ক্ষমতায় আরোহণ একটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য হতে পারেনা।রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, ক্ষমতা কেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির যে বদনাম ছিল, দীর্ঘ এক যুগের বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তা বদলে দিয়েছে। শত শত মানুষের রক্তঋণের মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছে নতুন অধ্যায়। দেশ আজ অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে। দুঃসময়ের দিনগুলোতে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, শক্ত সংগঠন ও কর্মী বাহিনীর আত্মত্যাগ বিএনপিকে রক্ষা করেছে। তাই ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। সেই সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্ব ও সংগঠন রাষ্ট্র সংস্কারের গণদাবিকে এগিয়ে নিতে ইতিমধ্যেই ভিশন- ২০৩০ গ্রহণ করেছে। দীর্ঘ দেড় দশকের দুঃশাসনের ফলে যে রাষ্ট্রিয় সংস্কার অনুভূত হচ্ছে, তা বিএনপি অনুমোদন করে। সেই লক্ষ্যে প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে প্রস্তুত আছে বিএনপি। তবে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংস্কার কর্মসূচি ও অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চেয়েছেন। এক নদী রক্ত পেরিয়ে যে গণবিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার অনিবার্য লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার গঠন।প্রায় ৫ দশক আগে জিয়াউর রহমান যে গণমুখী ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন, তার ভিত্তিতে এবং গণদাবিকে সমন্বিত করে ভবিষ্যৎ নির্বাচিত বিএনপি সরকার নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করবে। বর্তমান সময়-সমস্যা, পরিবেশ-পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে সবকিছু। ক্ষমতা লক্ষ্য কিন্তু ক্ষমতার রাজনীতিই যেন মুখ্য না হয়ে দাঁড়ায়।
প্রেসিডেন্ট জিয়া বহিবিশ্বে দেশের অপ্রচলিত গার্মেন্টস শিল্প, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করেছিলেন। জিয়ার হাতধরেই গড়ে উঠা সেদিনের শিশু গার্মেন্ট শিল্প আজ দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। এই বিপুল সংখ্যক নারীকে কর্মহীন রেখে কোনভাবেই যে সদ্য স্বাধীন একটি জনবহুল দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় সেটা উপলব্ধি করে শহীদ জিয়া নারীদেরকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে দেশের সার্বিক উন্নয়নের চাকাকে গতিশীল করার জন্য মহিলা বিষয়ক মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা করে নারীদের ক্ষমতায়ন ও সমাজে তাদের যথাযথ সস্মান নিশ্চিত করেছিলেন। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রচার ও প্রসার এবং বিজ্ঞান মনস্ক জাতী গঠনে তিনিই প্রথম দেশে পৃথক একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাধারণ শিক্ষার সাথে মাদরাসা তথা ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় সাধন করে নৈতিকতা সম্পূর্ণ সুনাগরিক গড়ে তোলার জন্য স্বাধীনদেশে সর্বপ্রথম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা আবার স্বাধীন দেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। শহীদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অলম্বন করে সহজেই বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসেই ইন্দে-সোভিয়েত বলয় থেকে বের হয়ে আমেরিকা ও চীনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন। তিনি তার সাহসী, চৌকস ও দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতির কারণে মুসলিম বিশ্বের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি তাঁর স্বল্প সময়ের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে একক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভুমিকা পালন, আল কুদস কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া, ফিলিস্তিন জনগণের প্রতি অবিচল সমর্থন, ওআইসিকে একটি কার্যকরি সংগঠনে পরিনত করার ক্ষেত্রে শহীদ জিয়ার ভুমিকা মুসলিম বিশ্ব আজও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
জিয়াউর রহমান মুলত মুসলিম বিশ্বে শ্রমবাজার সৃষ্টি করে সরকারিভাবে কর্মী প্রেরণ করেন। শহীদ জিয়া দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভু-রাজনৈতিক ঐক্য সৃষ্টির জন্য সার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন। তাই তাঁকে সার্কের স্বপ্নগ্রষ্টা বলা হয়ে থাকে। গত আগস্টে পতিত শাসক দলের বিপরীতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে একটি সুশাসন, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজের একটি রূপকল্প উপস্থাপিত হতে হবে বিএনপির কার্যক্রমে। শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন নিশ্চিত করাই এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপি নেতৃত্ব। বিএনপির সামনে যে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ তৈরি হয়েছে তার লালন-পালন, সংরক্ষণ ও বাস্তবায়নে বিএনপি যথার্থ ভূমিকা পালন করবে বলে জনগণের প্রত্যাশা। দেশের বিরাজমান প্রেক্ষাপটে শহীদ জিয়া বড় বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন। জিয়া জীবিত থাকলে হয়তো বাংলাদেশের অবস্থা এরকম হতো না, হতে পারত না। গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্ন যদি আসে তাহলে তো বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বাংলাদেশে কার্যত শ্বাসরুদ্ধকর এক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। অথচ স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে যে বন্ধ্যাত্ব শুরু হয়েছিল জিয়াই তা থেকে জাতিকে মুক্ত করে স্বাধীনভাবে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ দেখাতে চেষ্টা করেছিলেন। তিনিই প্রথম বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শাসকরা যেখানে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন,সেখানে শহীদ জিয়া রহমান উৎপাদনমুখী দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পতাকাতলে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। প্রকৃত বিবেচনায় জিয়াউর রহমানের সততা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সহনশীলতা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের চর্চা দেশ বিনির্মাণে যে পথের দিশা দেখিয়েছিল তা যদি অনুসরিত হতো বা হতে পারত অথবা তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যেত তাহলে বিজয়ের ৫৩ বছরে হয়তো হতাশার পরিবর্তে আশার কথাই বেশি শোনা যেত।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য।
আমার বার্তা/জেএইচ