অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিএনপি মনে করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে একটি নির্বাচন দেয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত দেশে নির্বাচিত সরকার না আসবে ততদিন সরকার দুর্বলই থাকবে। প্রতিদিন নানা ধরনের আবদারের মোকাবিলা তাদেরকে করতে হবে এবং এই সমস্যার সমাধান করার শক্তি তাদের নেই।
রোববার (২৪ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডি আর ইউ) তে নবম সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) এম এ জলিল এর ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বরিশাল বিভাগ সমিতি। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ এমন একটি সরকার আমরা অবিলম্বে দেখতে চাই। রাজনীতির মাঠ খোলা আছে ছাত্রসমাজ যদি রাজনীতি করতে চায় তারা দল গঠন করে নির্বাচনে আসুক। এখন মুক্ত পরিবেশে দল গঠন করে জনগণের দ্বারপ্রান্তে এসে নির্বাচন করতে পারে তারা। জনগণ যাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেবে আমরা মাথা পেতে তা মেনে নেবো।
মেজর হাফিজ আরও বলেন, আমরা সংস্কারের কথা শুনছি, ভালো, সংস্কার করতে কোন দোষ নেই তবে সংস্কার হলো একটা চলমান প্রক্রিয়া। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে সংস্কার তো চলতেই থাকবে জনগণ কি ততদিন বসে থাকবে? ১৭ বছর ধরে বিএনপি সংগ্রাম করে এসেছে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
গণতন্ত্রের একটি মূল কথা হলো জনগণের ভোটাধিকার। এই ভোট দিতে না পারার কারণে এতদিন যুদ্ধ করতে হয়েছে। আমরা আশা করব বর্তমান সরকার উপলব্ধি করবেন। ডক্টর ইউনুস বাংলাদেশের গর্ব, দেশের কৃতি সন্তান সারা বিশ্ব তাকে চেনে। আমরা আশা করব যৌক্তিক সময়ে তারা নির্বাচন দেবেন। কিন্তু যৌক্তিক সময় পাঁচ বছর কিংবা চার বছর হতে পারে না। দেশে জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য অনেক তরুণ জীবন দিয়েছে কত মানুষ গুম হয়েছে, শহীদ হয়েছে সুতরাং আজকের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোন ধরনের দীর্ঘসূত্রতা আমরা দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, জুলাই আগস্ট মাসে বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের লড়াকু ছাত্র সমাজ এবং বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল প্রমাণ করেছে যে বাঙালি সাহসী জাতি। এই সংগ্রামের ফলে ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আমরা আশা করি আমাদের যেন আর কেউ পদায়াত না করতে পারে।
একেবারে বৈষম্য দূর করার জন্য এবং দেশকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য যে বিপ্লব সাধিত হয়েছে এটি যাতে হারিয়ে না যায়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের চক্রান্তে এটি যেন বন্ধ না হয়ে যায় সেজন্য প্রত্যেকটি নাগরিককে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
বরিশাল বিভাগ সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন ফোরকান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বিএনপি চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, আয়োজক সংগঠন এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন রেজা, নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর, মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ফরিদ উদ্দিন ভূইয়া, কামাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল হাকিম, খালেদা খানম, জহিরুল আলম ইকবাল প্রমূখ।
আমার বার্তা/এমই