
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় হুমকি দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা না তুলে নিলে তাদের সমর্থকেরা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচন বন্ধ করে দেবে। সেইসঙ্গে পরিস্থিতির অবনতি হলে আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
রোববার (১৬ নভেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই হুমকি দেন জয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণার একদিন আগে এই মন্তব্য করলেন তিনি।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ১৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতা।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতের নয়াদিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। ওয়াজেদ বলেছেন, ভারত তাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিচ্ছে এবং তাকে ‘একজন রাষ্ট্রপ্রধানের মতো’ সম্মান করছে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বসবাসকারী জয় বলেন, ‘রায়ের বিষয়ে আমরা পুরোপুরি জানি কী হতে যাচ্ছে। তারা এটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। তারা তাকে দোষী সাব্যস্ত করবে, এবং সম্ভবত মৃত্যুদণ্ডও দিতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আমার মায়ের সঙ্গে আর কী করতে পারে? আমার মা ভারতে নিরাপদে আছেন। ভারত তাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনার এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণসহ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না এলে তারা আপিল করবে না।’
উল্লেখ্য যে, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি এবং দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ তদন্তের কথা উল্লেখ করে চলতি বছরের মে মাসে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর দলটির নিবন্ধন স্থগিত করা হয়।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন আমরা হতে দেব না। আমাদের আন্দোলন আরও শক্তিশালী হবে এবং আমরা যা করার দরকার তা-ই করব। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিছু না করলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সম্ভবত সহিংসতা ঘটবে… মুখোমুখি সংঘর্ষের অবস্থা তৈরি হবে।’
এর আগে, গত মাসে রয়টার্সকে হাসিনা জানান, তিনি দিল্লিতে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে সতর্ক থাকতে হয়।
আমার বার্তা/জেএইচ

