ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাপক জনরোষের মুুখে পড়ে পুলিশ। বড় ধাক্কা খায় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নও (এপিবিএন)। তাঁরা গত ৫ আগস্ট স্বেচ্ছায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পুলিশ শূন্য হয়ে পড়ে গোটা বিমানবন্দর। এতে চরম নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকে প্রায় ৬ ঘণ্টা। বেগতিক পরিস্থিতিতে ঢেলে সাজানো হয় বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা। বিমান বন্দরের অধিকতর নিরাপত্তা এবং নিরবচ্ছিন্ন আন্তর্জাতিক আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্সকে (অ্যাভসেক) সহায়তার জন্য অনুরোধ করা হয়। গত ৭ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন শুরু করে। তাদের সঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স (অ্যাভসেক) সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি নিরাপদ বিমান উড্ডয়ন-চলাচল-অবতরণ নিশ্চিত করে।
দীর্ঘ সময় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর অনুপস্থিতিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স (অ্যাভসেক) এর যৌথ প্রচেষ্টায় পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে সর্বত্রই। চিরায়ত যাত্রী লাঞ্ছনা, লাগেজ কেটে চুরি, ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা, পদে পদে হয়রানি ও অব্যবস্থাপনা-অনিয়মের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিমানবন্দরে পৌঁছে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের ঝক্কি কমাতে চালু হয়েছে ১০টি টেলিফোন বুথ। যেখানে কথা বলা যাচ্ছে বিনামূল্যে। যাত্রীসেবা নিশ্চিতে তাদের এমন আপোসহীন অবস্থানে বদলে যেতে শুরু করে দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরটির সামগ্রিক দৃশ্যপট। বিমানবন্দরটির নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবায় ভোগান্তিহীন এসব স্বস্তির বারতায় সন্তুষ্ট সব যাত্রীরাও।
তবে অভিযোগ ওঠেছে, যাত্রীসেবার আমূল পরিবর্তনের হাওয়ার মধ্যে গোল পাঁকাচ্ছে অনেক দিন স্বেচ্ছায় অন্তর্ধানে থাকা এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। তারা এখন দায়িত্বে ফিরে নিজেদের কমান্ড সেন্টার বিনা নোটিশে দখলের কথা বলছে। সরকারি একটি বাহিনী হয়ে তাঁরা অপর একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে কমান্ড সেন্টার দখলের অভিযোগ করে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পর্যন্ত করেছে। এ ঘটনায় পুনরায় তাদের কাণ্ডজ্ঞান ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে মোটা দাগে প্রশ্ন ওঠেছে। অনেকেই বলছেন, এপিবিএন দেশের একটি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদানে নিজেদের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাদের স্বেচ্ছায় আত্নগোপনে পুরো পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। ওই সময় বিমান বাহিনী এগিয়ে না আসলে বড় রকমের দুর্ঘটনা-সহিংসতার মুখে পড়তে হতো। কিন্তু নিজেরা অবিবেচকের মতো কাজ করে এখন উল্টো অ্যাভসেক’র ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায় এড়াতে চাচ্ছেন। এসবের নেপথ্যে কোন দুরভিসন্ধি রয়েছে কীনা সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি ওঠেছে।
যদিও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া এ প্রসঙ্গে এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না। এপিবিএন ও এভসেক নিজেদের মতো করে দায়িত্ব পালন করছে। কারও মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। সবাই মিলেমিশে একসঙ্গে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। তবে যার যেখানে কাজ করা দরকার সে সেখানেই কাজ করবে। সেভাবেই বর্তমানে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যেই বিমানবন্দরের সার্বিক কার্যক্রমের উন্নতি সবাই লক্ষ্য করেছেন।’
>> বন্ধ হয়েছে লাগেজ কাটা-চুরি, নেই পদে পদে হয়রানি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে বছরে প্রায় ৫৫ হাজার ও অভ্যন্তরীণ রুটে প্রায় ৫৩ হাজার ফ্লাইট পরিচালিত হয়। আন্তর্জাতিক রুটে বছরে প্রায় ৯৫ লাখ এবং অভ্যন্তরীণ রুটে প্রায় ২৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০২৩ সালে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেছেন। আগে বিমানবন্দরটিতে নানাভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে যাত্রীদের। এখন সেখানে যাত্রীসেবার আমূল পরিবর্তন এসেছে। লাগেজ কাটা ও চুরি নিয়ে যাত্রীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ আর শোনা যায় না। প্রায় ৮৮ শতাংশ যাত্রীর কাছে ১৫ মিনিট থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত হয়েছে। লাগেজ বহনের সুবিধার্থে বিমানবন্দরে নতুন সংযোজনের পর ট্রলির সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০টিতে দাঁড়িয়েছে। ক্যানোপি থেকে বের হয়ে বহুতল পার্কিং ও রাস্তার পর্যন্ত প্রত্যেক যাত্রীর জন্য ট্রলিতে করে লাগেজ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, বিমানবন্দরে আগমন ও বহির্গমন এলাকায় যাত্রীদের তথ্য ও দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন করে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে আগমনী (অ্যারাইভাল) এলাকায় দুটি এবং বহির্গমন এলাকায় তিনটি হেল্প ডেস্কে ৫৪ জন সহকর্মী ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে যাত্রীদের বিভিন্ন তথ্য ও দিকনির্দেশনা প্রদান করে যাত্রীসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
যাত্রীদের আকাশপথের যাত্রা আরও নির্ঝঞ্ঝাট করতে একগুচ্ছ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহায়তা এবং পৃষ্ঠপোষকতায়, মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনায়, বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া’র নেতৃত্বে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সবগুলো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ৪০টি এয়ারলাইনস এবং অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে যাত্রীদের যাত্রা সহজ করার কাজটি করে যাচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জবাবদিহির নিশ্চিতে মনোনিবেশ করেছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে ১০টি ফ্রি টেলিফোন বুথ ও ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আগমনী যাত্রীদের বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিভিন্ন তথ্যসেবা অনলাইনের মাধ্যমে নিতে হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি সিমকার্ড না থাকায় যাত্রীরা অসুবিধায় পড়েন। তাই বিভিন্ন অপারেটরের সহায়তায় যাত্রীদের ফ্রি ওয়াই–ফাই ব্যবহার করার ব্যবস্থা হয়েছে।
>> অরক্ষিত শাহজালালের সুরক্ষায় এগিয়ে আসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে নির্বিচারে মানুষ হত্যা এবং অতিরিক্ত বল প্রয়োগের কারণে জনতার রোষ দেখে পুলিশও। এর বাইরে ছিল না এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নও (এপিবিএন)। তাদের ওপর কোন হামলা না হলেও গত ৫ আগস্ট তাঁরা স্বেচ্ছায় বিমানবন্দরকে অরক্ষিত রেখে চলে যায়। তাদের দলে দলে দৌড়ে পালানোর একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট থেকে সবাই চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ হেলমেট বা বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ফেলেই নিরাপদে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত যাত্রীরাও বিস্ময়ভরা চোখে এই দৃশ্য দেখছিলেন। এমন পরিস্থিতিতিতে ৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণার কথা ওইদিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। এ সময় বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা ও টার্মিনালসহ সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার (০৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে পুনরায় ফ্লাইট চলাচল শুরু হয় বলে সেদিন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বিমানবন্দরটির নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম। দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরটির এমন নিরাপত্তা সঙ্কট থেকে উত্তরণে সরকারের নির্দেশে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। গত বুধবার (৭ আগস্ট) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অধিকতর নিরাপত্তায় কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
এরই মধ্যে আবার বিমান বন্দরটিতে কর্মরত আনসার সদস্যরাও কর্মবিরতি যায়। পরে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) আনসার সদস্যদের কর্মবিরতির পরবর্তী পুরো পরিস্থিতি অবলোকন এবং মূল্যায়ন করতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত আনসার সদস্যরা কর্মবিরতিতে চলে যাওয়ার পর বেবিচক কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি এবং বিমান বাহিনীর সহায়তায় পুরো কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখা সক্ষম হয়েছে।’ তিনি সেদিন বিমান বাহিনীর এই সহায়তার জন্য বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
>> সার্বিক নিরাপত্তায় দেশি-বিদেশি কর্তৃপক্ষগুলো এপিবিএন-এর ওপর কখনও সন্তুষ্ট হতে পারেনি
বেবিচক সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনার পূর্ণ নিরাপত্তায় বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৮৫০ জন সদস্য কাজ করছেন। বিমানবাহিনীর বাইরেও অ্যাভসেকের নিজস্ব প্রায় দেড় হাজার সদস্য রয়েছেন। বর্তমানে তিন শিফটে ডিউটিতে নিয়োজিত রয়েছেন তাঁরা। বিমান বন্দরের বাইরে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা যথারীতি দায়িত্ব পালন করছেন। যাত্রী সুরক্ষাসহ বিমানবন্দরের নিরাপত্তার কোনও ঘাটতি নেই বলে জানায় বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে বিমানবন্দরে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ডিউটি শুরু করেন। কিন্তু দেশের বিমান বন্দরগুলোর সন্তোষজনক নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বরাবরই এখানে দেশপ্রেমী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে দায়িত্ব প্রদানের দাবি ওঠে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমান বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তায় দেশি-বিদেশি কর্তৃপক্ষগুলো এপিবিএন-এর ওপর কখনও সন্তুষ্ট হতে পারেনি। নিরাপত্তা যতটা উন্নত হওয়ার কথা সেটা হয়নি। বরং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। নিরাপত্তা মানে শুধু মালামাল জব্দ করা নয়। এর সঙ্গে আরও অনেক বিষয় সম্পৃক্ত রয়েছে। ফলে বিভিন্ন সময় বিমান বন্দরগুলোর নিরাপত্তা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে অনুরোধ জানায়। কয়েক বছর আগেও যুক্তরাজ্য কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান বন্দরগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে তাগিদ দিয়েছিলো। নিরাপত্তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তারা কিছু সুপারিশও করেছিলো। কিন্তু অতীতের সরকার বিষয়টিকে আমলে নেয়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার বিষয়টিতে নজর দেয়। তাদের এই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স (অ্যাভসেক) যৌথ প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে।
>> বিমান বাহিনী প্রধানের সন্তোষ প্রকাশ, পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার
গত বুধবার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের পরিচালনা ও নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি একে একে বিমান বন্দরের চেকিং কাউন্টার, ইমিগ্রেশন, স্ক্যানার, বোর্ডিং ব্রিজ, অ্যারাইভাল, ডিপারচার, এয়ার ক্রাফট পার্কিংসহ বিভিন্ন স্থাপনা পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অসামরিক কর্তৃপক্ষকে সহায়তায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বিভিন্ন বিমান বন্দর ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করে চলেছে। সব রকমের অনিয়ম ও হয়রানি দূর করে বিমান বন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে বিমান বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে।’
দেশের যেকোন ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলায় ও বিমান বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় বিমান বাহিনী কাজ করে চলেছে বলে জানান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। তিনি বলেন, ‘যখন এখানে নিরাপত্তা অনেকটাই হুমকির মুখে পড়েছিল সেই সময় আমরা বিমান বাহিনী থেকে আমাদের লোকজন নিয়োগ করেছি। আমরা সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করেছি। দুর্নীতি, অনিয়ম, চোরাচালান ও অনৈতিক কার্যকলাপ যেগুলো হচ্ছিল সেগুলো অনেকাংশেই আমরা রহিত করতে পেরেছি। বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য লাগেজ দ্রুত পাওয়ার সুবিধা, দুর্নীতি এবং চোরাচালান রোধে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিমানবন্দরের সুনাম দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে, যা ধরে রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। দেশে আসা ও বিদেশগামী প্রবাসী বাংলাদেশী যাত্রীদের বিশেষ সেবা দিতেও বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিমান বাহিনী প্রধান বলেন, ‘আমাদের প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছেন। তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন। তাঁরা যেন কোনভাবে হেয় প্রতিপন্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। তাদের সব রকমের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবেন।’
আমার বার্তা/এমই