তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হলে গণভোটের মাধ্যমেই তা করতে হবে বলে মত দিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত সংশোধনীটা শক্তিশালী করা দরকার, যাতে ভবিষ্যতে কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকারে হাত দিতে না পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় যদি কেউ পরিবর্তন আনতে চায়, তাহলে সেটা গণভোটের মাধ্যমে করার প্রস্তাব দিয়েছি।’
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৪তম দিন শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজকের আলোচনা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট নিয়ে ছিল। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে কীভাবে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে বিভিন্ন রকমের মতামত থাকার কারণে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট সৃষ্টির ক্ষেত্রে মোটামুটি অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত। তবে তার গঠন প্রক্রিয়া কী হবে এবং তার পাওয়ার অ্যান্ড ফাংশন কী হবে—এ বিষয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে ৩১ দফার ভিত্তিতে আইডিয়া নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট সৃষ্টির জন্য প্রস্তাব করেছিলাম। দেশের বিভিন্ন সেক্টরের বিশিষ্টজন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজন এবং যাঁদের জাতি গঠনে অবদান আছে; তাঁদের নিয়ে এবং যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আছে, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দেশ গড়ার কর্মকাণ্ডে প্রতিফলিত হয় এবং জাতি সমৃদ্ধ হয়, সেই আইডিয়া থেকেই ১০০ আসনের উচ্চকক্ষবিশিষ্ট দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের প্রস্তাব করেছি।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিনিধিত্ব করবে বিদ্যমান সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসন যেভাবে হয়, আসনের অনুপাতে সেই হিসাবে; তবে বিষয়টা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে। কেউ চায় পিআর পদ্ধতিতে মানে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে, এখানে আবার পাওয়ার ফাংশনের বিষয়ে আছে।
‘সাধারণ বিল কীভাবে পাস হবে, সংবিধান সংশোধন করা হলে উচ্চকক্ষে তা কীভাবে পাস হবে ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক আলোচনার পরও ঐকমত্যে আসা যায়নি।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এখন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজন আছে কি না, সেই প্রশ্ন অনেক দল তুলছে। আমাদের দেশের যে আর্থিক সক্ষমতা, সেই বিষয়ে আরেকটি পার্লামেন্ট সৃষ্টি করা এবং সেই পার্লামেন্ট যদি আসলে নিম্নপক্ষের রিপাবলিক হয়, তাহলে সেটার প্রয়োজন আছে কি না, সে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। কারণ, এটাও একটা আলাদা পার্লামেন্টের মতো ব্যয়বহুল পার্লামেন্ট হবে।
‘সেসব বিষয়ে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন সবার মতামত নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত দেবে আগামী রোববার। সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর আমরা প্রতিক্রিয়া বা আমাদের সম্মতি বা অসম্মতি সেটা জানাতে পারব।’
সংবিধান সংশোধনীসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, সংবিধান কীভাবে সংশোধন করা যায় এবং বিদ্যমান সংবিধান কীভাবে সংশোধন করা যায়, এসব বিষয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে।
আমার বার্তা/এমই