জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর এক বিস্ময়কর বাংলাদেশ দেখেছে পৃথিবী। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের চরিত্রের বদল হয়নি। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শ্রেণীর নেতা কর্মী দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার মতো গাজীপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি নেতাদের পকেট ভারি করে প্রবেশ করেছেন বিএনপিতে।
বিগত দিন কারাভোগ করা নেতাদের ছিটকে পড়তে হয়েছে তাদের টাকার গরমে। বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রবেশ করতে না পারলেও ইউনিয়ন থানা উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাদের তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে বিএনপিতে এমনকি তাদের ছায়া দিয়ে রাখছেন জেলা পর্যায়ের স্বয়ং বিএনপি নেতারাই।
বিগত দিনের স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর হিসেবে পরিচিত এবং স্বৈরশাসকের সংগঠনে উল্লেখযোগ্য অবস্থান ,ফেস্টুন ব্যানার এমনকি দলীয় পদে থাকা নেতারা, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিএনপির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন এমন অভিযোগ মিলেছে গাজীপুর জেলা মহানগর বিএনপি'র বিরুদ্ধে।
গাজীপুর জেলা মহানগর বিএনপির ত্যাগী নেতা কর্মীদের মাঝে অনেকের বিরুদ্ধেই গত ৫ই আগস্ট এর পরে নতুন করে মামলা হয়েছে ।কাশিমপুর থানা বিএনপির কর্মী ও ত্যাগী নেতাদের অনেকে এখন রয়েছে জেলে।
আগস্ট ছাত্র আন্দোলন দমনে যারা মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন তারাই আজ বড় নেতা বনে গেছেন এই কয়েকদিনের ব্যবধানে। তারাই আবার স্থানীয় বিএনপিকে নিয়ন্ত্রণ করার কলকাঠি নাড়ছে ।তাদের দলীয় লোক দিয়ে মামলার বাদি করে বিবাদী বিএনপি অনেক নেতাদের বাড়িছাড়া করেছে সাবেক স্বৈরাচারের সেই দোসররা, রাজত্ব কায়েম করেছেন এলাকা জুড়ে।
কাশিমপুরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, দিন দিন বেড়েই চলছে ভূমিদস্যতা, জুট ব্যবসা, অন্যের বাড়ি দখলের মতো নানা ঘটনা।
৫ই আগস্ট এর পরে কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের বড় কোন নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন মামলাই হয়নি। সেখানে উল্টো চিত্রে দেখা গেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা আমলে নিয়েছে কাশিমপুর থানা। কাশিমপুরে তাদের কথামতো আইন প্রশাসন চলে।
সাবেক কাউন্সিলর ওসমান গণি লিটন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের ধর্মীয় সন্তান সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস সালাম আব্বাস, কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ রহিম মোল্লা, মোঃ সেলিম মোল্লা, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ক্যাশিয়ার মৃত মোশারফ হোসেন মৃধার ছেলে ছাত্রলীগের পদে থাকা মোঃ সাইফুল ইসলাম ৫ই আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে দমন নিপীড়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এখন তাদের অত্যাচারেই কাশিমপুরবাসি অতিষ্ঠ। গ্রামবাসী বুঝতে পাচ্ছে না কে আওয়ামী লীগ কে বিএনপি।
তাদের পালিত লোকদের দিয়ে মামলার বাদি করে বিএনপি'র 'ত্যাগী নেতাদের বাড়িছাড়া করে রাখছে ফ্যাসিস্টরা দিনের পর দিন। স্থানীয় বড় কোন আওয়ামী লীগ নেতার নামে কাশিমপুর থানায় কোন মামলা নেই।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের একটাই পুঁজি, তা হলো জনগণের আস্থা। জনগণের আস্থা নষ্ট হয়ে গেলে কী হয়, তা আমরা দেখেছি ৫ই আগস্টে। আপনারা দেখেছেন স্বৈরাচারের কী অবস্থা হয়েছে, বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন তারেক রহমান।
এই পরিণতির মুখে যেন কখনো পড়তে না হয়, সে জন্য খারাপ কাজগুলোকে দূরে সরিয়ে রেখে মানুষের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নেতাদের নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কথা আমলে নেয়না গাজীপুর জেলা মহানগর বিএনপির কিছু নেতাকর্মী, দলীয় প্রধান। দলের কথা আমলে না নিয়ে ইচ্ছে মত দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যে কারণে গাজীপুর জেলা মহানগর বিএনপির ভিতরে ভিতরে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। আস্থা হারিয়ে ফেলছে জনগণ স্থানীয় বিএনপির উপর থেকে।
আমার বার্তা/এমই