আবাহনী নিজেদের কাজটা করে রেখেছিল। বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উৎসবের উপলক্ষটা তৈরি করে রেখেছিল মোসাদ্দেক হোসেনের দল। এরপর তারা তাকিয়ে ছিল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মোহামেডান–গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ম্যাচের দিকে। সুপার লিগের এ ম্যাচটিতে মোহামেডান হারলে আজই শিরোপা নিশ্চিত—এমনটাই ছিল আবাহনীর হিসাব। কিন্তু শেষ বলে গাজী গ্রুপকে মোহামেডান ৪ উইকেটে হারিয়ে সুপার লিগের শেষ রাউন্ডে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচটিকে রূপ দিয়েছে ‘ফাইনালে’।
হারলেই সব আশা শেষ—এমন এক ম্যাচের শেষে ছিল চরম নাটকীয়তা। বিশেষ করে শেষ ওভারে। গাজী গ্রুপের শেষ ওভারে পারভেজ ইমনের করা শেষ ওভারে জয়ের জন্য মোহামেডানের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। উইকেটে থিতু হওয়ার সাইফউদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন নাসুম আহমেদ। প্রথম ৪ বল থেকে তাঁরা নিতে পারেন মাত্র ৫ রান। ওভারের পঞ্চম বলটিতে উড়িয়ে মারেন নাসুম, বিশাল ছক্কায় দলকে নিয়ে যান জয়ের খুব কাছে। সেখান থেকে শেষ বলে ১ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন জয় নিয়ে।
এই জয়ের ফলে সুপার লিগের শেষ রাউন্ডে আগামী মঙ্গলবার আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচটা রূপ নিয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। সেই ম্যাচে যে দল জিতবে, তাদের হাতেই উঠবে শিরোপা। সেই ম্যাচে মোহামেডান জিতলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হবে। মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় মোহামেডানের হাতে উঠবে শিরোপা। আর ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে চ্যাম্পিয়ন হবে আবাহনী।
মিরপুরে মোহামেডানের লক্ষ্যটা খুব একটা বড় ছিল না। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স করতে পেরেছে ২৩৬ রান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮০ রান করেছেন ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। মোহামেডানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজ। জাতীয় দলের বাইরে থাকা পেসার সাইফউদ্দিন ৯.৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৪২। মোস্তাফিজ ১০ ওভার বল করে দিয়েছেন ৪৬ রান।
রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার আনিসুল ইসলামকে হারায় মোহামেডান। তবে আরেক ওপেনার রনি তালুকদার ও তাওহিদ হৃদয়ের ৭৫ রানের জুটিতে ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিল তারা। কিন্তু দলের ১১৫ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে রনি আউট হয়ে ফেরেন। এরপর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে টানতে থাকেন হৃদয়। কিন্তু হৃদয় (৩৭) ও মাহমুদউল্লাহ (৪৯) ফেরার পর ম্যাচটা ফিফটি ফিফটি হয়ে যায়। সেখান থেকে মোহামেডানকে জেতান সাইফউদ্দিন (৩০*) ও নাসুম আহমেদ (২১*)।
মোহামেডান–গাজী গ্রুপের টান টান উত্তজেনার ম্যাচের আগে বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে পেয়েছে সহজ জয়। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৫ রান করেছে রূপগঞ্জ। দলের পক্ষে ৫ চারে ৮৮ বলে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেছেন মেহেদী মারুফ। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪৭ বলে ৪০, আকবর আলী ৪০ বলে ৩৫ ও শরীফুল ইসলাম ২৩ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেছেন।
আবাহনীর পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট পেয়েছেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। ১০ ওভার বল করে ৪১ রান দিয়েছেন তিনি। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন মোসাদ্দেকই ১০ ওভারে সমান রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন রাকিবুল হাসান।
রান তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার শাহরিয়ার কমল ও পারভেজ ইমনের ব্যাটে ভালো শুরু পায় আবাহনী। দুজনে মিলে ৫.৪ ওভারে তোলেন ৪৪ রান। ৩টি করে চার ও ছয়ে শাহরিয়ার ২০ বলে ৩২ রান করে আউট হন। পারভেজ আউট হয়েছেন ৮ চার ও ও এক ছক্কায় ৮৪ বলে ৭৩ রান করে। এরপর জিসান আলমের ৬৯ বলে ৬৩ আর মেহেরব হাসান (২৪*) ও মোহাম্মদ মিঠুনের (২৯*) ব্যাটে সহজ জয় পায় আবাহনী। ৩ উইকেট হারিয়ে ২২৬ রান করতে তাদের লেগেছে ৩৭.৩ ওভার।
আমার বার্তা/এমই