জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন অনুষদের ডিন ও সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার দাস এবং সুপ্রভাত পালকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেছে আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তাদের চাকরী থেকে অব্যহতি না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুর বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন আইন অনুষদের বিভিন্ন বর্ষের প্রায় তিনশত শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এই ঘোষণা দেন তারা।
এসময় প্রশাসনিক ভবনের সামনে দুজন শিক্ষকের রেজিস্ট্রার বরাবর চাকরিচ্যুত করার আবেদন করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। একইসাথে আইন অনুষদের সকল পরীক্ষার ফলাফল পুনর্বিবেচনা করার আবেদনও করেন শিক্ষার্থীরা।
Remaining Time -10:06
Unibots.com
সমাবেশে অংশ নিয়ে ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরশাদুল হক শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ এনে বলেন, " আমরা শুনেছি, তাপস কুমার দাস দুর্নীতির মাধ্যমে তার পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিয়ে তার নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের ছোটভাই সুপ্রভাত পালকে নিয়োগ দিয়েছেন।
নোয়াখালী শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নোবিপ্রবি ছাত্রদল
এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচিত দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া সুপ্রভাত পালের তৎকালীন গার্লফ্রেন্ড বনশ্রী রানী কে ও একই বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী নিয়োগে ও যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে তাদের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দেন।"
সমাবেশে অংশ নিয়ে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিম চৌধুরী বলেন, "বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং ২২ তারিখ আমি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম তাপস কুমার দাসের স্যারের সাথে অনেক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন বন্ধ রাখেন এবং ২৩ তারিখ আমার বাবা তার সাথে যোগাযোগ করে কান্না করে অনুনয় করার পরেও তিনি আমাকে কোনো সাহায্য করেনি উল্টো আমার বিরুদ্ধে সাভার থেকে লোকজন এনে হলে হামলা করার মিথ্যা অভিযোগ আানেন। এবং আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালে ও আমার সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেননি।
সহযোগী অধ্যাপক সুপ্রভাত পালের বিরুদ্ধে প্রথম বর্ষের চুড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষার্থীর গায়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুহার্ত্য দৌলা অনিক বলেন, গত ২৭ জুন আমার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। আমি তাড়াহুড়ো করে ক্লাসে আসি এবং দ্বিতীয় সারির একটি বেঞ্চে বসে পরীক্ষা শুরু করি। তাড়াহুড়োয় আমার ফোনটা রাখতে মনে ছিলো না। পরীক্ষার একদম শেষ পর্যায়ে আমার ফোনটা বেজে উঠলে তিনি বলেন, আমি নকল করছি। আমি নকল করিনি বললে তিনি আমাকে সবার সামনে থাপ্পর মারেন। আমার ফোন নেয়ার দেড় মাস পার হলেও এখনো তিনি ফোন ফেরত দেননি।
উল্লেখ্য, গত রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীদের হেনস্থা, তাদেরকে দুষ্কৃতিকারী হিসেবে আাখ্যা দেওয়া, শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা, ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন, টুপি, বোরকা ও পর্দা করলে তাদের নানা ভাবে হেনস্তা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাথে বিরুপ আচারন, পরিকল্পিতভাবে রেজাল্ট কমিয়ে দেয়া, সহ নানা অভিযোগে দুই শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
আমার বার্তা/সৌরভ শুভ/এমই