পর্যটন মৌসুম শেষ হওয়ার দুমাস আগেই ৯ মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সেন্টমার্টিন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হতে যাচ্ছে। এ খবরে হতাশা ব্যক্ত করেছেন দ্বীপের পর্যটক সংশ্লিষ্টরা।
সেন্টমার্টিন হোটেল মারমেইড রিসোর্টের মালিক তৈয়ব উল্লাহ বলেন, ‘দ্বীপের মানুষের উপার্জনের প্রথম উৎস হলো পর্যটন ব্যবসা। নানান কারণে পাঁচ মাসের মধ্যে মাত্র দুমাস হলো পর্যটকরা দ্বীপে আসছেন। এ দুই মাসের আয় দিয়ে আগামী ৯ বা ১০ মাস দ্বীপের মানুষ কীভাবে চলবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘বিধিনিষেধের কারণে দুমাসে যে সংখ্যক পর্যটক দ্বীপে এসেছেন তা খুব সীমিত। এ দুমাস হোটেলের কর্মচারীদেরও ঠিকমতো বেতনও দিতে পারিনি। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে দ্বীপের বাসিন্দার খুবই হতাশাগ্রস্ত।’
দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আলম পেশায় একজন জেলে। তিনি বলেন, ‘পর্যটন মৌসুমে সাগর থেকে মাছ ধরার পরে সেগুলো হোটেল ও রেস্তোরাঁয় আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে পারতাম। যদি পর্যটক না থাকে তখন সেগুলো আর কেনার লোক থাকে না।’
শুঁটকি ব্যবসায়ী রহিম উল্লাহ বলেন, ‘ধারদেনা করে লাখ লাখ টাকার শুঁটকি কিনে ব্যবসা করি। এ দুমাসের ব্যবসা দিয়ে খরচ পর্যন্ত তুলতে পারিনি। আবার যদি পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মাসের জন্য সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানান সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আরও এক মাস বাড়ানো গেলে দ্বীপে মানুষরা উপকৃত হবেন। কারণ দ্বীপের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পর্যটক নির্ভরশীল। যারা হোটেল-রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য দোকানপাট করেছেন, আগামী বছরের পর্যটন মৌসুম আসা পর্যন্ত তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হবে। কারণ এ দুমাসে তারা তেমন টাকা আয় করতে পারেননি।’
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ৩১ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে চলতি পর্যটন মৌসুমে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ। এটা ছাড়া নতুন কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে পর্যটক ছাড়া সেন্টমার্টিনে অন্যান্য ট্রলার চলাচল করতে পারবে।
আমার বার্তা/এমই