মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামে মাটির নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি মর্টারশেল নিষ্ক্রিয় করার সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠেছে। এতে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তিনটি গরু মারা যায়।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাত ৭টা ৫৬ মিনিটে সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিট মর্টারশেলটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে থাকা গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ জানান, মর্টারশেলটির বিস্ফোরণে ২০০ মিটার এলাকার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে স্লিপ্টার। এতে বেশ কিছু ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও গবাদিপশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় অনেকে মনে করেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে।
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের ঘেরাও করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন সেলিম, হারেস, রশিদ, রফিজ, রেনু মিস্ত্রী, ফরিদ হোসেন, আব্দুল হান্নান, মানিক মিয়া, জলিল, মুক্তার হোসেন, আব্দুল গাফফার, সেলিম মিয়া ও বারেক। এদের বাড়িঘর ও দোকান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আড়ালিয়া গ্রামের আশিক নামের এক কৃষকের তিনটি গরু বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে মারা যায়। ঘটনাস্থলে ইউএনওসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী চা দোকানি আব্দুর রশিদ বলেন, বিস্ফোরণের তীব্রতায় ৩০০ মিটার দূরের আমার দোকান প্রায় উড়ে যায়। চার কিলোমিটার দূরের বালুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা তানিয়া আক্তার জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে আমরা তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করি। প্রথমে ভেবেছিলাম ভূমিকম্প, পরে জানতে পারি এটা মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ।
ঘটনার পর গণমাধ্যমকর্মীরা স্থানীয় জনরোষে পড়েন। কয়েকজন সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করা হয়।
এর আগে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে আড়ালিয়া গ্রামের মসজিদের পাশে কৃষক হানিফের জমিতে আইল তৈরি করতে গিয়ে মর্টারশেলটি পাওয়া যায়। স্থানীয়রা প্রথমে একে সীমানা পিলার মনে করলেও পরে পুলিশ নিশ্চিত করে এটি একটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল। এরপর সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিট সেটি নিষ্ক্রিয় করতে কাজ শুরু করে এবং পরদিন রাতে বিস্ফোরণের মাধ্যমে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।
ঘটনার তদন্তে প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও তৎপর রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, মর্টারশেল নিষ্ক্রিয়করণের পূর্বে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা আরও জোরদার করা উচিত ছিল।
আমার বার্তা/মুকবুল হোসেন/এমই