দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে রিজার্ভের পরিমাণ। প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায় বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। চলতি (এপ্রিল) মাসের মাঝামাঝি দেশের মোট রিজার্ভ বেড়ে প্রায় পৌনে ২৭ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছায়। এবার সেই রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ রয়েছে ২২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
এর আগে চলতি মাস ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৭৩ কোটি ডলার। আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি (বিপিএম-৬) অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১৩৯ কোটি ডলার।
এ দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে জানানো হয়। সে হিসাবে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়। সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব। নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের ‘বিপিএম-৬’ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ বের হয়।
অন্যদিকে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। চলতি মাসের প্রথম ২৯ দিনে ২৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। গত মার্চ মাসে প্রবাসী আয়ের নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে। পুরো মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন, যা দেশের ইতিহাসের নতুন রেকর্ড, এর চেয়ে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স আগে কখনো আসেনি।
চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার ও মার্চে সব রেকর্ড ভেঙে ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৭ মাস দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যার প্রভাবেই চাঙ্গা রয়েছে রিজার্ভ।
আমার বার্তা/এমই