
নরসিংদীর রায়পুরার মোছলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া কলেজে এইচএসসির ফলাফলে এবছর সব শিক্ষার্থীই অকৃতকার্য হয়েছেন। ফলাফল বিপর্যয় ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকায় কলেজ মাঠে সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় কলেজ মাঠে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি গণমাধ্যমে আলোচনায় এলে সবজি বাগানের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় শিক্ষার মান নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী।
সম্প্রতি উপজেলার দৌলতকান্দি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজ মাঠে শিক্ষার্থীদের পদচারণা নেই। মাঠে ট্রাক্টরে হালচাষ করা হচ্ছে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষে দু-একজন শিক্ষার্থী বসে আছে। বাকিগুলো ফাঁকা। কিছু শিক্ষক গল্প করছে। আর সুন্দরভাবে সাজানো শহীদ মিনারের পাশেই পড়ে আছে পরিত্যক্ত টিনসেট ভবন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে তিন বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি একসময় মানসম্মত শিক্ষার জন্য এলাকাবাসীর আস্থা অর্জন করেছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে ক্লাসে অনিয়মিত পাঠদান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতায় শিক্ষার মান ক্রমেই নিম্নগামী হয়েছে। এবারের ফলাফল সেই অবনতিরই প্রতিফলন।
বেশ কয়েকজন অভিভাবক ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সন্তানদের কলেজে ভর্তি করেও যদি মেধার বিকাশ না হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ হারাবে। বিকেলে কলেজের ভবনেই মাদকের আড্ডা বসে। এটা শিক্ষার পরিবেশ? কলেজ কর্তৃপক্ষেরও কোনো জবাবদিহি নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষকরা নিয়মিত এলেও ওই পরীক্ষার্থীরা অনিয়মিত ছিল। আমরা চেষ্টা করছি ভালোভাবে পড়াশোনা করে কলেজের সুনাম ফেরাতে।
স্থানীয় শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মতে, কলেজের একাডেমিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, শিক্ষকদের জবাবদিহি ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে আগামী বছর এই ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ২০১৪ সালে দরিদ্র এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নিজ উদ্যোগে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। গত বছর ২০ জন পরীক্ষা দিয়ে শতভাগ পাশ করেছিল। এবার শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস না করায় এমন ফল হয়েছে। মূলত করোনার পর থেকেই শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে আসছে।
আমার বার্তা/এল/এমই

