ই-পেপার শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

দেশে শিল্প খাতে চলছে তীব্র গ্যাস-সংকট

আমার বার্তা অনলাইন:
১৬ মে ২০২৫, ১০:১৫

শিল্প খাতে গ্যাস-সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া, ভালুকা, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ সব প্রধান শিল্পাঞ্চলেই কমে গেছে গ্যাস সরবরাহ। উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, সিরামিক ও স্টিল খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে। ঝুঁকির মুখে পড়েছে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি আয়।

শিল্পমালিক ও কর্মকর্তারা বলেন, রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি থাকে। ফলে এ সময় উৎপাদন চলছে। বাকি সময় শ্রমিক-কর্মীরা বেশিরভাগ অলস সময় কাটান। অনেক কারখানা শ্রমিক ছাঁটাইও করেছে। দিনভর যন্ত্রপাতি বন্ধ রেখে রাতের শিফটে উৎপাদন চালু রাখার কারণে ব্যয় বেড়ে গেছে দ্বিগুণেরও বেশি। কিছু শিল্প সিএনজি, এলপিজি বা ডিজেল দিয়ে উৎপাদন ধরে রাখার চেষ্টা করলেও সেটিও ব্যয়বহুল।

সব মিলিয়ে নির্ধারিত সময়ে বিদেশি ক্রেতাদের রপ্তানিপণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না অনেকে। চাহিদা থাকলেও রপ্তানি কার্যাদেশ নেওয়া বন্ধ বা কমিয়ে দিয়েছেন উল্লেখযোগ্য শিল্পোদ্যোক্তা। এর প্রভাব পড়েছে রপ্তানি আয়ে। মার্চের চেয়ে এপ্রিলে রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ১২৩ কোটি ডলার।

গাজীপুরের একটি নিটিং কারখানার পরিচালক জানান, তারা দৈনিক প্রায় ৭০ টন সুতা উৎপাদন করতেন। বর্তমানে করছেন ১২-১৩ টন। নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানার মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা ১০ পিএসআই চাপে গ্যাস পাওয়ার কথা। কিন্তু গত দুই বছর ধরে পাচ্ছেন ২ থেকে ৪ পিএসআই। ফলে দুই-তৃতীয়াংশ উৎপাদন কমে গেছে। অথচ কম চাপে গ্যাস পেলেও তারা তিতাস গ্যাস কোম্পানিকে নির্ধারিত চাপ অনুযায়ী বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। অর্থাৎ প্রকৃত গ্যাস না পেয়েও অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।

সাভার ও আশুলিয়ায় ১ হাজার ২০০-এর বেশি কারখানা রয়েছে। তিতাসের গ্যাস সরবরাহ যথেষ্ট না হওয়ায় কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে এসেছে ১ থেকে ৩ পিএসআইয়ে। অথচ প্রয়োজন ১৫ পিএসআই। ফলে জেনারেটর চালু করা যাচ্ছে না, বয়লার গরম করা যাচ্ছে না। এমনকি প্রায় সময় ড্রায়ার মেশিন বন্ধ থাকায় সময় মতো তৈরি পোশাক ওয়াশও করা যাচ্ছে না।

সাভারের এক গার্মেন্টসের উপমহাব্যবস্থাপক বলেন, গ্যাস না পেয়ে ডিজেল দিয়ে মেশিন চালাচ্ছেন। তাতে মাসে ৫০ লাখ টাকার বেশি খরচ বেড়েছে। কিন্তু বিদেশি ক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন না। এখন পরস্থিতি এমন লোকসান দিয়েও ব্যবসা টিকিয়ে রাখছি ভবিষ্যৎ ব্যবসার আশায়।

পেট্রোবাংলা এবং শিল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৪০০ কোটি ঘনফুট। কিন্তু বর্তমানে সরবরাহ হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ কোটি ঘনফুট। সর্বশেষ বুধবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সরবরাহ করা হয় ২৬৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এর মধ্যে ১০৪ কোটি ঘনফুট ব্যবহৃত হয় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে, সাড়ে ১২ কোটি সার কারখানায়। শিল্প ও আবাসিকে যায় ১৫১ কোটি ঘনফুট গ্যাস।

জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৮৮ কোটি ঘনফুটের মতো গ্যাস। চার বছর আগেও এই পরিমাণ ছিল ২৪৭ কোটি ঘনফুট। অর্থাৎ দেশীয় উৎপাদন কমেছে প্রায় ৫৯ কোটি ঘনফুট গ্যাস। সরবরাহ মোটামুটি স্থিতিশীল রাখতে হলে আমদানিকৃত এলএনজির ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। দেশে দৈনিক ১১০ কোটি ঘনফুট এলএনজি গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে। অর্থাৎ দেশীয় উৎস ও আমদানি মিলিয়ে বর্তমানে দৈনিক গ্যাস সরবরাহ সক্ষমতা কমে গিয়ে ৩০০ কোটি ঘনফুটেরও কম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ভুল নীতি এবং দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে এমন সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শিগগিরই এই সংকট থেকে উত্তরণের উপায় নেই। বর্তমান সরকার দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত বকেয়া পরিশোধ করে গ্যাস উৎপাদন ও এলএনজি আমদানিতে কিছুটা গতি আনলেও সার্বিক চাহিদা বিবেচনায় তা যথেষ্ট নয়। বর্তমানে জ্বালানি ও বিদ্যুতে যেভাবে নীতি সাজানো হচ্ছে এবং পরবর্তীতে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সরকার তা সুসংহতভাবে এগিয়ে নিলেও সংকট দূর করতে কমপক্ষে ৩-৪ বছর লাগবে। তবে কর্তৃপক্ষকে ত্রৈমাসিক পরিকল্পনা করে ধীরে ধীরে ঘাটতি কমিয়ে আনতে মনোযোগী হতে হবে।

গত কয়েক বছর ধরে যখনই গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে তখনই স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ এবং এলএনজি আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধির কথা বলেছে সরকারি সংস্থা ও কোম্পানিগুলো। কিন্তু দাম বাড়লেও উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়েনি। ২০২৩ সালে সরকার গ্যাসের দাম ১৭৯ শতাংশ বাড়ায় তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। চলতি বছর আবার ৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তার পরও সংকট কাটেনি।

গত ৭ মে শিল্পপতিদের সঙ্গে এক বৈঠকে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, রমজানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সামলাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হয়েছিল। এখন বিদ্যুৎ থেকে নিয়ে হলেও শিল্পে সরবরাহ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি এলএনজি আমদানি প্রবাহ বাড়ানো হয়েছে।

আমার বার্তা/এল/এমই

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়াতে পারে ৪,৯০০ ডলারে

এক বছর ধরে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছেই। চলতি বছর সোনার দাম আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার

দেশীয় স্বাস্থ্য সেবায় আস্থা ফেরাতে কাঠামোগত সংস্কার ও কার্যকর প্রয়োগ জরুরি

দেশীয় স্বাস্থ্য সেবায় আস্থা বৃদ্ধিতে কাঠামোগত সংস্কার এবং বিদ্যমান নীতিমালার কার্যকর প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই

১৩ ডিসেম্বর: জেনে নিন ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরির দাম

দেশের বাজারে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২

প্রতিবছর দেশের বাইরে চিকিৎসায় খরচ ৫ বিলিয়ন ডলার

চিকিৎসা ব্যয়ে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থার
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বারবার পাল্টাচ্ছে অবস্থান, হাদির হামলাকারীকে ধরতে পুলিশের অভিযান

আফগানিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপে শুভ সূচনা বাংলাদেশের

বিপিএল খেলতে আসছেন মঈন আলি

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী

সন্ত্রাস দমনে চালু হচ্ছে ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নির্বাচনকে বানচাল করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে: মনিরুল হক

বগুড়ায় শিশু ধর্ষণের আসামি জামিনে মুক্ত, মামলা তুলে নিতে হুমকি

প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কেরানীগঞ্জের সেই ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় একদিন পেরিয়ে গেলেও হয়নি কোনো মামলা

ওসমান হাদির ওপর হামলা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: নির্বাচন কমিশনার

মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ আমলাতান্ত্রিক দখলদারিত্বে জিম্মি

যেকোনও মূল্যে দেশে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

চরম হতাশার মুহূর্তে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখার গুরুত্ব

মোবাইলে কথা বলতে বলতেই ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল যুবকের

যমুনা অয়েলের তেল চুরি সিন্ডিকেট প্রধান হেলালের প্রধান সেনাপতি এয়াকুব গ্রেপ্তার

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়াতে পারে ৪,৯০০ ডলারে

অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমাতে জানুয়ারিতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু

ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ঢাবি সাদা দলের নিন্দা প্রকাশ

বুয়েটে বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

তেঁতুলিয়ায় টানা তিন দিন ধরে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ