
পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (৮ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে সপ্তাহজুড়ে ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে ৩২৫টির দাম কমে। ফলে ডিএসইর মূলধন কমে সাত হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৪১ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়।
এমন পতনের পর সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৩টির। আর ৫১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৫৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২৭টির দাম কমেছে এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৬৭টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে সাতটির দাম কমেছে এবং চারটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯টির এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে চারটির দাম কমেছে এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৯০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ছয় পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ছয় পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৯২ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৪ কোটি ৬৪ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৬৭ কোটি ৬৪ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৯৭ কোটি টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। ১৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, একমি পেস্টিসাইড, বিডি থাই ফুড, মুন্নু ফেব্রিক্স, ফাইন ফুডস এবং মেঘনা পেট্রোলিয়াম।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬২টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
আমার বার্তা/এল/এমই

