বেতন বৈষম্য নিরসনসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টানা চতুর্থদিনের মতো কর্মবিরতি চলছে। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে সারাদেশের সাড়ে ৬৫ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয়। ক্ষতির মুখে পড়েছে এক কোটি ১০ লাখেরও বেশি শিশু শিক্ষার্থী।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সহকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তালিকা চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে বৈঠক হতে পারে। সেখানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় চৌধুরী উপস্থিত থাকতে পারেন।
আলোচনায় বসার আভাস পেলেও সুনির্দিষ্টভাবে কখন, কোথায় বসা হবে; তা জানেন না বলে জানিয়েছেন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষক নেতাদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। আমরা তালিকা পাঠিয়েছি। কোথায়, কখন বৈঠক হবে; সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। ফলে আমরা স্পষ্ট নয়।
উপদেষ্টার সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকদের বৈঠক হতে পারে আজ
শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পেলে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করছি না। আজও আমাদের কর্মসূচি চলছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাবো। আশা করি, সরকার আমাদের দাবি বাস্তবায়নে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।’
এদিকে, রাজধানীর কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন দেখা যায়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসেছে। শিক্ষকরাও এসেছেন। কিন্তু শ্রেণি কার্যক্রম তথা ক্লাস হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা হই-হুল্লোড় আড্ডায় সময় পার করছেন। আর শিক্ষকরা নিজেদের অফিস রুমে বসে সময় কাটাচ্ছেন।
এর আগে গত ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মদিবসে এক ঘণ্টা, ১৭ মে থেকে দুই ঘণ্টা এবং ২১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত আধাবেলা কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা। ২৬ মে থেকে তারা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন।
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি—
১. সরকারের গঠিত কনসালটেশন কমিটির সুপারিশের যৌক্তিক সংস্কার করে সহকারী শিক্ষক পদকে অ্যান্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ।
২. ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন।
৩. প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি প্রদান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌনে ৪ লাখেরও বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে সাড়ে তিন লাখই সহকারী শিক্ষক। বর্তমানে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বর্তমান বেতন গ্রেড ১১তম। আর সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম।
আমার বার্তা/এল/এমই