
তিন দফা দাবিতে পূর্বঘোষণা দিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। তিনদিন এবং দুই রাত শহীদ মিনারে কেটেছে তাদের। প্রথমদিন ৮ নভেম্বরই পুলিশ শাহবাগে তাদের ওপর চড়াও হয়। জলকামান, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেডে রক্তাক্ত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষক। এখনো হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন অনেকে।
টানা তিনদিনের এ কর্মসূচি শেষে সোমবার (১০ নভেম্বর) অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবের সঙ্গে আলোচনায় ‘পর্যালোচনা করা হবে’ মর্মে দেওয়া আশ্বাসে একপক্ষ খুশি। অন্যপক্ষ দাবি পূরণে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে অনড়।
বিভক্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে সচিবালয় থেকে বেরিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ এর নেতারা। সংগঠনটির চারজন আহ্বায়কের মধ্যে দুজন কর্মসূচি স্থগিতের পক্ষে। বাকি দুজন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। ‘দ্বিধাবিভক্ত’ শিক্ষক নেতাদের দুজন শহীদ মিনারে ফিরলেও বাকি দুজন লাপাত্তা।
শিক্ষকদের বিভক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুলিশ প্রশাসন শহীদ মিনার থেকে রাতে তাদের সরিয়ে দিয়েছে। রীতিমতো জোর করে পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমানকে শহীদ মিনার ছাড়তে বাধ্য করার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। শহীদ মিনারে থাকা অন্য সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গেও পুলিশের বাকবিতণ্ডা হতে দেখা গেছে।
রাত ১০টায় প্রাথমিক শিক্ষকরা যখন শহীদ মিনার ছেড়েছেন, তখন তাদের অধিকাংশের মুখে ‘হাহাকার’। দশম গ্রেডের দাবি নিয়ে ঢাকায় এসে ১১তম গ্রেডের নিশ্চয়তাও পাওয়া হয়নি তাদের। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘পর্যালোচনা করা হবে’ আশ্বাসকে তারা শুভঙ্করের ফাঁকি হিসেবে দেখছেন।
নেতাদের স্বার্থের কাছে টানা তিনদিন ঘর ছেড়ে ঢাকায় এসে অবস্থান কর্মসূচি করা বৃথা হয়েছে বলে মনে সহকারী শিক্ষকরা। তারা বলছেন, যাতায়াত, খাওয়াসহ নানা খরচ মিলিয়ে তিনদিনে তাদের প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশের মুখোমুখি হয়েছেন তারা। কিন্তু দিনশেষে তাদের খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
খান মো. শহীদুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক লিখেছেন, সাধারণ শিক্ষকদের শহীদ মিনারে রেখে তিনজন শিক্ষক নেতা উধাও। আপনাদের বিবেক কী বলে?
আমার বার্তা/এল/এমই

