পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় কুররাম জেলায় জাতিগত দাঙ্গা কোনোভাবেই থামছে না। রোববার (১ ডিসেম্বর) নতুন করে সংঘাতে আরও ছয়জন নিহত হয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩০ জনে দাঁড়ালো। দেশটির পুলিশের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে জিও নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিয়া ও সুন্নি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত টানা ১১ দিন ধরে চলছে। এতে এখন পর্যন্ত আহতও হয়েছে ১৮৬ জন। সংঘাত বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনতে আলোচনা শুরু হয়েছে। নতুন করে সংঘাতবিরতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় নেতারা।
পুলিশ ও মেডিকেল সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, কুররামের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে সংঘাত চলছে। সর্বশেষ সংঘাতে আহত হয়েছে আরও আটজন।
দেশটির জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে পেশাওয়ার-পারাচিনার হাইওয়ে টানা আট দিন ধরে বন্ধ আছে। এতে দৈনন্দিন জীবন ও বাণিজ্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
রাস্তা বন্ধের কারণে আফগানিস্তানের সঙ্গে খারলাচি সীমান্তে বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ আছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুররামের ডেপুটি কমিশনার জাভেদউল্লাহ মেহসুদ। এতে ওই অঞ্চলটিতে অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া এমন পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অঞ্চলটির বাসিন্দা।
জাভেদউল্লাহ মেহসুদ বলেছেন, কুররামের নিম্ন অঞ্চলের বিভিন্ন অংশে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার সকল প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বিবিসি বলছে, আফগান সীমান্তের কাছে উপজাতীয় জেলা কুররামে সহিংসতার সূচনা হয়েছিল গত ২১ নভেম্বর। সেইদিন শিয়া মুসলিমদের একটি গাড়িবহরে একজন বন্দুকধারীর হামলার পর সহিংসতা শুরু হয়। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত হওয়ার শুরু হয় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা। এরপ থেকে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
পাকিস্তান সুন্নি অধ্যুষিত হলেও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় বিশাল সংখ্যক শিয়া মুসলিমদের বসবাস। সেখানকার শিয়া ও সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে কয়েক দশক ধরে ভূমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়ে আসছে।