ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের একদল পর্যটকের ওপর হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র বন্দুকধারীরা। এই হামলায় সেখানে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে বন্দুকধারীদের হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে বলে কাশ্মিরের জ্যেষ্ঠ এক রাজনীতিক জানিয়েছেন।
জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধান মেহবুবা মুফতি বলেছেন, ‘‘পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যেখানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাঁচজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।’’
এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ ওই অঞ্চলে ১৯৮৯ সাল থেকে বিদ্রোহীরা সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে। তারা কাশ্মিরের স্বাধীনতা অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে। যদিও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের আয়তন ভারত-শাসিত কাশ্মিরের তুলনায় ছোট। ভারতের মতো পাকিস্তানও পুরো কাশ্মিরকে নিজেদের বলে দাবি করে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা রবীন্দ্রর রাইনা দেশটির সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘এই কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসীরা নিরীহ পর্যটকদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে; যারা কাশ্মির ভ্রমণের জন্য এসেছিলেন।’’
‘‘হামলায় গুরুতর আহত কয়েকজন পর্যটককে উদ্ধারের পর স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর প্রায় ৩৫ লাখ পর্যটক কাশ্মিরে গিয়েছিলেন। তাদের বেশিরভাগেই ভারতীয় পর্যটক।
২০২৩ সালে কাশ্মিরের শ্রীনগরে জি-২০ জোটের সদস্য দেশগুলোকে নিয়ে পর্যটন সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ভারত। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কাশ্মিরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকার চেষ্টা করছে, সেই বার্তা দেওয়াই ছিল সম্মেলনের লক্ষ্য। নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০১৯ সালে ভারত নিয়ন্ত্রিত এই ভূখণ্ডের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর থেকে সেখানে বড় ধরনের দমন-পীড়ন শুরু হয়।
কাশ্মিরে স্থায়ীভাবে প্রায় পাঁচ লাখ সৈন্য মোতায়েন করে রেখেছে ভারত। দেশটি প্রায়ই কাশ্মিরের সশস্ত্র বিদ্রোহীদের পাকিস্তান মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কেবল কাশ্মিরের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের লড়াইয়ে নৈতিকভাবে সমর্থন জানায়। -- সূত্র: এএফপি
আমার বার্তা/এমই