ব্রাজিলে ডেঙ্গু মোকাবিলায় চালু হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় মশা প্রজনন কেন্দ্র। কারিতিবা শহরে প্রতিষ্ঠিত এই বায়োফ্যাক্টরি প্রতি সপ্তাহে ১০ কোটি ডিম উৎপাদনে সক্ষম, যা ব্যবহার করা হবে উলবাচিয়া ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত মশা ছাড়ার মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে। আগামী কয়েক বছরে প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই এ প্রকল্প শুরু হয়েছে।
গত জুলাই ব্রাজিলের কারিতিবা শহরে উদ্বোধন করা হয় ‘ওলবিতো দো ব্রাজিল’ নামের বায়োফ্যাক্টরি। বিশ্ব মশা কর্মসূচি, ওসওয়ালদো ক্রুজ ফাউন্ডেশন এবং ইনস্টিটিউট অব মলিকুলার বায়োলজি অব পারানা’র যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই কেন্দ্র এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় উলবাচিয়া-সংক্রমিত মশা উৎপাদন প্রকল্প। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরাসরি এই উদ্যোগের সহযোগী।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী লুসিয়ানো মোরেইরার মতে, কারখানাটি প্রতি ছয় মাসে প্রায় ৭০ লাখ মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারবে। উলবাচিয়া-সংক্রমিত মশা সাধারণ মশার সঙ্গে মিলিত হয়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কেবল গত বছরই ব্রাজিলে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৬ হাজার ২৯৭ জন—যা ছিল এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
২০১৪ সাল থেকে ব্রাজিলের আটটি শহরে এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে, যেখানে ৫০ লাখের বেশি মানুষ সুরক্ষা পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উলবাচিয়া প্রকৃতির ৬০ শতাংশের বেশি কীটপতঙ্গের শরীরেই পাওয়া যায় এবং মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের জৈবিক প্রতিক্রিয়া ঘটায় না। ফলে এ পদ্ধতিকে নিরাপদ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
কেন্দ্রটির উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ গাড়িতে করে এসব সংক্রমিত মশা ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হবে। স্থানীয়ভাবে যেসব মহল্লায় সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি, সেগুলোই অগ্রাধিকার পাবে। কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, এই প্রক্রিয়া দ্রুতই দেশব্যাপী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ফল আনতে পারবে।
সূত্র: রয়টার্স
আমার বার্তা/এল/এমই