
প্রাক্তন শব্দটি ডিকশনারির শুধু একটি শব্দ হয়, এটি মানুষকে মনে করার কোনো কষ্ট কিংবা আফসোসের দিন। যে মানুষটি নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন, ভবিষ্যতে সেই যে প্রাক্তন হবেন তা হয়তো কখনোই কেউ ভাবেননি। প্রাক্তনকে ভুলে যেতে অনেক সময় লেগে যায় অনেকের। একসময় সব ভুলে নতুন করে শুরু করেন সব।
আজ প্রাক্তনকে মেসেজ দেওয়ার দিন। যা সত্যিই বেশ কঠিন কাজ বটে। তবে যে ব্যক্তির সঙ্গে একটি বন্ধন ছিল এবং গভীর বন্ধুত্ব ছিল, সে হঠাৎ করেই আপনার দৈনন্দিন জীবনের অংশ নয়। এটি মেনে নেওয়া খুবই কষ্টের, যন্ত্রণাদায়ক। কিন্তু কখনো কখনো কিছু ভুল হয়ে যায় অথবা অনুশোচনা থেকে যায়। যা হয়তো তাকে আর বলা হয়নি। আজ না নয় বলে দিন। দীর্ঘদিনের আক্ষেপ আজ মিটিয়ে প্রাক্তনকে একেবারেই মাফ করে দিন, ভুলে যান চিরতরে।
ভালোবাসার সম্পর্ক ভেঙে গেলে বেশিরভাগ মানুষ চেষ্টা করেন যত দ্রুত সম্ভব সামনে এগিয়ে যেতে। স্মৃতি, আবেগ, অভিমান সবই গুছিয়ে রাখেন জীবনের অ্যালবামের এক কোণে। তবু মানুষের মন বড় আশ্চর্য-কখনো কখনো সে ফিরে তাকায়, খুঁজি পুরোনো সংখ্যায় সেভ থাকা সেই নামটা। সেই ফিরে তাকানোর প্রবণতাকেই যেন নতুন অর্থ দিয়েছে ৩০ অক্টোবর টেক্সড ইওর এক্স ডে বা প্রাক্তনকে মেসেজ করার দিন।
এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হওয়া একটি অবকাশ দিন। বিশ্বব্যাপী আনুষ্ঠানিক কোনো সরকারি দিবস নয়, তবে বহু দেশেই এখন অনলাইন কমিউনিটির মাধ্যমে মানুষ দিবসটিকে লক্ষ্য করে থাকে। এই দিনের পেছনে কোনো গভীর রাজনৈতিক বা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নেই। এটি সৃষ্টি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার হাস্যরস, ট্রেন্ড, এবং মানুষের আবেগী জটিলতার মিশেলে।
এই দিবসের শুরুটা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো একক ব্যক্তি বা সংগঠনের নামে নথিভুক্ত নয়। ধারণাটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারনেট কালচারের অংশ হিসেবে উঠে আসে। আনুমানিক ২০১০-এর পর থেকে টুইটার, রেডিট ও ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল হয়, যেখানে ব্যবহারকারীরা একে অন্যকে মজার ছলে চ্যালেঞ্জ করত ‘আরে, পুরোনো প্রেমিক/প্রেমিকাকে টেক্সট করো, দেখি কী হয়!’
পরে কিছু ব্লগ, রোমান্টিক কমিউনিটি, ও অনলাইন ডেটিং প্ল্যাটফর্ম মজার কনটেন্ট হিসেবে দিনটিকে প্রচার করতে শুরু করে। এরপর থেকে প্রতি বছর ৩০ অক্টোবর দিনটি বিশ্বের অনেক জায়গায় ‘মিম দিবস’ হিসেবে উদযাপিত হতে থাকে। যদিও বাংলাদেশ বা দক্ষিণ এশিয়ায় এটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচলিত নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর উল্লেখ দেখা যায়, এবং মানুষের কৌতূহলও রয়েছে যথেষ্ট।
এখন মনে হতে পারে ৩০ অক্টোবর দিনটিকে কেন বেছে নেওয়া হয়েছে। এর সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। তবে একটি তত্ত্ব হলো-এটি হ্যালোইনের আগের দিন। আর হ্যালোইন যেখানে ভয়, দুষ্টুমি ও অদ্ভুতুড়ে কল্পনার উৎসব, তার আগের দিনটিকে অনেকে ভূতের মতো ফিরে আসা স্মৃতির দিন বলেও হাস্যরস করে থাকেন। অর্থাৎহ্যালোইনে মানুষ ভয়ের মুখোমুখি হয়, আর তার আগের দিন মানুষ নাকি ভয়ংকর কাজ করে, আর সেটি হচ্ছে প্রাক্তনকে মেসেজ দেওয়া!
আমার বার্তা/এল/এমই

