আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) বিকাশ কুমার সাহা ও সাবেক দুই বিচারকের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট তিনজনসহ মোট ১৫ জন বিচারকের ব্যক্তিগত নথিসহ সম্পদের বিবরণী তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর অনুসন্ধান টিমের পাঠানো চিঠির সূত্রে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিটি সচিবের দপ্তরে পাঠানো হয়।
অনুসন্ধান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্টদের পার্সোনাল ফাইল, ডাটাশিট এবং সর্বশেষ দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর অনুলিপি আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।
দুদকের চলমান অনুসন্ধানে যেসব বিচারিক কর্মকর্তা ও সরকারি কর্মকর্তাদের নথি তলব করা হয়েছে তারা হলেন-
বিকাশ কুমার সাহা – সাবেক যুগ্ম সচিব (প্রশাসন), বর্তমানে ওএসডি, আইন মন্ত্রণালয়।
মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর – সাবেক অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম), ঢাকা।
রেজাউল করিম চৌধুরী – সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম), ঢাকা।
শেখ গোলাম মাহবুব – বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, টাঙ্গাইল।
মাহবুবুর রহমান সরকার – বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, কিশোরগঞ্জ।
মনির কামাল – সাবেক জেলা জজ, সিলেট।
তোফাজ্জল হোসেন – সাবেক অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা।
মুশফিকুর ইসলাম – সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ, মাগুরা।
কাইসারুল ইসলাম – সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, গাজীপুর।
মোল্লা সাইফুল আলম – সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নড়াইল।
ফারহানা ফেরদৌস – জেলা জজ, ময়মনসিংহ।
কামরুন নাহার রুমি – বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর।
গৌরাঙ্গ হোসেন – সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ, ঢাকা।
মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ – সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, সিলেট।
ও সাইফুল আলম চৌধুরী – জেলা ও দায়রা জজ, হবিগঞ্জ।
মূলত, আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) বিকাশ কুমার সাহা, ঢাকার সাবেক মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) রেজাউল করিম ও সাবেক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম (এসিএমএম) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর ও তাদের পরিবারের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সূত্র ধরে তাদের নথিপত্র তলব করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালে তৎকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান আনিসুল হক। তার সময় থেকে ধীরে ধীরে কলুষিত হতে থাকে বিচার বিভাগ। আইন মন্ত্রণালয়, ঢাকা এবং এর আশপাশের আদালতে কর্মরত বেশ কিছু বিচারক মন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, প্রতারণা ও জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) বিকাশ কুমার সাহা, ঢাকার সাবেক মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) রেজাউল করিম ও সাবেক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম (এসিএমএম) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর। ঘুষ গ্রহণ, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে তারা নিজ বা পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন।
আমার বার্তা/জেএইচ