ভারতশাসিত কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনার হওয়ার পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের হুমকি ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জম্মু ও কাশ্মীর ছাত্র সংঘের আহ্বায়ক নাসির খুইহামি এসব অভিযোগ জানান।
গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) হিমালয় অঞ্চলের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পহেলগামে সশস্ত্র বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একজন নেপালি ছাড়া বাকি সবাই ভারতীয়। ২০০০ সালের পর অঞ্চলটিতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এটাই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।
এই হামলার পর ভারতের জনমনে চরম শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।
জম্মু-কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক নাসির খুইহামি জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে হোস্টেলের দরজা ভেঙে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি। কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাসির।
তিনি বলেন, এটি শুধু নিরাপত্তার বিষয় নয়, বরং একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল ও পরিচয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ঘৃণা ও হেয়প্রতিপন্ন করার অভিযান।
উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেরাদুনে অন্তত ২০ জন কাশ্মীরি ছাত্র হিন্দু রক্ষা দল নামে একটি উগ্র ডানপন্থি গোষ্ঠীর হুমকির মুখে বুধবার বিমানবন্দরে পালিয়ে যান। ওই গোষ্ঠী কাশ্মীরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের দ্রুত শহর ছাড়তে বলেছে, নইলে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ।
কাশ্মীর অঞ্চলটি ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বিভক্ত। দুই দেশই অঞ্চলটির পুরোটা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে, যদিও তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন অংশগুলোই শাসন করে। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারতশাসিত কাশ্মীরে স্বাধীনতা কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
মঙ্গলবারের হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ব্যাপক ধরপাকড় ও তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। অনেক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, বুধবার ‘সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে’ সমর্থনের অভিযোগ এনে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। তবে পাকিস্তান এই হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আমার বার্তা/জেএইচ