দেশের মানুষের জন্য কেউ যদি কিছু করতে পারে তবে সেটা বিএনপিই পারবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, তাই জনগণের আস্থা আমাদের ধরে রাখতে হবে। আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর মহানগর, সৈয়দপুর ও নীলফামারী জেলায় রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতির উদ্দেশ্য দেশ ও দেশের মানুষ। দলের ৩১ দফা দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে। দেশের স্বার্থে বিএনপি কি করতে চায় তা যদি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়, তাহলে সব প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার যা করেছে তা বিএনপি করতে চায় না। জুলুম করে বিএনপি প্রতিশোধ নিতে চায় না। জনগণের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে দেশের জন্য বিএনপি কিছু করতে পারবে। প্রতিটি নেতাকর্মীকে জনগণের আস্থা ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশ গঠন ও ৩১ দফার পক্ষে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার আহবান জানান তারেক রহমান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির আয়োজনে এ কর্মশালায় ৫০০ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা অংশ নেন।
এর আগে সকালে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হিরা, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেফাউল জাহাঙ্গীর আলম শেপুর সঞ্চালনায় কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম।
বুধবার বিকেলে বিএনপির রাজনৈতিক জেলা সৈয়দপুরেও রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন তারেক রহমান।
দলের সবার উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, জনগণের আস্থা ধরে রাখতে কাজ করবেন আপনারা। হত্যা, নির্যাতনের প্রতিশোধ আমরা নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। এটিই হবে আমাদের প্রতিশোধ নেওয়ার উপায়।
কর্মশালার শেষ বেলায় অংশ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারেক রহমান। পরে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বলে কোনো কথা নেই। সবাইকে মানুষ হিসেবে বিবেচিত হতে হবে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, এ প্রশিক্ষণ শেষে মানুষ জিজ্ঞাসা করবে, কি বাহে কী নিয়া আইলেন। যারা বিগত আমলে আমাদের ভোট দেয়নি তাদের কাছেও যাবেন। আজ সারা দিনের আলোচনা ও ৩১ দফা তুলে ধরবেন। দলের পক্ষে জনসমর্থন সৃষ্টি করবেন।
বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির উদ্যোগে সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি এ কর্মশালার আয়োজন করে।
সৈয়দপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত দিনব্যাপী এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন।
সৈয়দপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকারের সভাপতিত্বে এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন।
কর্মশালায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিবা, বিএনপির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিছুর রহমান তালুকদার খোকন, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি রেহেনা আক্তার রানু, সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু।
বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন আকতার শাহীন।
কর্মশালাটি পরিণত হয় নেতাকর্মীদের মিলনমেলায়। কর্মশালায় ৩১ দফা ও জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে জাতীয় ও দলীয় সংগীতের মাধ্যমে কর্মশালা শুরু হয়।
আমার বার্তা/এমই