বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সার্কেল-১, মিরপুর কার্যালয়ে দালাল ও বহিরাগত দ্বারা গ্রাহক হয়রানি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময়ে দালাল ও প্রতারক চক্রের অনেককেই বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। এখন অনেকটাই দালাল শূন্য রূপে দেখা যায় মিরপুর বিআরটিএ কার্যক্রম। যার সার্থকতার মূল নায়ক বর্তমান বিআরটিএ নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াসিন এর অবদান। জানা যায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকার ক্ষমতা থেকে চলে যাবার পর বিভিন্ন সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যৌথ অভিযান পরিচালনা পরিচালনা করে দালালদের গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও দেন তিনি। যার ফলে বর্তমানে মিরপুর বিআরটিএ দালালদের দৌরাত্ম্য কম চোখে পড়ছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন এএসআই সোহেল দালাল সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলেন মিরপুর বিআরটিএ তে। মিরপুর বিআরটিতে রয়েছে তার একান্ত দালাল সিন্ডিকেট এ দালাল সিন্ডিকেট এর প্রধান এএসআই সোহেলের কথিত ভাগিনা রাফি, তারি মাধ্যমে এই দালাল সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বিভিন্ন ফাইল সংগ্রহ করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সোহেল নিজেই কাজ করে দেন।
এই সিন্ডিকেটের বাহিরে যে-সব দালালরা কাজ করতে যায় তাদেরকে আটক করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গত সোমবার বিআরটিএ দালাল মুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করেন,নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৩ এর আনিসুজ্জামান, এ সময় কাফরুল থানার এ এসআই সোহেল, মিরপুর বিআরটিএ এর বাহির থেকে ১১ জন দালালকে আটক করে (বিআরটিএ) এর হাজত খানায় রাখেন , বাকি কয়েকজনকে টাকার বিনিময়ে বাহির থেকেই ছেড়ে দেওয়া হয় বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। আটককৃতদের মধ্যে ৯ জনকে সাজা দেওয়া হয়, বাকী ৩ জনের মুসলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সাজপ্রাপ্ত আসামি ৯ জনের মধ্যে একজনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে, বাকি ৯ জনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।সাজাপ্রাপ্তরা হলেন ০১. বিল্লাল হোসেন (৩৭), ০২. হাবিবুল্লাহ (২৪) ১ মাস, ০৩. রুবেল হোসেন (২৯) ১ মাস, ০৪. মো. মনির (৪০) ১৫ দিনের, ০৫. রনি (২৮) ১ মাস, ০৬. হাচিবুল রহমান (২০) ১ মাসের, ০৭. জালাল হোসেন (৪৯) ১ মাস, ০৮. রিদয় (২৪) ১ মাস, ৯. আল আমিন, ১ মাস।
এছাড়াও কাফরুল থানার এএসআই সোহেল ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষ নিয়ে বৈষম্য ছাত্রদের উপর হামলার তথ্যও পাওয়া যায়।
এএসআই নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিত ছাড়াই আশেপাশের লোকজন ধরে বিআরটিএ হাজত খানায় ঢুকিয়ে রাখেন। পরবর্তীতে লোক বুঝে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন। যার প্রমাণ রয়েছে সাংবাদিকদের হাতে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় এএসআই সোহেল পুলিশের পোষাক খুলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিআরটিএ তে দালালি করে বেড়ায়। তাতে করে তার দালালি করার সুযোগ দিন দিন বেড়ে চলছে। সাধারণ জনমনে প্রশ্ন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেখানে দালাল মুক্ত করবে, সেখানে নিজেই দালালি করছে। তাহলে পুলিশের প্রতি জনগণের কতটুকু শ্রদ্ধা থাকবে।
এ বিষয়ে কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফার সাথে সরাসরি কথা বললে তিনি সাংবাদিকে জানান,এএসআই সোহেল আইনি প্রক্রিয়ায় বিআরটিএ তে কাজ করছেন। এছাড়া তার বদলির বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন উপরস্থ কর্মকর্তারা বলতে পারবেন আমি এবিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ হেড অফিসে প্রশাসন শাখার জনাব কামরুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সঠিক প্রমাণ থাকলে নিশ্চয়ই আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয় বিষয়টি নজরে নিবেন। তাছাড়া বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে এভাবেই সাংবাদিকদের পাশে থাকার আহ্বান জানান।
আমার বার্তা/আনিছ মাহমুদ লিমন/এমই