স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন (কম্পোনেন্ট-২ দেশের ৮টি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ইমেজিং ব্যবস্থার আধুনিকীরণ) শীর্ষক জাইকা প্রকল্পের আওতায় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তিনটি দরপত্র বাতিল করা হয়।
গত বছর পতিত হাসিনা সরকারের আমলে তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মোট ৩টি দরপত্র আহবান করে তার মধ্যে ২টি (GD1 & GD2) প্যাকেজ জাইকা অর্থায়নে এবং ১টি (GD3) প্যাকেজ সরকারী (জিওবি) অর্থায়নে কেনাকাটা সম্পন্ন করা হবে।
কিন্তু কেনাকাটা সম্পর্কে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অনিয়ম ও দুর্নীতির নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে কেনাকাটায় তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গির আলম ও প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমানসহ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা.জাহেদ মালেকের যোগসাজসের আলামত পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ২০২৪ এর জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণঅভ্যুথানের মুখে হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং অন্তরবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে।এরপর উক্ত জাইকা প্রকল্পের কেনাকাটার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টিসহ অন্যান্য বিষয় আমলে নিয়ে মোট ৩ টি প্যাকেজের কেনাকাটাই বাতিল করে এবং স্বাস্থ্য সচিবকে মন্ত্রণালয় থেকে অপসারন করেন।কিন্তু এই প্রকল্পের কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির মূলহোতা প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
প্রকল্পের ঠিকানায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কক্ষ নং ১২৮ ও ১২৯ এ সরেজমিনে দেখা যায়,মিজানুর রহমান ছিলেন পতিত হাসিনা সরকারের দোসর এবং আওয়ামীলীগের দালাল।এই কক্ষের সামনে তার বিরুদ্ধে নানারকম স্লোগান লেখা রয়েছে।সেখানে লেখা রয়েছে 'মিজান পালালি কই ' 'খুনি হাসিনার দোসর মিজান' মিজান দালাল।এসব লেখার পরও সে এখনো বহাল তবিয়াতে রয়েছে আবারও বাতিলকৃত টেন্ডার ফের আহ্বানের গোপন চেষ্টা চালাচ্ছে।
জানা যায়, বর্তমানে প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বাতিলকৃত ৩ টি প্যাকেজের দরপত্র ফের আহব্বানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন শাখার একাধিক কর্মকর্তা জানান,অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমানকে অবিলম্বে অপসারণ না করা হলে বাতিলকৃত টেন্ডার ফের আহবানের চেষ্টা করবে।পতিত শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তিনি এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি অতিদ্রুত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়ে উক্ত পকল্পের পরিচালক মিজানুর রহমানকে অবিলম্বে অপসারণ করা উচিত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
আমার বার্তা/এমই