কক্সবাজার সদর উপজেলা খুরুশকুল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের চৌকিদার আলী হোসেনের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রয়োজনীয় সনদ পত্র নেওয়ার আবেদন ফরমে স্বাক্ষর নিতে গুনতে হয় টাকা। বিভিন্ন রকমের হয়রানি সহ পাহাড় সমান অভিযোগ স্থানীয় ভুক্তভোগীদের।
স্থানীয় ভোক্তভোগীরা বলছেন,খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের চৌকিদার আলী হোসেন আইনি পোশাক পড়ে প্রতিনিয়ত বে-আইনিভাবে কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। তার প্রতিবেশী এবং স্থানীয় গরিব অসহায় ও সাধারণ মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার করছেনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ,ওয়ারিশ সনদ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ,রোহিঙ্গা নয় মর্মে প্রত্যয়ন পত্র সহ, পাসপোর্ট করার জন্য বা ভোটার হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে ওয়ার্ড মেম্বার এবং মহিলা মেম্বার ও স্থানীয় চৌকিদারের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হওয়ায় বাংলাদেশী নাগরিক সেবায় স্বাক্ষর নিতে গেলে টাকা ছাড়া কথাও বলতে চান না এই আলী হোসেন চৌকিদার। একটা স্বাক্ষরে দুইশ,তিনশো থেকে পাঁচশো টাকা পর্যন্ত ভিজিট পেলে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য থাকেন তিনি। নির্বাচিত মেম্বার চেয়ারম্যানদের চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান এই চৌকিদার। একজন বাংলাদেশী নাগরিক ইউনিয়ন পরিষদের সেবা পেতে মেম্বার ও মহিলা মেম্বার এর স্বাক্ষর পেলেও চৌকিদারের স্বাক্ষর পেতে অনেক কষ্ট হয় গরিব অসহায় ও সাধারণ মানুষের।
তার এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ জনগণ। এসব বিষয়ে আলোচনা সমালোচনা বিরাজ করছে এলাকার বাজার কিংবা চায়ের দোকানে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এই চৌকিদার পাড়া প্রতিবেশি থেকে শুরু করে পুরা ২ নং ওয়ার্ডবাসীর সাথে পরিষদের প্রয়োজনীয় কাজে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকেন। সাধারণ মানুষ চৌকিদারী সেবার জন্য গেলে আগে টাকা পরে কথা এমন ভাব নিয়ে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি করেন বলে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি ভোটার হালনাগাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে একটা স্বাক্ষর তিনশো থেকে পাঁচশো টাকার উপরে বিক্রি করেছেন তিনি।
খুরুশকুল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাস্টার গিয়াস উদ্দিন জানান, আমার বাড়ি ২ নং ওয়ার্ডে চৌকিদারের বাড়ির পাশে,আলী হোসেন আমার এলাকার প্রতিবেশী ও চাচা হয় আমি আমার পরিবারের ওয়ারিশ সনদ নেওয়ার জন্য আবেদন ফরমে স্বাক্ষর নিতে গেলে আগে মেম্বারের স্বাক্ষর নিতে হবে বলে তাড়িয়ে দেন। পরে মেম্বার ও মহিলা মেম্বারের স্বাক্ষর নিয়ে চৌকিদাররে কাছে গেলে ফরমে ভুল আছে বলে দস্তখত দিতে গড়িমসি করেন।পরে অবশ্য দস্তখত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, আমি ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র তুলার জন্য আবেদন করতে চৌকিদারের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হওয়ায় তার কাছে গেলে স্বাক্ষর দিতে অপারগতা প্রকাশ করে আমাকে তাড়িয়ে দেন। পরে অনেক আকুতি মিনতি করার এক মাস পর ৫০০ টাকা দাবী করে।আমি ৩০০ টাকা দিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে চলে আসি।শুধু টাকার জন্য আমার একটা মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে।বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং আপত্তিকর।
এরকম অহরহ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা এসব তথ্য তুলে ধরেন গনমাধ্যমকে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ২ নং ওয়ার্ড চৌকিদার আলী হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে প্রতিবেদককে নিউজ করে কি করবি বলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে চলে যায়।
খুরুশকুল ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য এহসান উল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চৌকিদারের বিষয়টা অনেকেই বলাবলি করছে শুনলাম। আমাকেও অনেকে অভিযোগ দিয়েছে। আমি তাকে কারো কাছ থেকে টাকা না নিতে বারণ ও করেছি।তবু এমন অভিযোগ বারবার কানে আসছে,যা মোটেও কাম্য নয়।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে
এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অত্র এলাকার ভুক্তভোগী এবং সচেতন মহল।