খুলনার উপজেলা বিএনপির দলীয় নিজস্ব কার্যালয়টি আজও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কার্যালয়ের বাইরে এক পাশের দরজায় বড় একটি তালা ঝুলছে, অপর দরজাটি রয়েছে খোলা। কার্যালয়ের ভিতরে ভাঙা চোরা কিছু আসবাব পত্র আর শুধু ময়লা-আবর্জনায় ভরা। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন বিগত প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই অবহেলিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে উপজেলা বিএনপির প্রধান কার্যালয়টি।
অবশ্য দলীয় কার্যালয়ের এই দৈন্যদশা নিয়ে উপজেলা বিএনপির বিবদমান দু’গ্রুপের নেতৃবৃন্দরই প্রায় একই বক্তব্য, আর তাহলো- দলীয় কার্যালয়টি যে ভবনে স্থাপিত ওই ভবনটিই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেকারণে দলীয় কার্যালয়ে সভা-সমাবেশ করলে নেতাকর্মীদের চাপে যে কোন মূহুর্তে একটা অঘটন ঘটে যাবার আশংকায় কার্যালয়টি ব্যবহার করা হচ্ছে না।
জানা গেছে, উপজেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা আভ্যন্তরীন কোন্দলের জেরধরে দু’টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পৃথক কর্মসূচি পালন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। দু’গ্রুপের একাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা বিএনপি সভাপতি ডাঃ মোঃ আব্দুল মজিদ এবং অপরাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস,এম এনামুল হক ও সিনিয়রসহ-সভাপতি আসলাম পারভেজ। যদিও সংগঠন পরিপন্থি কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৮ আগস্ট উপজেলা বিএনপি সাধারণসম্পাদক এস,এমএনামুল হককে জেলা বিএনপি কর্তৃক বহিস্কার করাহয়েছে।
বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, উপজেলা বিএনপি সভাপতি ডাঃ মোঃআব্দুল মজিদ পৌর সদরস্থ তার বাস ভবন সংলগ্ন একটি কক্ষ নির্মাণ করে সেখানে সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে নেতাকর্মীদের নিয়ে সময় কাটান এবং সভা-সমাবেশ ও করে আসছেন। অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা বেশিরভাগ সময় পার করেন (কোর্ট রাস্তা মোড়) পুরাতন পরিবহন কাউন্টার চত্বর এলাকায়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপি সভাপতি ডাঃ মোঃআব্দুল মজিদ বলেন, উপজেলা বিএনপির দলীয় নিজস্ব কার্যালয়ের মূল ভবন (কপোতাক্ষ মার্কেট) বয়সের ভারে নড় বড়ে হয়ে গেছে। দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ভবনটি যেকোন মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরণের কোন দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে। সেকারণে আপাতত অস্থায়ী কার্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছি। পাশাপাশি সুবিধাজনক ভালো কোন স্থানে দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করা যায় কিনা সেটিও ভাবছি। দলীয় কার্যালয় সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির অপরাংশের নেতৃত্বে থাকা সিনিয়রসহ-সভাপতি আসলাম পারভেজ প্রথমে বলেন, দলীয় কার্যালয়ে বসার পরিবেশ নেই। পরে কথা ঘুরিয়ে বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দলীয় কার্যালয়ে সভা-সমাবেশ বন্ধ রেখেছি। দলীয় কার্যালয়ের নিচে (কপোতাক্ষ মার্কেট চত্বরে) সাংগঠনিক বেশিরভাগ কর্মসূচি পালন করা হয়। নাম গোপন রাখার শর্তে প্রবীন এক বিএনপি নেতা উদ্বেগের সাথে বলেন, নিজস্ব বলেকথা, ঝুঁকির কারণে দলীয় কার্যালয়ে সভা-সমাবেশ করানা গেলেও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নকরে তো রাখা যায়। সে ব্যাপারে দু’টি গ্রুপেরই কোন উদ্যোগ নেই কেন।