ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজাদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলার ২ নম্বর আসামি হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মিয়া।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শামছুল আজম বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
পুলিশ বলছে, থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় অন্তত ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগে দ্রুত বিচার আইনে করা আরেক মামলায় আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের গেজেটে ভাঙ্গা উপজেলা-সংযুক্ত ফরিদপুর-৪ আসনের দুটি ইউনিয়ন (আলগী ও হামিরদী) কেটে নগরকান্দা-সালথার সঙ্গে যুক্ত করে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। ইউএনওর আশ্বাসে আন্দোলন তিন দিনের জন্য স্থগিত হয়। পরে ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর এবং ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। গত রোববার রেললাইনও অবরোধ করা হয়। এতে ভাঙ্গার হামিরদী ও ভাঙ্গা জংশন এবং রাজবাড়ীতে তিনটি ট্রেন আটকা পড়ে, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
গত রোববার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আন্দোলন দমন করার ঘোষণা দেন। একই দিন আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলায় আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত সোমবার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে ভাঙ্গা থানা, উপজেলা কমপ্লেক্স, ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা ও সরকারি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আন্দোলনকারী বলেন, তাঁদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল, তাঁরা ভাঙচুর করতে চাননি। তবে আলগী, হামিরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীকে জড়িয়ে দ্রুত বিচার আইনে যে মামলা হয়েছে, তা এলাকাবাসী মেনে নিতে পারেননি। এর প্রতিবাদেই সহিংস ঘটনা ঘটে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, ভাঙ্গা উপজেলা কমপ্লেক্সে সহিংস ঘটনার বিষয়েও মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
আমার বার্তা/এমই