স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন অধিদফতর, দফতর ও সংস্থার কর্মচারীদের তামাক কোম্পানি আয়োজিত সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক যেকোনও ধরনের কার্যক্রমের সমর্থন ও অংশগ্রহণ, যেমন- উদ্বোধন, ফটোসেশন, বৃত্তি, পুরস্কার, যৌথ বিবৃতি প্রদান ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি’র অনুচ্ছেদ ৫.৩ বাস্তবায়নে নির্দেশিকায় একথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) কর্মচারীদের অনুসরণের নির্দেশিকা প্রকাশ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই নির্দেশিকা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং তার অধীন অধিদফতর, দফতর ও সংস্থার কর্মচারী এবং তাদের ওপর অর্পিত কার্যাবলির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, কেবল তামাক কোম্পানি ও তামাক কোম্পানির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ অথবা তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানের স্বার্থে অত্যাবশ্যকীয় হলে এই নির্দেশিকার ১(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে যাদের জন্য প্রযোজ্য, তারা কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তামাক কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। তামাক কোম্পানির সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ এমনভাবে করতে হবে— যেন এর ফলে কোনও সম্ভাব্য অংশীদারত্ব বা সহযোগিতা প্রদানের ধারণা উদ্ধৃত না হয়।
এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং তার অধীন অধিদফতর, দফতর, সংস্থার কর্মচারী এবং তাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত সবাইকে কয়েকটি কাজ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে গ্রহণ, সমর্থন বা অনুমোদন না করার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে আছে— তামাক কোম্পানি বা তামাক কোম্পানির স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনও ব্যক্তির সঙ্গে সম্ভাব্য বা বাস্তব অংশীদারত্ব এবং অগ্রহণযোগ্য বা প্রয়োগযোগ্য নয়, এরকম চুক্তি বা যেকোনও স্বেচ্ছামূলক ব্যবস্থা, তামাক কোম্পানির দ্বারা যুব, জনসাধারণের জন্য আয়োজিত, সমর্থিত সচেতনতামূলক প্রচারণায় অংশগ্রহণ করা বা যেকোনও উদ্যোগ যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তামাক কোম্পানি বা তাদের লোগো বা ব্র্যান্ড নাম বা ট্রেডমার্কের সঙ্গে সম্পর্কিত, তামাক কোম্পানি অথবা তামাক কোম্পানির সহযোগিতায়, অথবা তাদের ফ্রন্ট গ্রুপ হিসেবে কাজ করে এমন কোনও সংস্থার দ্বারা প্রস্তুতকৃত কোনও অবস্থানপত্র বা নীতি উপকরণ এবং তামাক কোম্পানি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা বা উৎসাহিত করে, এমন অন্য যেকোনও কার্যক্রম, উদ্যোগ বা পদক্ষেপ।
পাশাপাশি এই নির্দেশিকার অধীনে কোনও কর্মচারী তামাক কোম্পানির সঙ্গে কোনও অংশীদারত্ব চুক্তি বা সহযোগিতা থাকলে— তা এই নির্দেশিকা জারির তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বাতিল হবে। ভবিষ্যতে এই নির্দেশিকার পরিপন্থি কোনও চুক্তি সম্পাদন করা যাবে না। এই নির্দেশিকার অধীন কোনও কর্মচারী তামাক কোম্পানির কোনও লাভজনক বা অলাভজনক পদ গ্রহণ করতে পারবেন না।
এছাড়া এই নির্দেশিকার অধীন সবাই নিশ্চিত করবেন যে, তামাক কোম্পানিতে নিয়োজিত কোনও ব্যক্তি বা তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোও ব্যক্তি বা সত্তা তামাক নিয়ন্ত্রণ বা জনস্বাস্থ্য নীতি নির্ধারণ বা বাস্তবায়নকারী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন কোনও সরকারি সংস্থা, কমিটি বা উপদেষ্টা গোষ্ঠীর সদস্য হতে পারবেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কোনও প্রতিষ্ঠানই তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত জনস্বাস্থ্য নীতি নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নের জন্য কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণনীতির সঙ্গে স্বার্থের সংঘাত আছে— এমন প্রার্থী বা দরদাতাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করবে না।
এছাড়া এই নির্দেশিকার অধীন কোনও কর্মচারী এবং তার অধীন থাকা সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও দফতরে এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট কেউ তামাক কোম্পানির কাছ থেকে কোনও রকম অর্থ, উপহার, পরিষেবা, আর্থিক বা অন্য কোনও প্রকার সুবিধা ও সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারবেন না।
এতে আরও বলা হয়, এই নির্দেশিকার কোনোরকম ব্যত্যয় বা লঙ্ঘন দেখা গেলে কর্তৃপক্ষ তা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮, অথবা এসব ক্ষেত্রে যে চাকুরি ও আচরণ বিধিমালা প্রযোজ্য, তার অধীন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। এই নির্দেশিকার কোনও ব্যত্যয় বা লঙ্ঘন দেখা গেলে তা যেকোনও ব্যক্তি কর্তৃক লিখিতভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালককে অবহিত করতে পারবে। অভিযোগ প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে মহাপরিচালক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আমার বার্তা/এমই